
শরীয়তপুরের নড়িয়ায় পুলিশের এএসআই-এর মায়ের উপর বর্বর হামলাকারী চার্জশিটভূক্ত আসামীদের কঠোর শাস্তি দাবি পরিবারের। স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ মার্চ রোববার দুপুরে শরীয়তপুরের নড়িয়ার ফতেজঙ্গপুর(শিরঙ্গল) এলাকার নিজ বসতঘরের সামনে পুকুরে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে মধ্যযুগীয় কায়দায় বর্বর হামলার শিকার হয়েছেন মমতাজ বেগম(৬০) নামে এক বৃদ্ধা নারী। সে আ: রব ঢালীর স্ত্রী এবং পুলিশের এ.এস.আই শফিক ঢালীর মা।
হামলাকারীরা হলেন, একই এলাকার সন্ত্রাসী ও দাঙ্গাবাজ খালেক বেপারী(৫৫), সাইফুল বেপারী(৩০), শাকিল বেপারী(২২), শাকিব বেপারী(২০), শিরিন আক্তার(২৫), সীমান্ত(১৯), সাথী আক্তার(২৬) ও রহিমা বেগম(৫০)। এ বিষয়ে ভিকটিম-এর মেয়ের জামাই জাহাঙ্গীর বেপারী বাদী হয়ে নড়িয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। নড়িয়া থানা পুলিশ উক্ত মামলার আসামীদের প্রাথমিকভাবে যাচাই-বাচাই করে একটি চার্জশিট দিয়েছেন। চার্জশিটে উল্লেখ রয়েছে-মো: আ: রব ঢালী একজন নিরীহ ভদ্রলোক হওয়ার সুবাদে আসামিগণ বিভিন্ন সময়ে তার পরিবারের উপর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নির্যাতন অত্যাচার করিয়া থাকে। দিনে রাতে বিভিন্ন সময় পুকুরের মাছ চুরি করিয়া নিয়ে যায়। যাহা আ: রব ঢালী অবগত থাকা সত্ত্বেও আসামীদের পেশী শক্তির ভয়ে বাঁধা দিতে সাহস পায় নাই। তারই ধারাবাহিকতায় ঘটনার দিন ১৯/৩/২০২৩ তারিখ দুপুর অনুমান ২:০০টার দিকে এজাহার নামীয় সকল আসামিগণ বিভিন্ন ধরনের লাঠিসোটা নিয়ে বাদীর শশুর ও তাহার পরিবারবর্গের অনুপস্থিতির সুযোগে বেআইনি জনতাবদ্ধে আ: রব ঢালীর বাড়ির পূর্ব পার্শ্বের স্বত্ব দখলীয় পুকুর পাড়ে অনধিকার প্রবেশ পূর্বক মাছ চুরি করার অসৎ উদ্দেশ্যে পানি সেচের মেশিন দিয়া পুকুরের পানি সেচ শুরু করিলে মো: আ: রব ঢালী ও তার স্ত্রী মোসা: মমতাজ বেগম উক্ত ঘটনা লোক মাধ্যমে জানিতে পারিয়া ঘটনাস্থলে হাজির হইয়া মমতাজ বেগম আসামিগণকে পানির সেচে বাধা দিতে গেলে এবং কাহার অনুমতি নিয়ে পানি সেচ দিতেছো জানিতে চাইলে ১নং আসামী খালেক বেপারীর হুকুমে সকল আসামী নিজ বসতঘরের সামনে মমতাজ বেগমকে এলোপাথাড়ি রড ও লাঠি সোটা দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে রক্তাক্ত ও জখম করে এবং তাহাদের সাথে থাকা ৮৯’হাজার টাকা মূল্যমানের চেইন ও নগদ ৭’হাজার ৩০০টাকা পকেটসহ ১’লক্ষ টাকার জিনিসপত্রের ক্ষতিসাধন করে। তৎক্ষণাৎ মমতাজ বেগম মাটিতে লুটিয়ে পড়লে এলাকার প্রতিবেশী লোকজন পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ এসে ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনে এবং আহত মমতাজ বেগমকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করা হয়। মমতাজ বেগমসহ তার পরিবারের উপর আসামীগণ যে অপরাধ করেছে তা পেনাল কোড ১৪৩/৪৪৭/৩২৩/৪২৭/৩২৬/৩০৭/৩৫৪/৩৭৯/১১৪/৫০৬ ধারার অপরাধ; প্রাথমিকভাবে প্রমানিত হয়েছে। এদের মধ্যে আসামী শাকিল বেপারীসহ দুইজন আসামী একাধিক মামলার আসামী। আসামী খালেক বেপারী, শিরিন, সাথী ও রহিমা জামিনে রয়েছেন; সাইফুল, সাকিব ও সীমান্ত এমসি দাখিল পর্যন্ত ছিল এবং আসামী শাকিল এখনো পলাতক হিসেবে আছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় ও প্রতিবেশী হাতেম আলী বেপারী ও শহরবানু বলেন, আ: খালেক বেপারী গংরা পুকুরে মাছ ধরার জন্য পানি সেচের জন্য মেশিন লাগায়। মমতাজ বেগম তা নিষেধ করার কারনে তাকে বড় কাঠের টুকরা ও রড দিয়ে এলোপাথাড়ি মারধর করে। পরে পুলিশ এসে মমতাজ বেগমকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠায়। আ: খালেক বেপারী গংরা খুব খারাপ প্রকৃতির মানুষ। তাদের নামে থানায় একাধিক অভিযোগ আছে এবং জিডি করা আছে। এ মামলার আসামী দের কঠোর বিচার হওয়া উচিৎ।
#