কষ্টার্জিত বেতনের টাকা থেকে পালং মডেল থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ আতিয়ার রহমান ৭০ উর্ধ্ব এক বৃদ্ধ ও তার বৃদ্ধা স্ত্রীকে আমৃত্যু সহায়তা করবেন বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। বিচার পেতে এসে পুলিশের এই উদার মনোভাব অসহায় ওই বৃদ্ধের হৃদয় ছুঁয়েছে। সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়ায় সেই পুলিশ অফিসারের জন্য প্রাণ খুলে মহান আল্লাহর দরবারে দোয়া করছেন বৃদ্ধ-বৃদ্ধা যুগল।
পুলিশ অফিসার মোহাম্মদ আতিয়ার রহমান বলেন, এক বৃদ্ধ পালং মডেল থানায় এসে অফিসার ইনচার্জের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগে লেখা ছিল তার দুই ছেলে মিলে চিকিৎসার কথা বলে ভুল বুঝিয়ে সকল সহায় সম্বল লিখে নেয়। পরে বাড়ি থেকে বের করে দেয় তাদের। অসহায় বৃদ্ধ হৃদরোগে আক্রান্ত ছিল। প্রতিদিন অনেক টাকার ঔষধ কিনতে হয় তার পরে টাকা বাঁচলে খাবার জোটে। উপায়ান্ত না দেখে বৃদ্ধ তার বৃদ্ধা স্ত্রীকে নিয়ে ইট ভাটায় কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। এখন শরীর কাজ দেখলে ভয় পায় তাই তেমন রোজগারও হয় না।
পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, অফিসার ইনচার্জ আমাকে বিষয়টি তদন্ত করতে নির্দেশ প্রদান করেন। আমি বৃদ্ধের সকল কথা শুনি। গেল আগস্টে আমার মা দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করেছেন। আমার বিদেহী মায়ের স্মরণে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি মাসিক বেতন থেকে প্রতি মাসে ওই বৃদ্ধাকে ১ হাজার করে টাকা প্রদানের। সিদ্ধান্ত শুনে বৃদ্ধ আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। আমাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলেন। আমার জন্য প্রাণ খুলে আল্লাহর দরবারে হাত তুলে মোনাজাত করেন। আমি বিত্তবানদের প্রতি আহবান করছি তারা যেন সমাজের অসহায় মানুষদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। তাহলে আমাদের পাশের মানুষগুলো একটু ভালো থাকতে পারেন।
৭০ উর্ধ্ব ওই বৃদ্ধার নাম আব্দুস সাত্তার শেখ। তিনি শরীয়তপুর সদর উপজেলার দক্ষিণ বিলাসখান গ্রামের বাসিন্দা। তার বড় ছেলে মোঃ জসিমে শেখ এবং ছোট ছেলে মোঃ রুবেল শেখ।