
শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে অপহরণ করে তিন দিন আটকে রেখে পাঁচজন মিলে গণধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় নড়িয়া থানায় মামলা দায়ের করার পর শনিবার (১৩ এপ্রিল) রাতে অভিযুক্তদের মধ্যে চারজনকে পুলিশ আটক করেছে। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী বর্তমানে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
আটককৃতরা হলেন উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের পাঁচগাও গ্রামের মৃত লালু সরদারের ছেলে ইব্রাহিম সরদার দুদুল (২০), একই গ্রামের আলম মাঝির ছেলে তুষার মাঝি (২২), সুরেশ^র গ্রামের আলম হাওলাদারের ছেলে মোঃ নাহিদ হাওলাদার (১৯) ও তাদের বন্ধু শাকিব হোসেন।
মামলা সুত্রে জানাযায়, ভুক্তভোগীর বাড়ি নড়িয়া উপজেলার ডিঙ্গামানিক ইউনিয়নে। গত বৃহস্পতিবার ঈদের দিন সন্ধায় চাচাতো ভাইয়ের সঙ্গে ঘোরাঘুরি শেষে উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের পাঁচগাও গ্রামে নানি বাড়িতে যাচ্ছিলো ভুক্তভোগী ওই কিশোরী। পথে চন্ডিপুর এলাকার ভিআইপি মোড় থেকে ইব্রাহিম সরদার দুদুল ও তুষার মাঝি ভুক্তভোগীর মুখ চেপে ধরে তাকে অপহরণ করে। পরে ভুক্তভোগীকে একটি অটোতে উঠিয়ে নিয়ে সুরেশ^র দরবার শরীফের একটি পরিত্যাক্ত ঘরে আটকে রাখে। বৃহস্পতিবার রাতে ও শুক্রবার সারাদিন ওই পরিত্যাক্ত ঘরটিতে ইব্রাহিম সরদার দুদুল ও তুষার মাঝি ভুক্তভোগীকে একাধিকবার পালাক্রমে ধর্ষন করে। গতকাল শনিবার সকালে নাহিদ হাওলাদার, শাকিব সহ অজ্ঞাত আরও একজন সেখানে যায়। পরে তারা সবাই মিলে ভুক্তভোগীকে পালাক্রমে ধর্ষন করে। পরে দুপুর বারোটার দিকে ভুক্তভোগী কিশোরী অসুস্থ হয়ে গেলে ইব্রাহিম সরদার দুদুল তাকে সুরেশ্বর দরবার শরীফের সামনে থেকে অটোতে তুলে দেয় এবং এঘটনায় কাউকে না জানানোর হুমকি দেয়। বাড়ি ফিরে ভুক্তভোগী তার বোনদের কাছে ঘটনা খুলে বললে তাঁরা তাকে নড়িয়া থানায় নিয়ে যান। নড়িয়া থানার পুলিশ রাতেই তাকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। রোববার দুপুরে সদর হাসপাতালের এক নারী চিকিৎসক ওই ছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষা করেন।
এ ঘটনায় শনিবার ছাত্রীর বড় বোন বাদী হয়ে পাঁচজনের বিরুদ্ধে অপহরণ ও দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে নড়িয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন। পুলিশ ওই মামলার আসামি ইব্রাহিম সরদার দুদুল, তুসার মাঝি, শাকিব ও নাহিদ হাওলাদারকে আটক করেছে।
ভুক্তভোগী কিশোরী বলেন, ‘ঈদের দিন হেঁটে নানার বাড়িতে যাচ্ছিলাম। তখন দুদুল ও তুসার মাঝি আমাকে মুখ চেপে ধরে অটোরিকশায় সুরেশ্বর দরবার শরিফের কাছে একটি ঘরে নিয়ে আটকে রাখে। একপর্যায়ে তারা আমাকে পুড়িয়ে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করেছে। শনিবার সকালে আরও তিনজন আমাকে ধর্ষণ করে। আমি অসুস্থ হয়ে পড়লে একটি অটোরিকশায় আমাকে পাঠিয়ে দেয়।’
এ বিষয়ে ওই কিশোরীর বড় বোন বলেন, ‘আমার বাবা নেই। আমরা ৭ বোন মাকে নিয়ে থাকি। পাষন্ডরা পশুর মতো আমার ছোট বোনটাকে নির্যাতন করেছে। আমি ওদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি চাই।’
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক লিমিয়া সাদিনা বলেন, ‘ওই ছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়েছে। ডাক্তারি পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়া গেলে ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।’
নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। ওই মামলার এজাহারভুক্ত আসামিদের মধ্যে চারজনকে আটক করা হয়েছে। আসামীরা স্বীকারোক্তীমূলক জবানবন্দী দিয়েছে।’
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ৪ | |||
৫ | ৬ | ৭ | ৮ | ৯ | ১০ | ১১ |
১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮ |
১৯ | ২০ | ২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ | ২৫ |
২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ | ৩০ | ৩১ |