
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দোহাই দিয়ে আর কোন সাংবাদিককে যেন হয়রানী করা না হয়। এ আইনটির যাতাকলে পড়ে চলমান করোনায় সারাদেশের বিপুল সংখ্যক সাংবাদিক কারাগারে রয়েছেন বলে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়। এছাড়াও বেশ কিছু সাংবাদিক পুলিশি হয়রাণী এড়াতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
দেশে করোনাকালে যে সকল সাংবাদিক মামলায় আসামি হয়েছেন তাদেরকে ঈদের আগে মুক্তি দেয়ার দাবি জানিয়েছেন বিএমএসএফ। যদি ব্যত্যয় ঘটে তবে ঈদের পর সারাদেশে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
সংগঠনটির সভাপতি শহীদুল ইসলাম পাইলট ও সাধারণ সম্পাদক আহমেদ আবু জাফর বলেন, এ সকল সাংবাদিকেরা চাল চুরি করতে নয় চাল চুরি ঠেকাতে, অনিয়ম, দূর্নীতি বন্ধে সংবাদ প্রচার করেছিলেন। এতেই যদি তাদের অপরাধ হয়ে থাকে তবেতো দেশে মিডিয়ার প্রয়োজন পরে না।
মিডিয়াগুলো বর্তমানে দূর্ণীতিবাজদের গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মিডিয়া দমনপিড়নের জন্য ডিজিটাল আইনসহ নানা ফন্দিফিকির করে যাচ্ছেন সরকারে লুকিয়ে থাকা দূর্ণীতিবাজ চক্র।
আইনটি প্রণয়নকালে দেশের সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে প্রতিবাদসহ বিএমএসএফ’র পক্ষ থেকে সংশোধন অর্থাৎ আইনটি দ্বারা সাংবাদিকদের হয়রানী না করার দাবি তোলা হয়েছিল। কিন্তু নতুন বোতলে পুরানো মদ ঢুকিয়ে ৫৭ ধারাকে ৩২ ধারায় রুপান্তরিত করেন। অংকে সংখ্যা কমিয়ে আনলেও বিষ যেন কমেনি। আইনটিকে কখনও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, কখনো সাইবার আইন, কখনো তথ্য প্রযুক্তি আইনের নামে সাংবাদিকদের দমনপিড়ন- হয়রানী করে যাচ্ছে। চৌকিদাররাও আজ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল আইনে মামলা করে হয়রানী করছে। অথচ এইসব মামলাগুলো আগে ৫০১/৫০০ ধারায় দায়ের হত। যা ছিল জামিনযোগ্য। আর ডিজিটাল এ মামলায় জামিন অযোগ্য।
বিশেষ কথা হচ্ছে, সাংবাদিকদের হয়রানীর উদ্দেশ্যেই কেবল যুদ্ধাপরাধীদের মত দেশে একটি মাত্র সাইবার আদালতের দ্বারা বিচার কাজ সম্পন্ন করা হচ্ছে। বর্তমানে ওই একটি আদালতে কয়েক হাজার মামলা চলমান রয়েছে। ওই মামলায় শতকরা ৬০-৭০ ভাগই সাংবাদিক। বাকি সব ভিন্ন পেশার মানুষ।
মূলকথা: সাংবাদিকরা জাতির বিবেক। আর তাদের বিচার যেন সব আদালতে নয়। তাই জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করেন। বিচারের জন্য একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ও সচিবের নেতৃত্বে এ কাউন্সিল গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু প্রেস কাউন্সিল আজ কাগুজে বাঘে পরিণত হয়েছে।