
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৮ জানতে পারে যে, দীর্ঘদিন যাবৎ একটি আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারী চক্র ইতালিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে মোটা অংকের বেতনের চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে মানব পাচার করছে। উক্ত চক্রের সদস্যরা বাংলাদেশ, লিবিয়া ও ইতালিতে সমভাবে সক্রিয়। এদের শিকার মূলত মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের উঠতি বয়সের বেকার যুবকরা। বর্ণিত চক্রটি বাংলাদেশ থেকে প্রাথমিকভাবে যুবকদের লিবিয়ায় পাচার করে থাকে। তৎপরবর্তীতে লিবিয়ায় অবস্থানরত চক্রের সদস্যরা লিবিয়ার বন্দিশালায় তাদেরকে আটক রেখে বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে এবং উক্ত বন্দীদের নিকটাত্মীয়দের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা দাবী করে। টাকা প্রাপ্তি সাপেক্ষে তাদেরকে লিবিয়া হতে নৌকাযোগে অবৈধ পন্থায় ইতালিতে গমনের সুযোগ করে দেয়া হয়। ক্ষেত্র বিশেষে বন্দীপ্রতি উক্ত চক্রটি পাঁচ থেকে দশ লক্ষ টাকা পর্যন্ত মুক্তিপণ আদায় করে বলে র্যাব জানতে পারে।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ১৪ জুন রবিবার দুপুর ১২ টা ৩০ মিনিটে র্যাব-৮ এর একটি চৌকষ দল মাদারীপুর জেলার সদর থানাধীন ঘটকচর বাসস্ট্যান্ড এলাকা হতে জাকির মাতুব্বর (৬০), পিতাঃ মৃতঃ ইছাহাক মাতুব্বর, সাং-বাসুদেবপুর, থানাঃ রাজৈর, জেলাঃ মাদারীপুরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে উক্ত চক্রের সক্রিয় সদস্য বলে স্বীকার করেন এবং প্রাপ্ত গোপন তথ্য সমূহের সত্যতা পাওয়া যায়। ধৃত আসামী জাকির মাতুব্বর(৬০) তার এলাকায় দালাল চক্রের মূলহোতা জুলহাস সরদার(৪৫) এর সাথে যোগসাজসে অবৈধভাবে লিবিয়ায় বাংলাদেশ হতে বিভিন্ন উপায়ে মানব পাচার করে। জাকির মাতুব্বর বাংলাদেশ হতে লিবিয়ায় মানব পাচারের যাবতীয় আর্থিক লেনদেন ও লোক সংগ্রহের কাজ সম্পাদন করে। গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে মাদারীপুর জেলার রাজৈর থানার মামলা নং-১৯, তারিখঃ ৩১/৫/২০২০ খ্রিঃ, ধারাঃ মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন, ২০১২ এর ৭/৮/১০(১) তৎসহ ৩০২/৩৪ দঃবিঃ এবং পল্টন মডেল থানা, ডিএমপি, ঢাকার মামলা নং-০১, তারিখ-০২/৬/২০২০ খ্রিঃ, ধারা-মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন,২০১২ এর ৬/৭/৮/১০ তৎসহ ৩০২/৩২৬/৩৪ দঃবিঃ মামলা রেেয়ছে। আটককৃত আসামীকে মাদারীপুর জেলার রাজৈর থানায় হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সাম্প্রতিককালে মানব পাচার প্রতিরোধে র্যাব-৮, বরিশাল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। গত ২৮ মে ২০২০ইং তারিখে লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপলির দক্ষিণ শহর মিজদায় আন্তর্জাতিক মানব পাচার চক্র অভিবাসন প্রত্যাশিদেরকে অপহরণ করে মুক্তিপণ না পাওয়ায় ২৬ জন বাংলাদেশিসহ ৩০ জনকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে এবং ১১ জন বাংলাদেশিকে গুরুতর আহত করে। বিষয়টি র্যাব-৮ এর নজরে আসলে র্যাব-৮ এর অধীনে ১১ টি জেলার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সাথে সংশ্লিষ্ট মানব পাচারকারীদের তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করতঃ দ্রুত গ্রেফতারের লক্ষ্যে অভিযান পরিচালনা করে আসছে।
সাম্প্রতিককালে মানব পাচারের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উপর গভীর নজরদারী রাখা এবং প্রাপ্ত তথ্য উপাত্তের উপর ভিত্তি করে মানব পাচার চক্রের অন্যান্য সক্রিয় সদস্যদের গ্রেফতারে র্যাব-৮ এর অপারেশন তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ৪ | |||
৫ | ৬ | ৭ | ৮ | ৯ | ১০ | ১১ |
১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮ |
১৯ | ২০ | ২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ | ২৫ |
২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ | ৩০ | ৩১ |