Tuesday 1st July 2025
Tuesday 1st July 2025
শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার নশাসন

কিশোরী দুই মেয়েকে নিয়ে আতঙ্কে রাত কাটে মায়ের

কিশোরী দুই মেয়েকে নিয়ে আতঙ্কে রাত কাটে মায়ের
কিশোরী দুই মেয়েকে নিয়ে আতঙ্কে রাত কাটে মায়ের

নির্ঘুম রাত কাটে ১৮ বছর বয়সী ও ৭ বছর বয়সী দুই মেয়েকে নিয়ে মায়ের। ওই কিশোরীর বাবা মারা যাওয়ায় উপার্জনক্ষম একমাত্র ভাই ঢাকায় অবস্থায় করায় তাদের এই অবস্থা।

গত ২৪ মে দিবাগত রাতে ঘরের জানালার কপাট কেটে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি ঢোকেন তাদের ঘরে। ঘরে ঢুকে কোনো কিছু চুরি না করে বিছনায় ঘুমন্ত অবস্থায় ওই কিশোরীর মায়ের গলায় হাত দেয় এক ব্যক্তি। এঘটনায় শরীয়তপুরের নড়িয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন ভূক্তভোগী তাছলিমা বেগম। ঘটনা শোনার পর ওই মায়ের একমাত্র ছেলে ইয়াসিন আরাফাত বাড়িতে চলে এসেছেন। ছেলে বাড়িতে আসলেও ভয়ে ঘুম আসে না তার।

গত মঙ্গলবার (২৩ মে) দিবাগত রাতে এমন ঘটনা ঘটেছে শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার নশাসন ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের সরদার কান্দি গ্রামের মৃত দুলাল সরদারের বাড়িতে। ভূক্তভোগীর পরিবার ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার দিবা গত রাত অনুমান সাড়ে তিনটার দিকে টিনের ঘরের জানালা কেটে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি ঘরের প্রধান রুমে ঢুকে ঘুমন্ত অবস্থায় ইয়াসিন আরাফাতের মায়ের গলায় হাত দেয়। এসময় তার ঘুম ভেঙে গেলে তিনি চিৎকার করলে অজ্ঞাত ওই ব্যক্তি তার গলা চেপে শ্বাস রোধ করে তাকে হত্যা চেষ্টা করেন। এসময় তার মেয়ে হাবিবা আক্তার ঘুম ভেঙে গেলে সে চিৎকার করলে ওই ব্যক্তি পালিয়ে যায়। চলে যাওয়ার সময় অজ্ঞাত ব্যক্তি তার গামছা ফেলে চলে যায়। পরবর্তীতে আশেপাশের লোকজন এসে পড়লে দেখা যায় বৃষ্টির কারণে অজ্ঞাত ব্যক্তির পায়ের ছাপ রয়ে গেছে জানালাসহ ঘরের মধ্যে। ঘরের সামনের উঠোনে চার পাঁচ ব্যক্তির পায়ের ছাপ রয়ে গেছে। থানায় অভিযোগ কারী ওই নারী বলেন, আমার ঘরে যেহেতু সে চুরি করে নাই, সেহেতু তার উদ্দেশ্য ছিল অন্যকিছু। সে আমার গলায় হাত দিয়েছে। ঘরে আমার বড় মেয়ে ও ছোট মেয়ে আমার সাথে থাকে। বাড়িতে কোনো পুরুষ মানুষ নাই। এখন আতঙ্কে আমার ঘুম হয় না। আমার বড় মেয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থী আতঙ্কে আমার মেয়ে পড়াশুনা করতে পারে না। গত রাতে ছয় বছরের ছোট মেয়ে আদিবা ঘুমের ভেতর চিৎকার করে উঠছে। আর ঘুমোতে পারেনি। আমরাও আতঙ্কে ঘুমোতে পারি না। থানা পুলিশ যদি আমাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করত তাহলে শান্তিতে ঘুমোতে পারতাম এ সময় ভুক্তভোগীর বড় মেয়ে হাবিবা আক্তার বলেন রাত আনুমানিক তিনটার দিকে আমাদের ঘরে জানালা ভেঙ্গে এক ব্যক্তি ঘরের মধ্যে ঢুকে তারপর আমার মায়ের গলায় হাত দেয় আমার মা কেডা কেডা বললে আমার ঘুম ভেঙ্গে যায় আমি চিৎকার দিলে আশেপাশের লোকজন আসতে আসতে ওই লোক ঘরের মধ্যে গামছা ফেলে দৌড়ে পালিয়ে যায় তখন আমি দৌড় দিয়ে আমাদের ঘরের দরজার সামনে গেলে দেখি ওই ব্যক্তির পিছনে আরো ৩-৪ জন দৌড় দিয়ে চলে যায় আমি বর্তমানে এসএসসি পরীক্ষার্থী আমি ভয়ে রাতের বেলায় পড়াশোনা করতে পারি না আমি এবং আমার মা ও ছোট বোন খুবই আতঙ্কে আছি। ভয়ে রাতে আমরা ঘুমাতে পারিনা। ভূক্তভোগী ওই পরিবারে একমাত্র পুরুষ সদস্য ইয়াছিন আরাফাত বলেন, আমার বাবা নেই। পরিবারে একমাত্র উপার্জন করি আমি। একদিন কাজ না করলে আমার পরিবার অর্থ সংকটে পড়ে। ঘটনা শোনার পর ঢাকা থেকে বাড়িতে এসে বসে রয়েছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যদি আমার পরিবারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা করত তাহলে নিশ্চিন্তে ঢাকা যেতে পারতাম। আমি চাই পুলিশ ও গোয়েন্দারা ওই অজ্ঞাত ব্যক্তিকে চিহ্নিত করুক। আমার পরিবার নিরাপদ থাকুক। এবিষয়ে নড়িয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, আমি খোঁজ খবর নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করব।