
সখিপুরের দক্ষিণ তারাবুনিয়া ইউনিয়নের ২টি গ্রামের ৩১৪ জন পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহকের মধ্য থেকে ২৪৮ জনের মিটারের টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করে আত্মগোপন করেছে এক দালাল। রোববার দুপুরে বিদ্যুৎ সুবিধা বঞ্চিত শিশু-নারী-পুরুষ সহ সকল শ্রেণীপেশার মানুষ বিদ্যুতের মিটারের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল করে ওই দালালের বাড়ি ঘেরাও করে। টের পেয়ে দালাল বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। এরপর থেকে ওই দালাল তার মুঠোফোনও বন্ধ রেখেছে। সরেজমিনে গিয়ে ও প্রতারিত গ্রাহকরে অভিযোগ থেকে জানা যায়, শরীয়তপুুরের সখিপুর থানার দক্ষিণ তারাবুনিয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের দুুমিয়া মোল্যা কান্দি ও মোহব্বতআলী মোল্যা কান্দি গ্রামের পল্লী বিদ্যুৎ প্রত্যাশী গ্রাহকদের মিটার পাইয়ে দেয়ার কথা বলে হামিদ চোকিদার নামে এক ব্যক্তি ২ লাখ ৫৬ হাজার টাকা নিয়েছে। এলাকাবাসী কৌশলে ওই ব্যক্তিকে ধরে এনে সালিশীতে হাজির করলে মিটার এনে দেয়ার কথা স্বীকার করে। গ্রাহকগণ মিটারের জন্য টাকা দিয়ে ৭ মাস অপেক্ষা করেও এখন পর্যন্ত মিটার পায়নি। তাই গত (২৪ জুন) রোববার দুপুরে নারী সহ আবাল বৃদ্ধ বনিতা একজোট হয়ে হামিদ চোকিদারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করে তার বসত বাড়ি ঘেরাও করে। টের পেয়ে হামিদ চোকিদার কৌশলে পালিয়ে যায়। সেই থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে। বিক্ষোভ মিছিল ও দালালের বাড়ি ঘেরাও কালে এলাকাবাসী জানায়, ১ বছর পূর্বে এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটি স্থাপন ও তার টানা হয়। সে সময় কথিত আওয়ামীলীগ নেতা ও স্বঘোষিত মাষ্টার পরিচয় দিয়ে এলাকাবাসীর কাছে যায় হামিদ চোকিদার। গ্রামের মুরব্বিদের কাছে প্রতিশ্রুতি দেয় ১২শত টাকার বিনিময়ে প্রত্যেক গ্রাহককে বিদ্যুতের মিটার এনে দিবে। মুরব্বিরা তার কথায় বিশ্বাস করে এবং ৩১৪ জন গ্রাহকের মধ্য থেকে ২৪৮ গ্রাহক হামিদ চোকদারের কাছে ১২শত করে টাকা জমা দেয়। এখন সে মিটার বা টাকা কোনটাই দেয় না। দালালের বাড়ি ঘেরাও করে যুবলীগ নেতা নাজমুল চৌধুরী, গ্রাহক খলিল চৌধুরী, করিম সরকার, বিল্লাল শেখ, নিরু চৌধুরী, সিরাজ মোল্যা সহ বিক্ষোভকারিরা জানায়, হামিদ চোকিদারের জন্য তারা বিদ্যুত পাচ্ছে না। হামিদ চৌকিদার হয়তো বিদ্যুতের মিটার দিবে নয়তো গ্রাহকের টাকা ফেরত দিবে। অন্যথায় হামিদ চোকিদারকে এলাকা থেকে বিতাড়িত করা হবে। হামিদ চোকিদার এলাকার কীট। এরপূর্বেও মসজিদে সৌর বিদ্যুৎ ও এলাকার উন্নয়নের জন্য টিআর ও কাবিখার বরাদ্দ এনে আত্মসাৎ করেছে হামিদ। গ্রাহক খাজা মোহাম্মদ চৌধুরী জানায়, সে ২টি মিটারের জন্য ২৪শ টাকা হামিদ চোকিদারের নিকট জমা দেয়। ৭ মাস অতিবাহিত হলেও মিটার পাচ্ছে না তিনি। পরবর্তীতে বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে খোঁজ নিয়ে দেখে মিটার বাবদ টাকা জমা হয়নি। এমনিভাবে আলাউদ্দিন মাল ১টি, সাইফুল্লাহ মাস্টার ৫টি মিটারের টাকা হামিদ চৌকিদারের নিকট জমা করেছে। এদের কেউই মিটার পায়নি। এলাকার মুরব্বি ফরিদ আহমেদ বলেন, এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটি আসার পর ৩১৪ জন গ্রাহকের প্রত্যেকের মিটার বাবদ ১২শত টাকা করে ধার্য্য করি। এ টাকা আমার নির্দেশেই হামিদ চোকিদারের কাছে জমা রাখা হয়। এখন ২৪৮ জন গ্রাহকের মিটারের টাকা নিয়ে হামিদ চোকিদার তালবাহানা করছে। কয়েকবার তাকে সালিশীতে উপস্থিত করা হয়। মিটার দেয়ার কথা বলে ছাড়া পায়। কিন্তু মিটার এনে দেয় না। এবার এলাকার লোক জাগ্রত হয়েছে। শুনেছি সে নাকি আত্মগোপন করেছে। সে নিজের নামের সাথে স্বঘোষিত মাষ্টার ও আওয়ামীলীগ নেতা লাগায়। এ পরিচয়ে মসজিদ ও এলাকার উন্নয়নের জন্য সরকারি বরাদ্দ এনে আত্মসাৎ করেছে। শুনেছি ইতিপূর্বে এ নিয়ে ঝামেলাও হয়েছে। সে কোন মাষ্টার না। সে কোনদিন প্রাইভেটও পড়ায় নি বা দর্জির দোকানে কাপড়ও কাটেনি। তাহলে সে কিশের মাষ্টার? হামিদ চোকিদার একটা ভন্ড ও প্রতারক। সখিপুরে মিটারের টাকা ফেরত পেতে দালালের বাড়ি ঘেরাও করেছে গ্রাহক।