
শরীয়তপুরের পালং মধ্যবাজার বণিক সমিতির কার্যকরী পরিষদের মতবিনিময় ও সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (২ মে) রাত ৮ টায় পালং মধ্যবাজার শিশু কানন কিন্ডার গার্টেন প্রাঙ্গনে এই মতবিনিময় ও সাধারন সভা অনুষ্ঠিত হয়।
গত ২৬ এপ্রিল রাত ২ টার দিকে পালং মধ্যবাজারের আবুল বেডিং স্টোরে দুষ্কৃতকারীদের আগুন লাগানো ঘটনা প্রসঙ্গে ও আসন্ন পবিত্র মাহে রমজান মোবারকের পবিত্রতা রক্ষা, বাজার পাহারা জোরদার, নিয়মিত পাহারা প্রদান ও দোকানের সামনে রাত্রীকালীন সময়ে রাইটিংয়ের ব্যবস্থা করা সহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার জন্য পালং মধ্যবাজার বণিক সমিতির কার্যকরী পরিষদ পালং মধ্যবাজারের সকল ব্যবসায়ীদেরকে নিয়ে এই মতবিনিময় ও সাধারণ সভার আয়োজন করে।
পালং মধ্যবাজার বণিক সমিতির সভাপতি বিএম মকবুল হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম উদ্দিন। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন পালং মধ্যবাজার বণিক সতিরি সিনিয়র সহ-সভাপতি ও শরীয়তপুর দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আলহাজ¦ মো. নুরুল হক মিয়া। সভা পরিচালনা করেন পালং মধ্যবাজার বণিক সমিতির সিনিয়র সদস্য ডা. জিএমএ বাশার। সভায় শুভেচ্ছাপ বক্তব্য রাখেন জাতীয় স্বর্ণপদক প্রাপ্ত বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ইঞ্জিনিয়ার এম এ মজিদ। সভায় আরও বক্তব্য রাখেন পালং মধ্যবাজার বণিক সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক আ: লতিফ খান, প্রচার সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলাম আকাশ ও কোষাধ্যক্ষ মো. মুকুল হোসেন মুন্সী। এ সময় পালং মডেল থানার অন্যান্য অফিসার ও পালং মধ্যবাজারের সকল ব্যবসায়ীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে পালং মধ্যবাজার বণিক সমিতির সভাপতি বিএম মকবুল হোসেন বলেন, গত ২৬ এপ্রিল রাত ২টার দিকে দুষ্কৃতকারীরা পালং মধ্যবাজারের আবুল বেডিং স্টোরে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। আল্লাহর রহমতে সেদিন বড় ধরণের দূর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পায় পালং মধ্যবাজারের ব্যবসায়ীরা। এ ঘটনায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সেদিন বাজারের প্রতিটি দোকানে বাতি জ¦ালানো থাকলে সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে আমরা দুষ্কৃতকারীকে সনাক্ত করতে পারতাম। তাই আমাদের ব্যবসায়ী ভাইদের সতর্ক থাকতে হবে এবং প্রতিটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লাইটিং ও সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা করতে হবে যাতে দুষ্কৃতকারীরা অঘটন ঘটিয়ে পার পেয়ে না যেতে পারে।
সভায় পালং মধ্যবাজার পুরোটা লাইটিং ও সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার এবং দুইজন পাহারাদার নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এছাড়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য পালং মধ্যবাজারে রাতের বেলা পুলিশি টহল জোরদার ও পাহারাদারদের প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করতে পালং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অনুরোধ করেন বিএম মকবুল হোসেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম উদ্দিন বলেন, এ দেশের ব্যবসায়ীরা ভালো ও নিরাপদ থাকলে দেশ ভালো থাকবে, দেশ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাবে। কারণ ব্যবসায়ীরাই দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে। তাদের অর্থনীতির ওপর ভিত্তি করে এ দেশের বাজেট হয়, এ দেশের সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বোনাস হয়। তাই ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা দেওয়া সরদারের দায়িত্ব, পুলিশের দায়িত্ব। নিরাপদ উন্নত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী। তেমনি পালং মধ্যবাজার ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য যা কিছু করা দরকার পালং মডেল থানা পুলিশের পক্ষ থেকে তাই করা হবে।
তিনি আরও বলেন, গত ২৬ এপ্রিল রাতে দুষ্কৃতকারীরা পালং মধ্যবাজারে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিলো। তাদের উদ্দেশ্য সফল হলে ব্যবসায়ীদের বড় ধরণের ক্ষতির মুখে পড়তে হতো। আল্লাহর রহমতে দুস্কৃতকারীদের উদ্দেশ্য ফসল হয়নি। দোকানে লাইটিংয়ের ব্যবস্থা থাকলে সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে আজকে আমরা ওই দুষ্কৃতকারীকে সহজে সনাক্ত করতে পারতাম। তাকে সনাক্ত করতে পারলে বিগত দিনে যে সকল অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে তারও রহস্য উদযাটন করা সহজ হতো। তবে যে কোন ভাবেই হোক আমরা দুষ্কৃতকারীকে পাকরাও করবোই।
ওই কর্মকর্তা ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে আরও বলেন, যেহেতু ব্যবসা করে আপনারা আপনাদের রুটি রুজি জোগার করেন, তাই আপনাদের প্রতিষ্ঠান রক্ষা করার জন্য আপনাদেরই আগে সচেতন হতে হবে। আপনাদের নিরাপত্তা আপনাদেরকেই জোরদার করতে হবে। বাজারের প্রতিটি দোকানে নিজেদের উদ্যোগে লাইটিং ও সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা করতে হবে এবং বাজারের নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য কমপক্ষে দুইজন পাহাদার নিয়োগ দিতে হবে।
এ সময় পালং থানার পক্ষ থেকে পাহারদারদের প্রশিক্ষণ ও পোশাকের ব্যবস্থা করার ঘোষণাও দেন ওসি মো. আসলাম উদ্দিন।