মঙ্গলবার, ৩০শে মে, ২০২৩ ইং, ১৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১০ই জিলক্বদ, ১৪৪৪ হিজরী
মঙ্গলবার, ৩০শে মে, ২০২৩ ইং

পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে : এনামুল হক শামীম

পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে : এনামুল হক শামীম

পানি সম্পদ উপমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম এমপি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) এর তত্ত্বাবধানে বাস্তবায়নাধীন “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর” বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ শিল্প অঞ্চল। মূলত যোগাযোগ ব্যবস্থা, সমুদ্র পথে পরিবহন, দেশী-বিদেশী বিনিয়োগের সম্ভাব্যতা ও পর্যাপ্ত জমি প্রাপ্তির উপযোগীতা বিবেচনায় প্রায় ৩০ হাজার একর এলাকাব্যাপী এই শিল্পনগরটি মিরসরাই, ফেনী ও সীতাকুন্ডের সমুদ্র উপকূলবর্তী চরাঞ্চল ও পতিত জমিতে গড়ে তোলা হচ্ছে। তন্মধ্যে বাপাউবো কর্তৃক প্রথম ধাপে মিরসরাই উপজেলায় প্রায় ১৬ হাজার একর পতিত, বেড়িবাঁধের বাইরে জোয়ার- ডাটা প্রবণ জমি সুপারডাইকের মাধ্যমে রক্ষা করে শিল্পাঞ্চলের জন্য উপযোগী করার উদ্যোগ এই প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রহণ করা হয়েছে। চট্টগ্রামের সুপার ডাইকের মতো বড় বড় মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে আমরা কাজ করছি। এতেই প্রমাণিত হয় পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এসবই সম্ভব হয়েছে জননেত্রী শেখ হাসিনার বদৌলতে।

শনিবার ২০ মে সকালে চট্টগ্রামে প্রায় ১৬৫ কোটি ব্যয়ে বাস্তবায়নধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরের বন্যা নিয়ন্ত্রণ সড়ক কাম বেড়িবাঁধ প্রতিরক্ষা এবং নিষ্কাশন প্রকল্প পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, প্রকল্পটির আওতায় প্রয়োজনীয় অবকাঠামোসহ বাস্তবায়নাধীন ২২.৫৪০ কিলোমিটার সুপার ডাইক নির্মাণের ফলে প্রায় ১৬ হাজার একর এলাকায় বিভিন্ন ধরণের শিল্প কল-কারখানা, অবকাঠামো, অফিস প্রভৃতি স্থাপনের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে বাংলাদেশে দেশী বিদেশী বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের পরিবেশ গড়ে উঠেছে। দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার কর্মসংস্থানের চাহিদা পুরণসহ জাতীয় প্রবৃদ্ধি অর্জনে প্রকল্পটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এছাড়া প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে প্রকল্প এলাকা বন্যা ও জলোচ্ছ্বাস হতে রক্ষা পাবে, ভূমিক্ষয় দূরিভূত হবে, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন সাধিত হবে, বাণিজ্যিক বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধি ঘটবে, সামগ্রিকভাবে প্রকল্প এলাকায় আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটবে; যা আঞ্চলিক ও জাতীয় অর্থনীতিতে যুগান্তকারী অবদান রাখবে।

উপমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশে সারাদেশের নদী ভাঙন, জলবদ্ধতা নিরসনে পানি সম্পদ মন্ত্রনালয় কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে চলছে। আর সরকারের পদক্ষেপের কারণেই সারাদেশে নদীভাঙন কমে এসেছে। কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার কারণেই গত ১৪ বছরে সারাদেশে নদী ভাঙনের পরিমাণ এক তৃতীয়াংশ অর্থাৎ সাড়ে ৯ হাজার হেক্টর থেকে সাড়ে ৩ হাজার হেক্টরে নেমেছে।

এনামুল হক শামীম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী প্রজন্ম নিয়ে ভাবেন, সেজন্য তিনি আগামীর বাসযোগ্য বিশ্বমানের সুবিধা সম্বলিত বাংলাদেশ গড়তে চান। এজন্য তিনি দূরদর্শী পদক্ষেপ নেন। সেজন্য তিনি ডেল্টাপ্লান-২১০০ বাস্তবায়নেরও ঘোষণা দিয়েছেন। আর এই মহাপরিকল্পনার সিংহভাগ কাজই পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করবে। এ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে সারাদেশে নদী ভাঙন ও জলাবদ্ধতার কোনো সমস্যাই থাকবে না। এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে।

উপমন্ত্রী বলেন, পানি সম্পদ মন্ত্রনালয় হয়ে উঠেছে মানবতার মন্ত্রনালয়। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষকের মুখে স্থায়ী হাসি দেখতে চান। সে লক্ষে হাওড়ের কৃষকের ফসল ঘরে তুলতে পানি সম্পদ মন্ত্রনালয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ড অক্লান্ত পরিশ্রম করে গত কয়েক বছর যাবৎ তাদেরকে সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছে। এ কারণে তারা সময়মতো ফসল ঘরে তুলতে পারছে। দেশের কোথাও বন্যা হলে পানি সম্পদ মন্ত্রনালয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ড সঙ্গে সঙ্গে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। এছাড়াও পানি সম্পদ উপমন্ত্রী ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বিভিন্ন প্রকল্প নিয়মিত পরিদর্শন এবং তদারকি করে।

শামীম বলেন, সারাদেশে স্থায়ী প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বাংলাদেশের মানুষ অনেকাংশে জলাবদ্ধতা ও নদী ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে। প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ভাঙন রোধে স্থায়ী প্রকল্প করা হচ্ছে। উপকূল অঞ্চলে প্রতিটি বাঁধ প্রশস্ত ও উঁচু করা হচ্ছে, বনায়ন করা হচ্ছে। আর এসব স্থায়ী প্রকল্পে নদী খনন বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে এবং তা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য জনবলও বাড়ানো হয়েছে। আর এর সুফল কয়েক বছরের মধ্যে মিলবে।

এসময় পানি উন্নয়ন বোর্ডের চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী শিবেন্দু খাস্তগীর, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জুলফিকার তারেক, বেজার যুগ্ম সচিব ও প্রকল্প পরিচালক আবদুল্লাহ আল মোহাম্মদ ফারুক, উপ-সচিব ও উপ প্রকল্প পরিচালক মো. নাজমুল ইসলাম, নৌ বাহিনীর প্রতিনিধি এস. এম নাসিম,
চট্টগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্প পরিচালক ও নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ উজ জামান খান এবং চায়না হারবর ইন্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেডের প্রজেক্ট ম্যানেজার মি. ঝাং হাইলং প্রমূখ।

এরআগে উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম চট্টগ্রামে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বেজা এবং নৌ বাহিনী এবং ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চায়না হারবর ইন্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় যোগ দেন।


error: Content is protected !!