Tuesday 1st July 2025
Tuesday 1st July 2025

আহমদ শফী ১০৪ বছর বয়সে না ফেরার দেশে চলে গেলেন

আহমদ শফী ১০৪ বছর বয়সে না ফেরার দেশে চলে গেলেন
হেফাজতে ইসলামের আমীর মাওলানা আহমদ শফী আর বেঁচে নেই। আজ শুক্রবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল চারটায় আল্লামা শফীকে পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ায় আজগর আলী হাসপাতালে নেয়ার পর পরই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নালিল্লাহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ১০৪ বছর।
আল্লামা শাহ আহমদ শফীর ছেলে আনাস মাদানী বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন- আব্বার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় আইসিইউ অবস্থায় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে আজ শুক্রবার সন্ধ্যার আগে ঢাকায় এনে আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন।
এর আগে তাঁর শারীরিক অবস্থা অবনতি হলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স যোগে তাকে ঢাকায় নেয়া হয়।
প্রায় শতবর্ষী আল্লামা আহমদ শফী দীর্ঘদিন যাবৎ বার্ধক্যজনিত দুর্বলতার পাশাপাশি ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও শ্বাসকষ্টে ভুগছেন।
এর আগে শুক্রবার বিকেলে চমেক হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, আল্লামা শফীর অবস্থা সঙ্কটাপন্ন। তার অক্সিজেন হার্টে মারাত্মক সমস্যা দেখা দেয়ার পাশাপাশি ফুসফুসে পানি জমেছে। শ্বাসকষ্টও বেড়েছে। তাই তার উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত ঢাকায় নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
শাহ আহমদ শফী ১৯১৬ সালে জন্ম গ্রহন করেন চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলায়। একজন বাংলাদেশি ইসলামি ব্যক্তিত্ব, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও দায়িত্বপ্রাপ্ত আমীর ছিলেন। তিনি একইসাথে বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের চেয়ারম্যান। তিনি দারুল উলুম মুঈনুল ইসলামের হাটহাজারীর মহাপরিচালক ছিলেন।
জানাগেছে, তার প্রতিষ্ঠিত হাটহাজারী দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসায় ছাত্র বিক্ষোভের মুখে অবরুদ্ধ অবস্থায় গতকাল অসুস্থ হয়ে পড়ায় আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মাদ্রাসার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেয়ার পর বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে আল্লামা শফী অসুস্থ হয়ে পড়েন। অসুস্থতা বেড়ে যাওয়ায় তিনি হাসপাতাল যেতে চাইলেও তাকে আটকে রাখে আন্দোলনকারীরা।
রাত ১২ টার দিকে মাদ্রাসার প্রধান গেটের সামনে প্রায় আধাঘণ্টা আল্লামা শফীকে বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটি আটকে রেখেছিল আন্দোলনরত ছাত্ররা।
এর আগে হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালকের পদ থেকে স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন হেফাজত আমির শাইখুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী।
ঘোষণায় বলা হয়, মুহতামিম বা মহাপরিচালকের পদ থেকে সরে যাওয়ায় আল্লামা শফীকে সদরে মুহতামিম বা উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া বৈঠকে মাওলানা নুরুল ইসলাম কক্সবাজারিকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়ার পাশাপাশি মাওলানা আনাস মাদানীর বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত বহাল রাখা হয়।
এরপর রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ পুলিশ ও র‌্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা মাদ্রাসার সামনে থেকে সরে যায় এবং চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। পরে মাদ্রাসার বাইরে থাকা শিক্ষার্থীরা মাদ্রাসায় প্রবেশ করে।