
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৩ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে ডামুড্যা উপজেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে শরীয়তপুর -৩ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব নাহিম রাজ্জাক এমপি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি স্বাধীন ভূখণ্ড ও লালসবুজের পতাকা দিয়ে গেছেন।
অর্থনৈতিক মুক্তির সোপানে তাঁর স্বপ্নের সিঁড়ি বেয়ে উন্নয়নের মহাসড়কে অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় দেশকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন তাঁরই রক্তের উত্তরাধিকার উন্নত ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার জননেত্রী শেখ হাসিনা। যে কোন রাষ্ট্রকে উন্নয়নের শীর্ষে নিয়ে যেতে হলে সরকার প্রধানের দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নেতার কাজ হচ্ছে দেশকে নেতৃত্ব দেওয়া। নেতার যদি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য সম্পর্কে ধারণা না থাকে তাহলে দেশ সঠিকভাবে কখনোই এগিয়ে যেতে পারবে না। বঙ্গবন্ধু যেমন তার দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্বের মাধ্যমে আস্তে আস্তে বাংলাদেশের জনগণকে স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুত করেছিলেন, ঠিক তেমনি ভাবে শেখ হাসিনা তার বাবার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করার জন্য বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে চলেছেন। এই অর্জন সম্ভব হয়েছে তার নেতৃত্বের গুণাবলী কারণে। অনেক ক্ষেত্রেই নিন্দুকেরা শেখ হাসিনার বিভিন্ন নীতি ও কার্যক্রমের সমালোচনা করেছে। কিন্তু দিন শেষে তারা নিজেরাই ভুল প্রমাণিত হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যখন বিশ্বব্যাংক অর্থ পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, তখন বাংলাদেশের সুশীল সমাজ, অর্থনীতিবিদ এবং বিরোধী নেতারা বারবার বলেছিলেন যে বাংলাদেশে পদ্মা সেতু কখনই নির্মিত হবে না। এমনকি বিএনপি চেয়ারপারসন ঘটা করে বলেছেন যে বাংলাদেশের পদ্মা সেতু কখনই নির্মিত হবে না এবং হলেও তা ভেঙ্গে পরবে। সেই বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনা সুনির্দিষ্টভাবে ঘোষণা করেছিলেন যে নিজস্ব অর্থায়নে তিনি বাংলাদেশে পদ্মা সেতু তৈরি করবেন।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণ করে দেখিয়েছেন। পদ্মা সেতু এখন কোন স্বপ্নের বিষয় নয়। এটি একটি বাস্তবতা যা জনগণের ব্যবহারের জন্য খুলে দেওয়ার অপেক্ষায় ২৫ জুন উদ্বোধন ও ২৬ তারিখ থেকে সবসাধারনের জন্য খুলে দেওয়া হবে । একই রকম ভাবে ঢাকা মেট্রোরেল প্রকল্প, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, এবং কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল প্রকল্পের মতো বিভিন্ন প্রকল্প যখন হাতে নেয়া হয়েছিল তখন অনেকেই এগুলোর সমালোচনা করেছিলেন। কারণ এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করার আর্থিক সামর্থ্য সরকারের ছিল না। কিন্তু শেখ হাসিনা প্রমাণ করে দেখিয়েছেন যে নেতৃত্বে দূরদর্শিতা এবং যোগ্যতা থাকলে যে কোন কঠিন লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব।
নাহিম রাজ্জাক এমপি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আরেকটি দিক হচ্ছে সততা। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তি ও তাদের তাদের পরিবারের সদস্যদের দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার ঘটনা একটি সাধারণ বিষয়ে পরিণত হয়েছিল। কিন্তু শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের সদস্যদের দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার ঘটনা এখন পর্যন্ত ঘটেনি। এটা ঠিক যে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার কারণে আওয়ামী লীগের মধ্যে এক শ্রেণির নেতৃত্ব তৈরি হয়েছে যারা নিজেদেরকে দুর্নীতির মধ্যে নিমজ্জিত করেছে এবং তাদের আশেপাশের মানুষদের দুর্নীতি করার ক্ষেত্রে উৎসাহিত করেছে। এ কথাও ঠিক যে দুর্নীতি বর্তমান সরকারের সবচেয়ে বড় একটি সমস্যা। এই বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে সরকার প্রধান এবং তার পরিবারের সদস্যরা যদি দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন তখন দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক আকার ধারণ করে। সেই দিক থেকে বিচার করলে এ কথা সুস্পষ্টভাবে বলা যায় যে শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের সদস্যরা এখন পর্যন্ত দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েননি। ২০১৮ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতা গ্রহণের পরে শেখ হাসিনা দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছিলেন। তার সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছিলেন এবং অনেক ক্ষেত্রেই দুর্নীতিবাজদের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা শুরু হয়েছিল। কিন্তু কেন জানি না কোন এক অজ্ঞাত কারণে কখনও কখনও সরকারের এই মহৎ উদ্দেশ্য বাধাগ্রস্ত হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই বিষয়টি নজরে রেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
গত ১৩ বছরে যারা শেখ হাসিনাকে প্রত্যক্ষ করেছেন তারা এ কথা অস্বীকার করতে পারবেন না যে নেতা হিসেবে তিনি নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে সমর্থ হয়েছেন। তার নেতৃত্বের গুণাবলী শুধু দেশের জনগণের মধ্যে প্রশংসিত হয় নি, বরং তার নেতৃত্ব প্রশংসিত হয়েছেন বিশ্ব দরবারে। বাংলাদেশের নেতা থেকে তিনি বিশ্ব নেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। দেশের ভেতরে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে জলবায়ু পরিবর্তন ও নারীর ক্ষমতায়নসহ অনান্য বিষয়ে তিনি সব সময় সরব থেকেছেন বিধায় আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং বড় বড় দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা তার কাজের প্রশংসা করেছেন। এমনকি তার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং উন্নয়ন পরিকল্পনা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের নেতারা প্রশংসা করেছেন। কোভিড-১৯ মোকাবেলাই সরকারের সফলতা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের তালিকায় অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ প্রাপ্ত হয়েছে। শেখ হাসিনা সরকার চেষ্টা করে যাচ্ছেন ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্রের কাতারে নিয়ে যাওয়ার জন্য। তার এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য তিনি নিরলস পরিশ্রম করে গেছেন গত ১৩ বছর।
এখন অনেকেই যে প্রশ্নটি করেন তা হল শেখ হাসিনার বিকল্প নেতৃত্ব বাংলাদেশে কি তৈরি হয়েছে? এ কথা স্পষ্টভাবে বলা যায় যে, বর্তমান রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে শেখ হাসিনার বিকল্প কোনো রাজনৈতিক নেতৃত্ব গড়ে ওঠেনি। বর্তমান পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের মধ্যেও শেখ হাসিনার মতো দূরদৃষ্টি সম্পন্ন কোন নেতৃত্ব এখন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। বিরোধী রাজনৈতিক দলে যারা রয়েছেন তাদের কথা বাদই দিলাম। কারণ তারা অনেকেই নিজেদেরকে দুর্নীতির মধ্যে নিম