
জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে আনোয়ারা বেগম (৫০) নামে এক নারীকে ঘরের খুঁটির সাথে শিকল দিয়ে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় শারীরিক নির্যাতন চালানোর অভিযোগ উঠেছে। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন মহলে নিন্দার ঝড় উঠে। অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্বজন ও এলাকাবাসী।
নির্যাতিত আনোয়ারা বেগম শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানার গাজীপুর হাজী ছাদিম আলী সরদার কান্দি গ্রামের মোনছের সরদারের স্ত্রী।
ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, মোনছের সরদারের সাথে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবেশী খোকন সরদারের জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। গত শনিবার সকালে মোনছের সরদারের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম জমিতে পাট কাটছিলেন। এসময় প্রতিবেশী খোকন সরদার ওই জমি তার বলে দাবী করেন। এ নিয়ে দুইজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে খোকন সরদার, দাদন সরদার, সেলিম সরদার, মোশারফ সরদার, বাশেদ সরদার, আজাহারুল সরদার, নাজিমুদ্দিন সরদার, নিজাম সরদারসহ বেশ কয়েকজন আনোয়ারাকে ঘরের খুঁটির সাথে শিকল দিয়ে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় শারীরিক নির্যাতন চালায়। পরে নির্যাতন সহ্য না করতে পেরে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন আনোয়ারা। পরে স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে সখিপুর থানা পুলিশ ও স্থানীয় ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম দুলাল ঘটনাস্থলে পৌঁছে শিকল দিয়ে বাঁধা মুমূর্ষ অবস্থায় আনোয়ারা বেগমকে উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এ ঘটনায় ওইদিন বিকেলে আনোয়ারা বেগমের মেয়ে তানিয়া আক্তার বাদী হয়ে খোকন সরদারসহ ৯ জনকে আসামি করে সখিপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। এদিকে এ ঘটনার নির্যাতন চালানোর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ভিডিওতে নেটিজেনরা আইন শৃঙ্খলার অবনতিসহ বিভিন্ন ধরণের মন্তব্য করছেন।
মরিয়ম আক্তার নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, আনোয়ারাকে উপর করে ফেলে ইচ্ছেমত পেটানো হইছে। কেউ লাত্থি দেয়, কেউ ঘুষি দেয়, কেউ আবার ছ্যাছড়াইয়া টাইনা নিয়া যায়। একটা মানুষকে এভাবে মারা হয়েছে যা ভাষায় প্রকাশ করার মত না। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবী জানাই।
আনোয়ারা বেগমের মেয়ে তানিয়া আক্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার মাকে খোকন সরদার ও তার ভাইয়েরা শিকল দিয়ে বেঁধে শারীরিক নির্যাতন করেছে। পানিতে চুবিয়েছে। যারা নির্যাতন করছে তারা মানুষ হলে এই কাজ করতে পারত না। আমি এ ঘটনায় অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ বিচারের দাবী জানাই।
চরকুমারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নং ওয়ার্ড সদস্য সাইফুল ইসলাম দুলাল বলেন, আমি মোবাইলে ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি আনোয়ারাকে একটি ভবনের খুটির সাথে শিকল দিয়ে তালা মেরে বেঁধে রাখা হয়েছে। আমি ছাড়ানোর চেষ্টা করলে আমাকেও বাঁধা দেয়া হয়। পরে পুলিশ আসলে আমরা সবাই মিলে ওনাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছি।
সখিপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান হাওলাদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মেয়ে তানিয়া আক্তার বাদী হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। দুইজন আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও অন্য আসামিদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে।
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ৪ | |||
৫ | ৬ | ৭ | ৮ | ৯ | ১০ | ১১ |
১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮ |
১৯ | ২০ | ২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ | ২৫ |
২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ | ৩০ | ৩১ |