
নড়িয়া উপজেলার ভোজেশ্বর ইউনিয়ন ভুমি সহকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। উক্ত ভুমি কর্মকর্তা নামজারি, নামপত্তন ও খাজনার রশিদ দেয়ার ক্ষেত্রে নির্ধারিত ফি এর চেয়ে শত গুন টাকা আদায় করছে বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগীরা। টাকা ছাড়া কোন কাজই হয় না এ অফিসে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। এ অভিযোগ বিষয়ে ভুমি কর্মকর্তা অস্বীকার করেছেন।
ভুক্তভোগী তোফাজ্জল হোসেন খান ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ভোজেশ্বর ইউনিয়ন ভুমি সহকারী কর্মকর্তা মোঃ আবদুস সালাম খান দীর্ঘ প্রায় দু বছর যাবত ভোজেশ্বর ইউনিয়ন ভুমি অফিসে যোগদান করেছেন। এখানে তিনি যোগদান করার পর থেকে এ অফিসের আওতায় ভোজেশ্বর, বিঝারী, জপসা ও শরীয়তপুর সদর উপজেলার পালং ইউনিয়নের ২টি ওয়ার্ড আটিপাড়া মৌজার শত শত জমির মালিকগন নামজারি, নামপত্তন ( মিউটেশন) ও খাজনার রশিদ দেন। আর এসব আবেদন জমা দেয়ার পর উক্ত ভুমি সহকারী কর্মকর্তা আবদুস সালাম খান নানা ত্রুটির অজুহাতে লাখ লাখ টাকা ঘুষ দাবী করে। খাজনার টাকা জমা দিতে গেলে রশিদে উল্লেখিত টাকার বাইরে ও অতিরিক্ত টাকা আদায় করে থাকে। ঘুষের টাকা না দিলে ফাইল ছুড়ে ফেলে দেয় এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এ ছাড়ারও এ ভুমি অফিসের অধীনে কৃতিনাশা নদী ও আশে পাশের হাওড় ও বাওড়ে অবৈধ ড্রেজারের অনুমতি দিয়ে সে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। অনেক সময় মোটা অংকের টাকা দিয়েও মাসের পর মাস মিউটেশন পাওয়ার জন্য তার পিছনে ঘুরতে হচ্ছে। গত ১৮ মার্চ শরীয়তপুর সদর উপজেলার আটিপাড়া গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন খান ৩৫ নং আচুড়া মৌজার ৯৩নং দাগের ৬২ শতাংশ জমি মিউটেশন করার জন্য আবেদন নিয়ে ভোজেশ্বর ইউনিয়নের ভুমি অফিসে যান। সেখানে কর্মরত ভুমি সহকারী কর্মকর্তা আবদুস সালাম খান তার কাছে মিউটেশন বাবদ ২ লাখ টাকা ঘুষ দাবী করে। এত টাকা দিতে অস্বীকার করায় ভুমি সহকারী কর্মকর্তা তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে তার আবেদন পত্র খানা ছুড়ে ফেলে দেয়। অনেক অননয় বিনয় করার পরেও সে তার কাজটি করে না দিয়ে অফিস থেকে তাকে তাড়িয়ে দেয়। পরে নড়িয়া উপজেলা ভুমি কর্মকর্তার কার্যালয়ের সার্ভেয়ারের কাছে জমা দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী তোফাজ্জল হোসেন খান ও বাবুল হোসে খান জেলা প্রশাসক শরীয়তপুরের বরাবরে লিখিত ভাবে অভিযোগ দাখিল করেছেন।
ভুক্তভোগী বাবুল খান বলেন, মিউটেশনের জন্য ভোজেশ্বর ইউনিয়ন ভুমি অফিসের ভুমি সহকারী কর্মকর্তা আবদুস সালাম খানের কাছে গেলে, সে আমাদের কাছে ২ লাখ টাকা ঘুষ দাবী করে। টাকা দিতে অস্বীকার করলে সে আমাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং আমাদের কাগজপত্র ছুড়ে ফেলে দেয়। এক পর্যায়ে সে তার অফিস থেকে আমাদের কে তাড়িয়ে দেয়। আমরা পরবর্তীতে উপজেলা ভুমি অফিসের সার্ভেয়ারের কাছে আবেদন জমা দিয়েছি। এ সকল বিষয়ে জেলা প্রশাসক শরীয়তপুর বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছি।
ভোজেশ্বর ইউনিয়ন ভুমি সহকারী কর্মকর্তা মোঃ আবদুস সালাম খান বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। আমি কোন টাকা দাবী করিনি।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মামুন উল হাসান এর মোবাইলে বারবার যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।