স্থানীয় ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, বেলা ১২টার দিকে জাহাঙ্গীর মোল্লার স্ত্রী আমিরন বেগম তার নিজের ঘরে রান্না করছিলেন। এ সময় হঠাৎ করে ঘরে আগুন লেগে যায়। তীব্র তাপ প্রবাহের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে থাকে চারদিকে। আগুন লাগার এমন খবর ভেদরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসকে জানালেও দূরত্ব হওয়ার কারণে সখিপুর বাজার কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে মাইকিং করে এলাকাবাসীর সাহায্য চাওয়া হয়। এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা করতে থাকাকালীন সময় ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। কিন্তু ততক্ষণে জহিরুল ইসলাম ওরফে জোক্কা মোল্লার ১টি, উজ্জল মোল্লার ১টি ও জাহাঙ্গীর মোল্লার ২টি বসত ঘর আগুনে পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে অটোরিকশা চালক জাহাঙ্গীর মোল্লা খুবই গরিব। নতুন করে ঘর তোলার মতো সাধ্য নেই তার। তীব্র এই গরমের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই এখন আর।
আব্দুর রহমান রাসেল নামে স্থানীয় একজন মাইকিং করার পর এলাকাবাসী গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করার সময় ফায়ার সার্ভিস এসেছে। রান্না ঘর থেকে লাগা আগুনে মোল্লা বাড়ির ৪টি বসত ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তীব্র এই গরমের মধ্যে পরিবারগুলোর এখন খোলা আকাশের নিচে থাকতে হবে। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে উজ্জল মোল্লা সখিপুর বাজারে কাঁচামালের ব্যবসা করলেও জাহাঙ্গীর মোল্লা অটোরিকশা চালিয়ে উপার্জন করতেন। সরকার থেকে যদি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সাহায্য করা হয়, তাহলে তারা ভালোভাবে থাকতে পারবেন।
আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত জাহাঙ্গীর মোল্লা গণমাধ্যমকে বলেন, অটোরিকশা চালিয়ে উপার্জন করি। আমি ও আমার ছেলে নাসির মোল্লা। এ ছাড়া অন্য কোনোভাবে উপার্জন করার সাধ্য নেই আমাদের। আমার ও ছেলের ঘর দুইটি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। সরকার যদি আমাদেরকে ঘর তুলতে সাহায্য করত, তাহলে পরিবার-পরিজন নিয়ে থাকতে পারতাম। অন্যথায় তীব্র এই গরমের মধ্যেও খোলা আকাশের নিচেই থাকতে হবে আমাদের।
ভেদরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের ফায়ার ফাইটার আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট ঘটনাস্থলে রওনা করে। ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছিয়ে পৌনে ২ ঘণ্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। আগুনে সর্বমোট প্রায় ৩০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে সখিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান মানিক সরকার বলেন, আগুনে মোল্লাবাড়ির বসতঘরগুলো পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। খাবারের জন্য ন্যূনতম চাল ডালও নেই পরিবারগুলোর। তীব্র এই গরমের মধ্যে সকলেরই সতর্ক থাকা দরকার। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারবর্গকে আমার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে নগদ ২৫ হাজার টাকা ও ৫ বস্তা চালসহ আনুষঙ্গিক কাঁচাবাজার দিয়ে এসেছি। এছাড়াও পরিষদের মাধ্যমে উপজেলা প্রশাসন থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।