Tuesday 1st July 2025
Tuesday 1st July 2025

ভেদরগঞ্জ কৃষি জমি নষ্ট করে প্রভাবশালীদের মাছের ঘের

ভেদরগঞ্জ কৃষি জমি নষ্ট করে প্রভাবশালীদের মাছের ঘের
ভেদরগঞ্জ কৃষি জমি নষ্ট করে প্রভাবশালীদের মাছের ঘের

শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানা এলাকায় আরশীনগর ইউনিয়নে বিলের ফসলি জমি কাটার হিড়িক পড়েছে। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়েই একটি অসাধু চক্র প্রকাশ্যে অবৈধভাবে এস্কেভেটর (ভেকু) দিয়ে খামার খনন করা হচ্ছে।

উপজেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার সহ বেশ কয়েকজন কৃষক।

রবিবার ১৭ জুন দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার আরশীনগর ইউনিয়নের (৭/৮) নং ওয়ার্ডের দুর্গাকান্দি গ্রামের মধ্যবর্তী মাঠ থেকে এস্কেভেটর মেশিন দিয়ে কৃষি জমি নষ্ট করে মাছের ঘের করছেন। আবাদি জমি খনন করে কৃত্রিম জলাশয় তৈরি করে মাছের খামার গড়ে তোলেন একটি প্রভাবশালী মহল। মাছের খামারের জন্য খনন করা জমিগুলো ফসলি কৃষি জমি। শত শত বছরের কৃষি জমিতে এলাকার কৃষকরা আমন, আউস ও ইরি-বোরো ধান ও সরিষাসহ সারা বছর ধরেই বিভিন্ন ফসল আবাদ করে আসছেন। সরকারি আইনকে তোয়াক্কা না করে প্রভাব খাটিয়ে ফসলি কৃষি জমি খনন করার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

স্থানীয় কৃষক মো.শামসুল মাদবর, দাদন মিয়া খালাসী সহ বেশ কয়েকজন কৃষক বলেন, কৃষি জমি নষ্ট করে ২ মাস ধরে মাছের ঘের করছেন প্রভাবশালী মহল। কিছুদিন আগেও এখানে বিভিন্ন ধরনের ফসল হতো এখন খামার করার কারণে আমাদের আর কৃষি কাজ করা হবে না। এখানে খামার হলে আমাদের জমিতে সবসময় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে থাকবে। আমাদের ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে যাবে। আমরা চাই কৃষি জমিতে যেনো মাছের ঘের না হয়।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো: রেজাউল হক বকাউল দৈনিক রুদ্রবার্তাকে জানান, স্থানীয় কৃষক ও এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে আমি ভেদরগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন ও সখিপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। উপজেলা থেকে লোকজন এসে অভিযান করেছে তবে কাজের কাজ কিছুই হয় নি তারা এখনো রাতের আধারে জোর করে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। আমি মনে করি মাছ চাষের নামে পুরো এলাকার কৃষি জমি নষ্ট করা হচ্ছে। কৃষি জমি কমে গেছে বা ওই জমি আর কোনোদিন কৃষি আবাদে ফিরে আসবে না। এভাবে কৃষি জমি খনন করে কৃত্রিম জলাশয় সৃষ্টি করে মাছচাষ করে অধিক লাভবান হওয়ায় ওই চক্রটি মৎস্য খামার প্রকল্প সম্প্রসারণ শুরু করেছে। এ নিয়ে স্থানীয় অধিকাংশ কৃষকদের ধানসহ অন্যান্য ফসল চাষের জমি হারিয়ে বিপাকে পড়েছে এতে ওই সব কৃষক পরিবার এমনকি এলাকার প্রান্তির চাষিরা ধানসহ অন্যান্য ফসল আবাদ করতে না পারলে বছরের খাবার সংগ্রহ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।

কৃষি জমিতে ভেকু দিয়ে মাটি কাটার বিষয় জিগ্যেস করলে খামার মালিক শরীফ মাদবর বলেন অনুমতি নিয়ে কাজ করি। অবৈধ ভাবে মাছের ঘের কাটা হয় না। আমি জমি লিজ নিয়েই কাজ করছি এবিষয়ে প্রশাসন সবই জানে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল-মামুন দৈনিক রুদ্রবার্তাকে বলেন, কৃষি জমি নষ্ট করে মাছের ঘের করার অনুমতি নেই। ওখানে এখন পর্যন্ত চারবার অভিযান পরিচালনা হয়েছে। আমরা অভিযোগ পেলে অভিযান পরিচালনা করি। কখনও পুলিশ পাঠিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়। অভিযোগ পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।