
শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলায় অবৈধভাবে সরকারি ডামুড্যা মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মাসুদ আহম্মেদ।
এ কারনে সরকারি ডামুড্যা মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের ঐ প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবীতে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। বুধবার ২৫ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টার দিকে বিদ্যালয়ের সামনের সড়ক অবরোধ করে প্রধান শিক্ষক মাসুদ আহাম্মেদের বিরুদ্ধে এ বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা।
এ সময় “বিদ্যালয়ে সুষ্ঠ শিক্ষার পরিবেশ চাই, মাসুদ স্যারের প্রত্যাহার চাই ও বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটাই উদ্যোগ মাসুদ স্যারের পদত্যাগ” লেখা পোষ্টার হাতে শিক্ষার্থীরা সড়কে দাড়িয়ে ও বসে এ শ্লোগানগুলো দিতে থাকেন এবং সড়ক অবরোধ করে রাখে।
ফয়জুল রহমান প্রান্ত, অনামিকা ছোয়া ও সিমান্ত হাসান প্রিয়, কামিনী, তিশাসহ আন্দোলনরত শিক্ষার্থী বলেন, সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক মাসুদ আহাম্মেদ স্যার ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব প্রাপ্ত রয়েছে। তার বয়স ও স্কুলের চাকরির মেয়াদ আরও তিন বছর আগে শেষ হয়েছে। তিনি অবৈধ ক্ষমতা বলে এই পদটি ধরে রেখেছে। অন্যদিকে আমাদের আন্দোলন করাতে বিভিন্ন দিক থেকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক যদি পদত্যাগ না করে, তা হলে আমরা আন্দোলন তিব্র থেকে তিব্রতর করব। তাই অনতি বিলম্বে মাসুদ স্যারের পদত্যাগ চাই।
উল্লেখ্য, সরকারী ডামুড্যা মুসলিম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাসুদ আহাম্মেদ ১৯৮৯ সালের ১লা ডিসেম্বর যোগদান করে গত ১১ এপ্রিল ২০১৭ সালে চাকরির মেয়াদ শেষ করেন। কিন্তু তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি তাকে অবৈধভাবে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেন। এখনও তিনি এই পদে অধিনস্ত রয়েছেন। তাই প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবীতে দুই ঘন্টাব্যাপি বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে শিক্ষক মাসুদ আহমেদকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ম্যানেজিং কমিটির পুনঃ নিয়োগের বলে আমি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছি। আমি সরকারি কোনো বেতন নিই না। আমি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক থাকাকালীন যদি কোন সমস্যা হয়, তাহলে পদ থেকে সরে যাব। আমি যা বেতন নিই, তা ম্যানেজিং কমিটিই আমাকে নির্ধারণ করে দিয়েছে। তিনি কিছু পেপারস দিয়ে তার বৈধতা যাচাই করার জন্য বলেন।
ডামুড্যা উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল মুকিম কিছু পেপারস্ দিয়ে বলেন, কোন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরির মেয়াদের বয়স সীমা পূর্ণ ৬০ বছর। কোন প্রতিষ্ঠানে ৬০ বছরের পরে অবসরপ্রাপ্ত কোন শিক্ষককে পুনঃনিয়োগ অথবা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া যাবে না। কেউ যদি নিয়োগ দেয়, তা অবৈধ। শিক্ষক মাসুদ আহম্মেদকে এ বিষয়ে কোন নোটিশ করা হয়েছে কিনা জিজ্ঞাসা করা হলে, নোটিশের কাগজ দিয়ে বলেন, গত ১৯ নভেম্বর ২০১৮ইং এ ৩৭.০২.০০০০.১০৬.৪৯.০৬৩.১৬-২৯৯০ স্মারকে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর শিক্ষক মাসুদ আহম্মেদের মেয়াদ উর্ত্তীর্ণ হওয়ায় জ্যেষ্ঠ শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব প্রদানের জন্য নোটিশ দেয়া হয়। উল্লেখ্য যে, শিক্ষক মাসুদ আহম্মেদ ঐ নোটিশ-এর কোন তোয়াক্কা না করে উক্ত পদে অবৈধভাবে বহাল থাকে এবং বিভিন্ন সুবিধা নিতে থাকে।