Tuesday 1st July 2025
Tuesday 1st July 2025

নড়িয়ায় ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের জায়গা বিক্রিয়ের অভিযোগ

নড়িয়ায় ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের জায়গা বিক্রিয়ের অভিযোগ

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার চামটা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের জায়গা রাতের আঁধারে ক্রয়-বিক্রিয়ের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে। তারা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের সীমানা ও নিরাপত্তা প্রাচীর নির্মানেও বাধা সৃষ্টি করে আসছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, চামটা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের জায়গা লিজ নিয়ে দোকান ঘর নির্মাণ করেন দেলোয়ার হোসেন কাহেত সহ স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী। দেলোয়ার কাহেত কয়েক বছর নিজেই দোকান চালানোর পর ফজলুল হক বেপারীর কাছে দোকান ঘরটি ভাড়া দেন। ফজলুল হক বেপারীর ছেলে শাহীন বেপারী দাবি করেন, দেলোয়ার কাহেতকে অগ্রিম ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ঘরটি ভাড়া নিয়ে প্রায় ২০ বছর যাবত তারা দোকান চালাচ্ছেন। গত ৯ সেপ্টেম্বর রাতে কয়েকজন স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালীদের সাথে নিয়ে ক্লাবে বসে দেলোয়ার কাহেত চামটা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের জায়গায় নির্মাণ করা দোকানটি দুবাই প্রবাসী সালাউদ্দিন ফকিরের কাছে ৬ লাখ টাকা বিক্রি করে দিয়েছেন। বিক্রির পর ওই রাতেই দখলে থাকা ফজলুল হক বেপারী ও তার ছেলে শাহীন বেপারীকে ডেকে দোকান ঘর খালী করে দিতে হুমকি দেন। পরদিন শুক্রবার রাতে স্থানীয় প্রভাবশালী বাবুল রাড়ির নেতৃত্বে কয়েকজন সুবিধা ভোগী সরকারি জায়গা মেপে সালাউদ্দিন ফকিরকে বুঝিয়ে দেন। পরের দিন শনিবার সকালে সালাউদ্দিন ফকির ইট-বালু ও শ্রমিক নিয়ে সেখানে ভবন নির্মান করতে গেলে স্থানীয়রা বাধা দেন। সরকারি জায়গায় স্থায়ী স্থাপনা করতে না পেরে সালাউদ্দিন ফকির প্রভাবশালীদের টাকা দিয়ে দরিদ্র ফজলুল হক বেপারীকে উৎখাতের চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে ফজলুর হক বেপারি দৈনিক রুদ্রবার্তাকে বলেন, আমি গরীব মানুষ। দেলোয়ার কাহেতের কাছ থেকে ভাড়া নিয়ে প্রায় ২০ বছর ধরে সরকারী জায়গায় চায়ের দোকান করে সংসার চালিয়ে আসছি । কিন্তু রাতের আধাঁরে আমার দখলে থাকা জায়গাটুকু প্রভাবশালীরা বিক্রি করে আমাকে উচ্ছেদের হুমকি দিচ্ছে।
এ বিষয়ে দোলোয়ার কায়েত দৈনিক রুদ্রবার্তাকে বলেন, আমি দোকান বিক্রি করিনি। ছেলেকে বিদেশ পাঠানোর জন্য দোকান ঘরটি বন্ধক রেখে সালাউদ্দিন ফকিরের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা নিয়েছি। তার কাছ থেকে আর কেউ টাকা নিয়েছে কিনা জানা নাই।
কেনো সরকারি জায়গায় স্থাপনা তৈরি করতে গেলেন তা জানার জন্য সালাউদ্দিন ফকিরের বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোনে একাধিক বার কল করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
চামটা ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি গনি হাওলাদার দৈনিক রুদ্রবার্তাকে বলেন, আমরা কয়েকজন ক্লাবঘরে বসা ছিলাম। তখন দেলোয়ার কাহেত ও সালাউদ্দিন ফকির এসে আমাদের উপস্থিতিতে স্ট্যাম্পের মাধ্যমে দোকান ঘর বেচা-কেনা করেন। সরকারি জায়গা বেচা-কেনায় বাধা দেননি কেনো, সে প্রশ্নের উত্তর তিনি দেননি।
রাতের আধারে হাসপাতালের জায়গা মেপে কেনো আরেকজনকে বুঝিয়ে দিয়েছেন, তা জানতে বাবুল রাড়ির বক্তব্য জানতে তার বাড়িতে গেলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
তবে এ বিষয়ে তার ভাই চামটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নিজাম রাড়ি দৈনিক রুদ্রবার্তাকে বলেন, লোকমুখে আমি ঘটনা শুনেছি। তবে আমি উপস্থিত ছিলাম না। যদিও স্থানীয়রা বলছেন, বিষয়টি চেয়ারম্যানকে জানালেও তিনি রহস্যজনক কারনে চুপ রয়েছেন।

চামটা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা ডা. দীপক দৈনিক রুদ্রবার্তাকে বলেন, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের জায়গায় কাউকে পাকা ভবন বা দোকান ঘর নির্মাণ করতে দেয়া হবেনা। কেউ যাতে আর কোন দোকান চালাতে না পারে সেজন্য সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের জায়গায় রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে।
নড়িয়া উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসার মোজাম্মেল হক দৈনিক রুদ্রবার্তাকে বলেন, চামটা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের জায়গা কিছু লোক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ভুল তথ্য দিয়ে লিজ নিয়ে দোকান করছেন। আমরা ওই লিজ বাতিলের জন্য কাজ করছি। কারা কি বিক্রি করেছে তা আমার জানা নেই। এখানে সরকারি জায়গা বিক্রিরও কোন সুযোগ নেই।