সোমবার, ২রা অক্টোবর, ২০২৩ ইং, ১৭ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৬ই রবিউল-আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরী
সোমবার, ২রা অক্টোবর, ২০২৩ ইং

নড়িয়ায় পূর্ব শত্রুতার জেরে ঘরে আগুন ও লুটপাট

নড়িয়ায় পূর্ব শত্রুতার জেরে ঘরে আগুন ও লুটপাট

শরীয়তপুরর নড়িয়া উপজেলার ভোজেশ্বর ইউনিয়নের চান্দনী গ্রামে পূর্ব শত্রুতার জেরে গত বৃহস্পতিবার ২২-শে আগষ্ট মৃত সহিজউদ্দিন ঢালীর ছেলে আবু সিদ্দিক ঢালীর ঘরে লুটপাট করে ২-৩ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে যায় ও পরে ঐ ঘরে অগ্নিসংযোগ ঘটানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত ১০ জুন নড়িয়া উপজেলার চান্দনী গ্রামে ইয়াকুব ছৈয়াল (৪৮) নামে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে প্রতিপক্ষের লোকেরা তাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে বলে নিহতের পরিবার দাবী করে। ঐ হত্যাকান্ডের আসামী করা হয় মৃত সহিজউদ্দিন ঢালীর ছেলে আবু সিদ্দিক ঢালীসহ ২২ জনকে। এর জেরে ছৈয়াল বংশের দলীয় লোকজন ঢালী বংশকে নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য এসব বাড়ি ঘরে লুটপাট করে ঢালী বংশের লোকজনকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে তাদের ঘরে অগ্নিসংযোগের মতো জঘন্য কর্মকান্ড করে রাজনৈতিক প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে উঠে।
এ ঘটনার অভিযোগকারী মৃত সহিজউদ্দিন ঢালীর স্ত্রী কুটি বিবি বলেন, আমার ছেলে জেলে আছে। আমার ছেলে আবু সিদ্দিক বাড়িতে না থাকায় আমার ঘর থেকে মৃত সরবত আলীর ছেলে চান্দু শেখ (৪০), খলিল খানের ছেলে জুয়েল খান (৩৫), ছমেদ মোল্লার ছেলে আলী হোসেন মোল্লা (৩২), দলিল উদ্দিন মোল্লার ছেলে নুরু মোল্লা (২৫), আরশেদ ছৈয়ালের ছেলে ইসহাক ছৈয়াল (৪০), রফি মুন্সির ছেলে রুবেল মুন্সিসহ আরো লোকজন মিলে ২-৩ লাখ মাল লুটপাট করে নিয়ে আমাকে, আমার পুতের বউকে ও আমার নাতিদের মারধর ও খারাপ গালিগালাজ করে বাড়ি থেকে বের করে দেয় আর আমাদের ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। আমি আইনের কাছে এর উপযুক্ত বিচার চাই। থানায় জানাইছি, তারা দেখে গেছে কিন্তু কোন মামলা নেয়নি। এজন্য কোর্টে অভিযুক্তদের বিচারের দাবিতে মামলা করবো।
আবু সিদ্দিক ঢালীর বোন আলেয়া বেগম বলেন, আমার ভাই হাজতে আছে। আমাদের ঢালী বাড়ির প্রায় সবাইকে ইয়াকুব ছৈয়াল হত্যার আসামি করা হয়। যার কারনে এই ঢালী বাড়ির পুরুষরা সবাই জেলে। আমাগো পুরুষরা বাড়িতে না থাকার কারনে ছৈয়াল বাড়ির লোকজনসহ তাদের দলের লোকজন লইয়া আমাগো মহিলা ও বাচ্চাদের বাড়ি থেকে বের করে ঘরের সবমালামাল ভাংচুর করে ও অনেক মুল্যবান স্বর্ণালোংকার ও টাকাপয়সা লুট করে নিয়ে যায়। আমার মা, ভাবী ও ঢালী বাড়ির সকল লোকজন এখন ভয়ে জীবন বাচতে অন্যের বাড়িতে পলাতক অবস্থায় জীবনযাপন করছে। আমাদের জীবনের কোন নিরাপত্তা নেই। থানায় কোন ডায়েরি হয়েছে কিনা জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, থানায় জানানো হয়েছে কিন্তু মামলা করতে পারিনি এজন্য কোর্টে মামলা করবো।
ভোজেশ্বর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলী আহম্মদ শিকদারকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ইয়াকুব ছৈয়াল হত্যাকান্ডের আসামী সহিজউদ্দিন ঢালীর ছেলে আবু সিদ্দিক ঢালী। এছাড়াও ঐ ঢালীর বাড়ির সবাইকে আসামী করা হয়েছে। ঐ কারনেই ঢালী বাড়িতে লুটপাট হয় ও আবু সিদ্দিকের ঘরে অগ্নি সংযোগের মতো জঘণ্যতম কাজও করেছে মৃত সরবত আলীর ছেলে চান্দু শেখ (৪০), খলিল খানের ছেলে জুয়েল খান (৩৫), ছমেদ মোল্লার ছেলে আলী হোসেন মোল্লা (৩২), দলিল উদ্দিন মোল্লার ছেলে নুরু মোল্লা (২৫), আরশেদ ছৈয়ালের ছেলে ইসহাক ছৈয়াল (৪০), রফি মুন্সির ছেলে রুবেল মুন্সিসহ আরো লোকজন মিলে ২-৩ লাখ মাল লুটপাট করে নিয়ে যায়। ইয়াকুব ছৈয়াল হত্যা মামলার প্রধান আসামী আমাকে করা হয়, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও রাজনৈতিক। তিনি বলেন, এ হত্যাকান্ডে রাজনৈতিক কারনে আমাকে ও আমার দলীয় লোকজনকে মিথ্যা আসামী করে আমার লোকজনের বাড়িঘর লুটপাট ও অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেই চলছে। আইনের এবং সরকারের নিকট এর উপযুক্ত বিচার দাবি করছি।
এলাকার প্রতিবেশী মোস্তফা দেওয়ানকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, আমরা ঘরে আগুন লাগার বিষয়ে শুনেছি কিন্তু এ বিষয়ে আমাদের না জিজ্ঞাসা করলেই ভালো হয় হয়।
নড়িয়া থানা ওসি মঞ্জুরুল হক আখন্দ বলেন, নড়িয়া উপজেলার চান্দনী গ্রামে গত বৃহস্পতিবার রাতে ঘরে অগ্নিকান্ডের ঘটনা সম্বন্ধে আমাদের জানানো হয়েছে। মামলা হয়েছে কিনা জিজ্ঞাসা করা হলে ওসি মঞ্জুরুল হক আখন্দ বলেন, এ বিষয়ে কেউ কোন মামলা এখনো পর্যন্ত করেনি।


error: Content is protected !!