
শরীয়তপুরে নড়িয়া পৌরসভায় বিদেশ ফেরত অভিবাসীদের অর্থনৈতিক ও কাউন্সিলিং সহায়তা নিশ্চিতকরণে সেবাদানকারী আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সাথে অ্যাডভোকেসি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে । ২০ জুন দুপুর বাংলাদেশ সরকারের পরিচালনায়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে, আইওএম ও ব্র্যাকের বাস্তবায়নে নড়িয়া পৌরসভা সম্মেলন কক্ষে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালায় বিদেশ ফেরত অভিবাসীদের আর্থিক সহয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়।
নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অঃদঃ) তানভীর-আল-নাসীফ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নড়িয়া পৌরসভার মেয়র এড. আবুল কালাম আজাদ।
এ সময় ব্র্যাক জেলা সমন্বয়কারী সমীর কুমার কুন্ডু, নড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অবনী শংকর কর, নুসা’র যুগ্ম পরিচালক জয়দেব চন্দ্র কুন্ডু, কারিগরি প্রশিক্ষন কেন্দ্রের প্রতিনিধি, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংক-বীমাসহ অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, সাংবাদিক, সেবাগ্রহীতা এবং স্থানীয় ব্র্যাককর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জেলা ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের সাইকো সোশ্যাল কাউন্সেলর বাসুদেব চন্দ্র রায় ও উপস্থাপনা করেন, আরএসসি ডিস্ট্রিক্ট্র ম্যানজার মো. আব্দুল্লাহ আল কাহাফ।
উপস্থিত অংশগ্রহনকারীরা বলেন, অভিবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স আমাদের দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করে। অভিবাসীরা দেশে ফিরে আসার পর আর্থিকভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য চেষ্টা করে। কিন্তু তাদের কাছে সঠিক কাগজ পত্র না থাকার কারণে তারা সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সেবা থেকে বঞ্চিত হয়। তাই যদি জাতীয় নীতি নির্ধারকরা কিছু নিয়ম শিথিল করে তাহলে বিদেশ ফেরত অভিবাসীদের আরো ভালো ভাবে সেবা প্রদান করা যাবে।
নড়িয়া উপজেলা কেদারপুর ইউনিয়নের রনি মালত (২৬) ইছাপাড়া গ্রাম, বসির আহমেদ (৪৭) ইতালী ফিরত তারা অনিয়মিত ভাবে দালালের মাধ্যমে জীবনের ঝুকি নিয়ে ইতালীতে যান। এবং এক সময় তাদের দেশে ফেরত আসতে হয় । মাল্টা ফেরত পিন্টু পাজরী তিনি অনিয়মিত ভাবে ইতালীতে যাওয়ার জন্য লিবিয়া সাগর পারি দেয়ার সময় মাল্টা পুলিশ ধরে ১৬ মাস জেলে রেখে বাংলাদেশ পাঠিয়ে দেয়। সে বেকার এবং হতাশা গ্রস্থ হয়ে পড়ে , প্রত্যাশা প্রকল্পের মাধ্যমে তিনি কাউন্সিলিং পেয়ে নতুন করে আবার বাচার স্বপ্ন দেখে ।
প্রধান অতিথি পৌরসভার মেয়র এড. কল কালাম আজাদ বলেন, যারা বিদেশ যেতে চায় এবং যারা বিদেশ ফেরত তাদেরকে আমাদের সকলের সহযোগিতা করতে হবে। কারন তারা রেমিটেন্স পাঠিয়ে আমাদের দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখছে। ফলে যার যার অবস্থান থেকে বিদেশ-ফেরত অভিবাসীদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করতে হবে। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও অভিবাসীদের কারনে আমাদের দেশের অর্থনীতির চাকা সচল ছিল। তাই রেমিটেন্স যারা পাঠাচ্ছে তাদেরকে এবং তার পরিবারের সদস্যদেরকে সকল ধরনের সরকারী সুযোগ সুবিধা পেতে অগ্রাধিকার দেয়ার আহবান জানান তিনি ।
অনুষ্ঠানে সভাপতির সমাপ্তি বক্তব্যেঃ নড়িয়া উপজেলায় বিদেশগামীর সংখ্যা যেমন বেশী তেমনি বিদেশ ফেরত অভিবাসীর সংখ্যাও বেশী। তাই তাদের সেবা নিশ্চিত করতে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। কারন বর্তমান সরকারের প্রতিশ্রুতির মধ্যে অভিবাসী ও বিদেশ ফেরতদের সেবা নিশ্চিত করার অঙ্গিকার রয়েছে। তিনি আরো বলেন ব্র্যাক এর মত অন্যান্য অর্গানাইজেশনকে মাঠ পর্যায়ে অভিবাসন বিষয়ে কাজ করার জন্য আহবান করেন।