Tuesday 1st July 2025
Tuesday 1st July 2025
ডামুড্যা সম্পত্তির আত্মসাৎ করতে বোনকে হত্যা চেষ্টা

আসামী জামিনে এসে আবারও হত্যার হুমকি

আসামী জামিনে এসে আবারও হত্যার হুমকি
আসামী জামিনে এসে আবারও হত্যার হুমকি

শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলায় সাথী বেগম (৩৩) নামে এক নারীকে তার পৈত্রিক সম্পত্তি আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে আপন ভাইয়েরা মিলে রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখমের পর মুখে বিষ ঢেলে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে চার ভাইয়ের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হয়। সেই মামলায় ১নং আসামী ডামুড্যা পৌরসভা সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ইউসুফ আলী ওরফে শামীম মেলকার জামিনে বেড়িয়ে সাথীকে পূনরায় হত্যার হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন সাথী। রোববার (২০জুন) বিকেলে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ অভিযোগ করেন। সাথী ডামুড্যা উপজেলার কনেশ্বর গ্রামের মৃত আমির হোসেন মেলকারের মেয়ে।

সাথী অভিযোগ করে বলেন, আমরা পাঁচ ভাই, দুই বোন। স্বামীর সাথে বনিবনা না হওয়ায় ১৩ বছর পূর্বে ডিভোর্স হয়ে যায়। এরপর থেকে আমি আমার বাবার বাড়িতে বাকপ্রতিবন্ধী বোন শাহিনা আক্তারকে (৩৫) নিয়ে বসবাস করে আসছি। আমার আপন ভাই ইউসুফ আলী শামীম মেলকার, তরিকুল ইসলাম সম্রাট মেলকার, সুলতান মাহমুদ সোহেল মেলকার ও খোকন মেলকার আমার পৈত্রিক সম্পত্তির ভাগ না দিয়ে জোরপূর্বক ভোগ দখল করে আসছে।

গত ৫ জুন সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আমি আমার পৈত্রিক সম্পত্তির ভাগ চাইলে ওই ভাইদের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তারা পরিকল্পিত ভাবে লোহার রড ও বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে এবং আমাকে হত্যার উদ্দেশ্য আমার মুখে বিষ ঢেলে দেয়। এছাড়া আমার টাকা, মোবাইল ও স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয়। পরে তারা আমাকে গুরুতর অবস্থায় ডামুড্যা উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক আমার শরীরে বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখমের চিহ্ন দেখে ডামুড্যা থানা পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে ডামুড্যা থানার ওসি সহ পুলিশের একটি দল হাসপাতালে গিয়ে আমার অবস্থা গুরুতর দেখতে পান। আমার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য আমাকে সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় ইউসুফ আলী শামীম মেলকার, তরিকুল ইসলাম সম্রাট মেলকার, সুলতান মাহমুদ সোহেল মেলকার ও খোকন মেলকার আসামি করে ডামুড্যা থানায় মামলা দায়ের করি। (আজ) ২০ জুন রোববার ১নং আসামী ডামুড্যা পৌরসভা সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ইউসুফ আলী ওরফে শামীম মেলকার জামিনে এসে আমাকে পূনরায় হত্যার হুমকি দিচ্ছে। সে আমাকে হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়ার পায়তারা করছে। আমি এখনও সুস্থ হইনি। শামীম মেলকারকে সাপোর্ট দিচ্ছেন তাঁর চাচা শ্বশুর কনেস্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান বাচ্চু। আমার প্রশ্ন প্রধান আসামী জামিন পায় কি করে? আমি হাসপাতালেও নিরাপদে চিকিৎসা নিতে পারছিনা। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি। আমি দেশবাসী ও আইনের কাছে ন্যায় বিচার দাবি করছি। আমি নিরাপদে বাঁচতে চাই। আমি আমার অধিকার চাই।
ডামুড্যা পৌরসভা সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ইউসুফ আলী ওরফে শামীম মেলকার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি তাকে কোন হুমকি দেইনি। তার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।

কনেস্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান বাচ্চু বলেন, আমি কাউকে সাপোর্ট দেইনা। আমি আগে অনেক চেষ্টা করেছি তাদের বিষয়টি মিমাংসা করার জন্য। কিন্তু কেউ আমার কথা শোনেনি। মামলা হয়েছে। এখন সবকিছু আদালত বুঝবে।

ডামুড্যা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শরীফ আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে আমরা খোঁজ খবর রাখছি। ভিকটিমকে কেউ ভয়ভীতি বা হুমকি দিলে আইনী ব্যাবস্থা নেয়া হবে।