
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানায় জেলের স্ত্রীকে (২০) ধর্ষণের অভিযোগে এক মোটরসাইকেল চালককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধর্ষণের শিকার নারীর অভিযোগ, ২৬ সেপ্টেম্বর তাকে ধর্ষণ করেন আব্দুর রহমান সোহাগ শেখ নামের ওই মোটরসাইকেল চালক। মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বেলা ১ টার দিকে ওই থানার চর সেনসাস ইউনিয়নের পূর্ব বালাকান্দি এলাকা থেকে সোহাগকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত আব্দুর রহমান সোহাগ শেখ (৩০) সখিপুর থানার পূর্ব বালাকান্দি (ভাড়াটিয়া) গ্রামের মৃত আবুল শেখের ছেলে।
মামলার এজাহার ও ধর্ষণের শিকার নারীর সূত্রে জানা যায়, পদ্মা নদীতে মাছ ধরে ওই নারীর স্বামী। গত ২৬ সেপ্টেম্বর সকালে নদীতে মাছ ধরতে যান গৃহবধূর স্বামী। বেলা ১ টার দিকে গৃহবধূ তার ৯ মাসের মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়ি সখিপুরের চরহোগলা গাজিকান্দি বেড়াতে যান। পরে ওই দিন রাত ৮ টার দিকে স্বামীর বাড়িতে ফেরার সময় শরিফিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে থেকে সোহাগ জোর করে গৃহবধূকে মোটরসাইকেলে উঠায়। বিভিন্ন জায়গায় ঘুড়িয়ে রাত ১১ টার দিকে চরসেনসাসের পূর্ববালাকান্দি এলাকার মাস্টার হাসেম ফকিরের মেহগনি বাগানে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে গৃহবধূরকে ধর্ষণ করেন সোহাগ। চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন ওই বাগানে ছুটে আসেন। তাঁদের কাছে বিষয়টি খুলে বললে ঘটনাটি মোবাইলে ওই গৃহবধূর স্বামীকে জানান স্থানীয়রা। খবর পেয়ে তিনি তার স্ত্রীকে নিয়ে স্থানীয় চিকিৎসকের মাধ্যমে চিকিৎসা করান। সুস্থ হয়ে ২৮ সেপ্টেম্বর সখিপুর থানায় সোহাগকে আসামি করে মামলা করেন ওই গৃহবধূ।
ধর্ষণের শিকার ওই নারীর স্বামী বলেন, আমার স্ত্রী সহজ সরল মানুষ। আমার স্ত্রীকে সোহাগ জোর করে মোটরসাইকেলে উঠিয়ে মাস্টার হাসেম ফকিরের মেহগনি বাগানে নিয়ে যায় এবং ধর্ষণ করে। এ সময় বালাকান্দি গ্রামের আলমগীর দেওয়ান (৫৫), ফয়সাল দেওয়ান (৩৫) ও অজ্ঞাত এক ব্যক্তি সোহাগকে ধর্ষণ করতে সহায়তা করেন। ঘটনার সময় আমার ৯ মাসের মেয়ে ছিল। মেয়েকে আলমগীর দেওয়ান ধরে রাখে। আর ফয়সাল দেওয়ান ও অজ্ঞাত ব্যক্তি আমার স্ত্রীর মুখ, হাত-পা চেপে ধরে। তিনি বলেন, এ ঘটনায় আমি মামলার বাদী হতে চেয়েছি। কিন্তু সখিপুর থানা পুলিশ আমাকে বাদি না করে আমার স্ত্রীকে বাদি করেছে। আর আলমগীর দেওয়ান, ফয়সাল দেওয়ান ও অজ্ঞাত এক ব্যাক্তিকে মামলা থেকে বাদ দিয়ে দিয়েছে।
আলমগীর দেওয়ান (৫৫) বলেন, ঘটনার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তবুও ষড়যন্ত্র করে আমার দোষ দিচ্ছে ধর্ষণ হওয়া ওই নারীর স্বামী।
চরসেনসাস ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. জিতু মিয়া ব্যাপারী, সখিপুর থানা যুবলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য মো. ফারুক, থানা শ্রমিকলীগের যুগ্ম আহবায়ক শাহাদাত সরদারসহ অনেকেই বলেন, আমরা শুনেছি সোহাগ, আলমগীর, ও ফয়সালসহ চার জন ব্যক্তি ওই ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত। জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি।
সখিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান হাওলাদার জানান, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিরাজ মঙ্গলবার সোহাগকে গ্রেফতার করে। বুধবার দুপুরে তাকে শরীয়তপুর আদালতে পাঠানো হয়। আজ ওই নারীকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে মেডিকেল পরীক্ষা করানো হয়েছে। তিনি বলেন, ওই নারী বাদি হয়ে সোহাগকে আসামী করে থানায় মামলা করেছে। ওই নারীর স্বামী পূর্বশত্রুতা মেটানের জন্য স্থানীয় কয়েকজনের নাম মামলায় ঢুকাতে চাচ্ছে।