
শরীয়তপুরের ডামুড্যায় উপজেলায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে সুরাইয়া বেগম (৩৫) নামে এক গৃহবধু নারীর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (১৯ আগষ্ট) দিবাগত রাত ৩টা দিকে ডামুড্যার নিজ বাড়িতে তিনি মারা।
সুরাইয়া বেগম ডামুড্যা পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ ডামুড্যা এলাকার কামাল ঢালীর স্ত্রী। জায়েদ (৭), নুর (৫) ও আদিবা (৪) নামে তাদের তিনটি সন্তান রয়েছে।
সুরাইয়া ডেঙ্গু জ¦রে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার বিষয়টি চিশ্চিত তার চিকিৎসক ডামুড্যা উপজেলার সাবেক উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন।
সুরাইয়া বেগমের স্বামী কামাল হোসেন ঢালী জানান, গত ১৬ আগস্ট সুরাইয়া জ্বরে আক্রান্ত হন। শনিবার পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানা যায় সুরাইয়া ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। এরপর থেকে ডা. সৈয়দ আনোয়ার হোসেনের তত্ত্বাবধানে ডামুড্যায় একটি বেসরকারি ক্লিনিক ও নিজ বাড়িতে তার চিকিৎসা অব্যাহত রাখা হয়। সোমবার রাত ১১টার দিকে ক্লিনিক থেকে স্যালাইন দেওয়ার পর সুরাইয়াকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।
রাত ১টার দিকে সুরাইয়া কয়েকবার বমি করেন। এরপর তার শরীর হঠাৎ নিস্তেজ হয়ে যায়। রাত সাড়ে ৩টার দিকে ডা. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন এসে সুরাইয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। মঙ্গলবার দুপুরে জানাজা নামাজ শেষে সুরাইয়াকে ডামুড্যায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
তিনি আরও জানান, ডামুড্যা ছাড়াও পুরান ঢাকার হাটখোলা রোডে তাদের বাড়ি রয়েছে। তারা ঢাকা ও ডামুড্যা উভয় বাড়িতেই বসবাস করতেন। গত ঈদের আগে ঢাকায় থাকাবস্থায় সুরাইয়ার জ¦র হলে সেখানে পরীক্ষা নিরিক্ষার পর ডেঙ্গু জ¦র ধরা পড়ে। সেখানে চিকিৎসা করানোর পর সে কিছুটা সুস্থ্য হয়ে ওঠে। পরে আমরা সবাই ঈদ করার জন্য দেশের বাড়িতে চলে আসি। দেশে আসলে আবারও সুরাইয়া ডেঙ্গু জ¦রে আক্রান্ত হন।
সুরাইয়ার চিকিৎসক ডা. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, সুরাইয়ার শারীরিক অবস্থা ভালো ছিল। গতকালও তার প্লাটিলেট ছিল ১ লাখ ২০ হাজার। কিন্তু ডায়রিয়া ও বমির কারণে তার শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। আমি রাত সাড়ে ৩টায় তার বাড়িতে গিয়ে দেখি তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন।
শরীয়তপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো খলিলুর রহমান বলেন, আমরা জানতে পেরেছি ডামুড্যা উপজেলায় সুরাইয়া বেগম নামে এক গৃহবধূ ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। কিন্তু এ বিষয়ে এখনও আমরা কোন কাগজপত্র পাইনি। জানার জন্য আমাদের লোক নিহতের বাড়িতে গিয়েছে। বাড়িতে এখন শোক চলছে। তাই এখনও কাগজপত্র হাতে পাইনি। আর কাগজপত্র না পেলেতো নিশ্চিত করে বলতে পারছিনা সে ডেঙ্গু জ¦রে মারা গেছে।
তিনি আরও বলেন, শরীয়তপুর জেলায় এ পর্যন্ত ৩২৬ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। তারাই সবাই সদর হাসপাতাল সহ বিভিন্ন উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। বর্তমানে ৫৬ জন ডেঙ্গু রোগী জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বাকিসব চিকিৎসা শেষে সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।