
শরীয়তপুরে সরকারি কমিউনিটি হল, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র এবং ভূমি অফিসের জমি দখল করে অবৈধভাবে দোকান উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে। গোসাইরহাট উপজেলার আলাওয়ালপুর ইউনিয়নের উত্তর কোদালপুর মৌজায় গরীবেরচর ঢালী বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
গরীবেরচর ইউনিয়ন ভূমি অফিস ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ১৯৮৪ সালে স্থানীয় আবুল হোসেন ঢালী গোসাইরহাট সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের ১০০৭ নম্বর দলিলের মাধ্যমে উত্তর কোদালপুর মৌজার দিয়ারা জরিপের ৭২নম্বর খতিয়ানের ৩২০৭, ৩২০৮ ও ৩২০৯ নং দাগে মোট ৫০ শতাংশ জমি গরীবেরচর ইউনিয়ন কমিউনিটি হল নির্মাণের জন্য দেন। সেখানে কিছু অংশে একটি আধাপাকা হল নির্মাণ করা হয়। বাকী অংশে বিভিন্ন গাছ লাগানো হয়। একই সালে আবুল হোসেন ঢালী ও সারোয়ার আলম ঢালী গরীবেরচর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের নামে সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে ১০০৮ নম্বর দলিলের মাধ্যমে একই মৌজার দিয়ারা ৭২ নম্বর খতিয়ানের ৩২০৭, ৩২০৮ ও ৩২০৯ নম্বর দাগের ৩২ শতাংশ জমি রেজিস্ট্রি করে দেন। এই জমির কিছু অংশে একটি অফিস ভবন ও একটি আবাসিক ভবন নির্মাণ করে দীর্ঘদিন যাবত স্বাস্থ্য সেবা পরিচালনা করে আসছে। ১৯৯৯ সালে সারোয়ার আলম ঢালী সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে ১৫৭৫ নম্বর দলিলের মাধ্যমে ওই মৌজার দিয়ারা ৭২ খতিয়ানের ৩২০৭ নম্বর দাগের ৩৪ শতাংশ জমি গরীবেরচর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের জন্য রেজিস্ট্রি করে দেন। সরকারি এসব প্রতিষ্ঠানের এক তৃতীয়াংশ বর্তমানে প্রভাবশালীদের দখলে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গরীবেরচর ইউনিয়ন কমিউনিটি হল, গরীবেরচর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র এবং গরীবেরচর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ‘প্রায় এক একর ৩২ শতাংশ জমির’ এক তৃতীয়াংশ জমি দখল করে অবৈধভাবে দীর্ঘদিন ধরে দোকান ঘর তুলে ভাড়া ও ব্যবসা করে আসছেন স্থানীয় মৃত জমির উদ্দিন ঢালীর ছেলে রেজাউল করিম ঢালী, শাখাওয়াত ঢালী, রাসেল ঢালী ও সরোয়ার ঢালীর ছেলে রাকিব ঢালী।
রাসেল ঢালী বলেন, আমার বাবা চাচারা পাঁচজন। তিনজনে জমি দান করেছেন। আমাদের জমি দখলে গিয়ে আমরা দোকান তুলেছি। কারণ আমরা দাতার ওয়ারিশ।
স্থানীয় মহিউদ্দিন ঢালীসহ বাজার ব্যবসায়ীরা জানান, জমি দখলকারী ব্যক্তিগণ পেশি শক্তির জোরে অন্যায়ভাবে সরকারি ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানের জমি দখল করে রেখেছে এবং জমি থেকে প্রায় ৭ লাখ টাকার গাছ কেটে নিয়ে গেছে। সরকার যেন জমিগুলো উদ্ধার করে এটাই তাদের প্রত্যাশা।
গরীবেরচর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ৩৪ শতাংশ জমি রয়েছে ওইখানে। ওই জমিতে ভূমি অফিস হোক এটা আমার চাওয়া। আমি জমি দখলদারদের বাধা দিলেও তারা জোর করে জমি দখল করে বসে আছে। গোসাইরহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে এ বিষয় জানানো হয়েছে।
গোসাইরহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আলগীর হুসাইন বলেন, আমি এ সম্পর্কে জেনেছি। অতিদ্রুত সরকারি জমি উদ্ধারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।