Monday 30th June 2025
Monday 30th June 2025

একেই বলে হুজুগে বাংগালী

একেই বলে হুজুগে বাংগালী

একেই বলে হুজুগে বাংগালী। মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেন এলাকায় ডাকাত ঢুকে পড়েছে এমন মাইকিং শুনে এলাকাবাসীর ঘুম হারাম হয়ে যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২১ এপ্রিল মঙ্গলবার দিবাগত গভীর রাতে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রায় প্রতিটি মসজিদের মাইকে এলাকায় ডাকাত ঢুকে পড়েছে এমন মাইকিংএ এলাকাবাসীর ঘুম ভেঙ্গে যায়।
রাত তখন প্রায় ১ থেকে ১ টা ৩০ মিনিট। হঠাৎ মাইকের আওয়াজ শুনে এলাকাবাসীর ঘুম ভেঙ্গে যায়। এ সময় জাজিরা উপজেলার জয়নগর, কেবল নগর, খোরাতলা, গঙ্গানগর, ছাব্বিশ পারা, মূলনা, লাউখোলাসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কোন এলাকায় ডাকাত ঢুকেছে, এমন সঠিক কোনো তথ্য না জানতে পারলেও, এলাকাবাসী ডাকাত মোকাবেলায় যার যার অবস্থান থেকে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিতে থাকে।
এ সময় এলাকাবাসী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র লাঠি-সোঠা, দা-কুড়াল, টেটাসহ ডাকাত মোকাবেলায় প্রস্তুত হয়ে থাকে।
কেউ কেউ বিষয়টি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে অবগত করলে, তাৎক্ষণিক ভাবে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ প্রশাসন মাঠে নেমে পড়ে এবং সন্দেহভাজন প্রতিটি এলাকায় পুলিশি টহল জোরদার করা হয়। তবে কোথায় বা কোন এলাকায় ডাকাত ঢুকেছে বা প্রথম কোন স্থান থেকে মাইকিং শুরু হয়েছে, খোঁজ নিয়ে তার সঠিক কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
মাইকিং করা কয়েকজন মসজিদের ইমামদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, পাশের মসজিদে মাইকিং শুনে তাৎক্ষণিক কিছু না বুঝে, আমরাও একই মাইকিং শুরু করি। আমাদের মাইকিং শুনে অন্য মসজিদে ও মাইকিং শুরু হয়। মূলত এভাবেই বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে।
সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুর সদরের কালিকাপুর ইউনিয়ন, চরনাচনা এলাকা, পাঁচখোলা ইউনিয়ন, টেকের হাটের কুনিয়া এলাকা বা এর আশ পাশে কোথাও ডাকাত ঢুকেছে এবং ডাকাত ধরা হয়েছে। তবে এসব এলাকার সংশ্লিষ্ট পুলিশ প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বিষয়টি নিছক গুজব বলে অভিমত প্রকাশ করেন। ডাকাত বা ডাকাতির কোন ঘটনার অস্তিত্ব তারা পায়নি।
মাদারীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ কামরুল ইসলাম ও শিবচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, গভীর রাতে জনসাধারণের শোরগোলসহ মসজিদের মাইকিংএ জানতে পারি এলাকায় ডাকাত পড়েছে। আমরা তাৎক্ষণিক পুলিশ ফোর্স পাঠিয়েছি। বিভিন্ন জায়গায় টহল দেয়া হয়েছে, কিন্তু কোথাও কোনো ডাকাতির সন্ধান পায়নি।
কোথাও ডাকাতি হয়েছে কেউ এমন অভিযোগ এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে দেয়নি। মূলত শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলা এলাকা থেকে মাইকিং হতে হতে এ পর্যন্ত এসেছে।
শরীয়তপুর সদর থানাধীন চিকন্দী ফাঁড়ি ইনচার্জ (আইসি) মোঃ আবু বক্কর বলেন, সংবাদ পেয়ে পুলিশ টহল জোরদার করা হয়েছে। ডাকাতি ঘটনার সঠিক কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। আশপাশের কোন জেলায় ডাকাতি হয়েছে এমন কোনো তথ্যও পাইনি। যতদূর জানতে পারলাম মাদারীপুরের কোন এক এলাকা থেকে যেন ডাকাতির মাইকিং হয়েছে, সে মাইকিং পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে।
জাজিরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আজহারুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি সম্পূর্ণ গুজব। কেউ আতঙ্কিত হবেন না। প্রশাসন সকল সময় তৎপর আছে।