Tuesday 1st July 2025
Tuesday 1st July 2025

ইতালি যাওয়ার পথে নৌকা ডুবি, দুই মাস ৬দিন পর মরদেহ পেল পরিবার

ইতালি যাওয়ার পথে নৌকা ডুবি, দুই মাস ৬দিন পর মরদেহ পেল পরিবার

লিবিয়া থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার পথে তিউনিসিয়ার উপকূলে অভিবাসীবাহী নৌকা ডুবিতে মৃত্যুবরণ করা শরীয়তপুরের উত্তম দাস নামে এক যুবকের মরদেহ পৌঁছে পরিবারের কাছে। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার দক্ষিণ চাকধ আনা হয় মরদেহটি। তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শোকে মাতম করছেন মা-বাবা, ভাইসহ আত্মীয়-স্বজনরা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নড়িয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম মঞ্জুরুল হক আকন্দ।
নিহত উত্তম দাস (২৫) উপজেলার ভূমখাড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ চাকধ গ্রামের গৌতম দাসের ছেলে । দুই ভাইর মধ্যে উত্তমই বড়। তিনি স্থানীয় একটি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়ে গত বছর স্থানীয় আক্কাছ দালালের মাধ্যমে লিবিয়া যায়। সেখান থেকে ইতালি যাওয়ার পথে নৌকা ডুবিতে তার মৃত্যু হয়।
নিহতর পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানান, গত বছর (২০১৮ সালের) রমজান মাসে উত্তম দাসসহ নড়িয়ায় আরও ১০-১২ জন যুবক ওই দালালের হাত ধরে লিবিয়া যান। সেখান থেকে নৌকায় করে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি রওনা হন। গত ১১ মে রাতে অভিবাসীবাহী নৌকাটি তিউনিসিয়ার উপকূলে ডুবে যায়। নিখোঁজ হন উত্তম দাসসহ নড়িয়ার যুবকরা। দুই মাস নিখোঁজ থাকার পর গত বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) পরিবার সরকারিভাবে জানতে পারে উত্তম দাসের লাশ পাওয়া গেছে। পরে মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সকালে তিউনিসিয়া থেকে উত্তম দাসের মরদেহ শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে পৌঁছে। পরে বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে শরীয়তপুরের গ্রামের বাড়িতে উত্তমের মরদেহ নিয়ে আসে স্বজনরা। বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে বাড়ির পাশের শশ্মানে উত্তমের শেষ কৃত্য সম্পাদন করা হয়।
উত্তমের মা কল্পনা রানী দাস ছেলের শোকে চিৎকার করে কান্না করে বারবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। উত্তমের বাবা গৌতম দাস বলেন, ছেলের লাশ পাওয়া গেছে এমন খবর প্রশাসন থেকে আমাদের জানানো হয়েছিল। আমরা প্রথম বিশ্বাস করি নাই। শেষবারের মতো ছেলের মুখটা দেখতে পেলাম। যারা আমার ছেলেকে প্রলোভন দেখিয়ে ইতালি পাঠানোর নাম করে নৌকায় তুলেছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের বলেন, তিউনিসিয়ার উপকূলে অভিবাসীবাহী নৌকা ডুবিতে মৃত্যুবরণ করে উত্তম দাস। তার মৃত্যুর বিষয়ে পরিবারকে জানানো হয়েছিল। ঘটনাটি খুবই বেদনাদায়ক। জেলা প্রশাসন নিহতের পরিবারকে সব ধরনের সহায়তা দেবে।