Friday 19th April 2024
Friday 19th April 2024

Notice: Undefined index: top-menu-onoff-sm in /home/hongkarc/rudrabarta.net/wp-content/themes/newsuncode/lib/part/top-part.php on line 67

জাজিরায় ৫টি ইউনিয়নে ভাঙন, শতাধিক পরিবার গৃহহীন

জাজিরায় ৫টি ইউনিয়নে ভাঙন, শতাধিক পরিবার গৃহহীন

শরীয়তপুর জাজিরা উপজেলায় হঠাৎ করে ৫টি ইউনিয়নে দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন। পদ্মার ভাঙনে গত দুইমাসে শতাধিক পরিবার গৃহহীন হয়েছে। ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটছে আরও শতাধিক পরিবারের। ভাঙনের ফলে নিঃস্ব হচ্ছে শত শত মানুষ।

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে পদ্মার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে শরীয়তপুরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানি বৃদ্ধির পাশাপাশি নদী ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে। এর ফলে ভিটেবাড়ি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষ। বাড়িঘর নদী তীরবর্তী থেকে সরিয়ে নিচ্ছে। বিলীন হচ্ছে শত শত কৃষি জমি।

পূর্ব নাওডোবা, বিলাশপুর, পালেরচর, কুন্ডেরচর আর বড়কান্দি গ্রামে হঠাৎ আবার দেখা দিয়েছে পদ্মার তীব্র ভাঙন। গত কয়েক সপ্তাহে শতাধিক পরিবার নদী ভাঙনের শিকার হয়েছে। জাজিরায় পদ্মা তীরের শতাধিক পরিবারের ঠিকানা হয়েছে অন্যের জায়গায়।

স্থানীয় লোকজন জানান, দুই সপ্তাহ আগে পদ্মা নদীর পানি অস্বাভাবিক বেড়ে তীব্র ভাঙন শুরু হয় জাজিরায়। ভাঙনের শিকার হয় পূর্ব নাওডোবা, বিলাশপুর, পালেরচর, কুন্ডের ও বড়কান্দি ইউনিয়নের ১২ গ্রামের ১২০টি পরিবার। আতঙ্কে শতাধিক পরিবার এরই মধ্যে চলে গেছে অন্যত্র। হুমকিতে পড়েছে নদীর ১৪ কিলোমিটার এলাকায় বসবাসকারী কয়েক হাজার পরিবার। ভাঙন প্রতিরোধের দাবি জানিয়ে এলাকার মানুষ নানা কর্মসূচি পালন করছে।

সাহেব আলী মোল্লা, করিম সরদার, কাদির ব্যাপারীসহ অন্যান্য ইউনিয়ন বাসিন্দারা দৈনিক রুদ্রবার্তাকে বলেন, ভাঙন প্রতিরোধে কেউ উদ্যোগ নিচ্ছে না। আমরা রিলিফ চাই না, স্লিপ চাই না, নদী ভাঙন রোধে স্থায়ী সমাধান চাই।

ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত রবিউল ইসলাম দৈনিক রুদ্রবার্তাকে বলেন, বছরের পর বছর নদী ভাঙনে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত, কেউ দেখার নেই। আমরা অসহায়ভাবে বসবাস করছে। প্রতিদিনই ভাঙছে। কোথায় যাব জানি না। ত্রাণ চাই না, চাই বেড়িবাঁধ। ভাঙন রোধের দাবিতে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি দেব।’

পাতালিয়াকান্দি গ্রামের কৃষক সুমন মাঝি দৈনিক রুদ্রবার্তাকে বলেন, ‘আমার ৪ শতাংশ জমির পাট নদীর ভাঙনে শেষ। এহনও ভাঙতাছে। কৃষি কাজ করইরা খাই। এই জমি না থাকলে না খাইয়া মরতে অইব।’

জাজিরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এস এম রফিকুল ইসলাম দৈনিক রুদ্রবার্তাকে বলেন, গত কয়েক বছরের ভাঙনে ইউনিয়নের একটি ওয়ার্ডের ৮০ ভাগ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ওই ওয়ার্ডের পাতালিয়া কান্দি গ্রামের ১৩২ পরিবার নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম আহসান হাবিব দৈনিক রুদ্রবার্তাকে বলেন, এ বছর জাজিরায় ভাঙন বেড়েছে। শুরু থেকেই জরুরি ভিত্তিতে বালুভর্তি জিও বস্তা ফেলে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। স্থায়ীভাবে তীর রক্ষার জন্য প্রকল্প জমা দেয়া হয়েছে। প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন হলে জাজিরার ওই সব এলাকা ভাঙন থেকে স্থায়ীভাবে রক্ষা পাবে।

শরীয়তপুর জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সৈয়দ আজিম উদ্দিন দৈনিক রুদ্রবার্তাকে বলেন, আমরা নিয়মিত পানি ও নদী ভাঙন এলাকার মানুুষের খোঁজ-খবর রাখছি। নদী ভাঙন এলাকার মানুষদের প্রত্যক পরিবারকে নগদ ৫ হাজার টাকা, শুকনো খাবার দেয়া হয়েছে ও ২ বান্ডিল করে ঢেউটিন দেয়া হবে। এছাড়া আমাদের কাছে ৮০ মেট্রিকটন চাল ও নগদ ১০ লক্ষ টাকা মজুদ আছে।