
দুর্যোগ মোকাবিলায় বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বে শিক্ষকের ভূমিকা পালন করছেন বলে উল্লেখ করেছেন পানি সম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম এমপি ।
মঙ্গলবার ২ নভেম্বর সন্ধ্যায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে কৃষি প্রকৌশল বিভাগ, আইইবি আয়োজিত ‘টেকসই কৃষি উন্নয়নের জন্য বর্জ্য পানি চিকিৎসা এবং ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
উপমন্ত্রী বলেন, করোনাকালে বিশ্ব যখন হিমশিম খাচ্ছে, তখন বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা এবং জীবন-জীবিকা সচল রাখতে নেতৃত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তার দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে একটি মানুষও না খেয়ে মারা যায়নি। সে কারণেই তিনি দুর্যোগ মোকাবিলায় বিশ্বে যথাযথ শিক্ষকের ভূমিকা পালন করছেন। আগামী প্রজন্মের বাসযোগ্য বাংলাদেশ গড়তে প্রধানমন্ত্রী সারাদেশে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন।
এনামুল হক শামীম আরও বলেন, বন্যা কৃষিখাতের জন্য হুমকিস্বরূপ। বন্যা সমস্যার স্থায়ী সমাধানে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নির্দেশনায় শতবর্ষী ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ বাস্তবায়ন হচ্ছে। এতে বৈশ্বিক জলবায়ুর নেতিবাচক প্রভাব (নদীভাঙন, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস) থেকে বাংলাদেশ স্থায়ীভাবে রক্ষা পাবে। ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ এ ৮০টি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, যার ৮০ শতাংশ প্রকল্প পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করবে।
তিনি বলেন, বর্তমানে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ২০টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এছাড়া পানিপ্রবাহ অব্যাহত রাখতে নিয়মিত দেশের নদ-নদীরসমূহ ক্যাপিটাল ড্রেজিং, মেইনটেনেন্স ড্রেজিং, নদীতীর ভাঙনরোধ, ভূমি পুনরুদ্ধার, হাওর ও জলাভূমি উন্নয়নে কাজ করছে। এতে পানির ধারা অব্যাহত থাকার পাশাপাশি দূষণও কমবে।
উপমন্ত্রী বলেন, স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে কপ২৬ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রায়ই বাংলাদেশকে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের প্রথম শিকার হিসেবে উল্লেখ করা হয়। দুর্বলতা এবং সম্পদের সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও আমরা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় দৃষ্টান্তমূলক উদ্যোগ নিয়েছি। কম কার্বন নিঃসরণের পথ অনুসরণ করে ‘জলবায়ু দুর্বলতাগুলোকে’ ‘জলবায়ু সমৃদ্ধিতে’ রূপান্তর করতে বাংলাদেশের ‘মুজিব ক্লাইমেট প্রসপারিটি প্ল্যান’ গ্রহণের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
এনামুল হক শামীম জানান, এছাড়া সিভিএফ এবং কমনওয়েলথের মধ্যে কার্যকর সহযোগিতার জন্য ছয়টি সুপারিশ উপস্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। জলবায়ু খাতে বিশ্বের ধনী দেশগুলোকে অপেক্ষাকৃত গরিব দেশগুলোর জন্য ৬০ শতাংশ বাজেট বরাদ্দ দেওয়ারও দাবি জানিয়েছেন তিনি।
আইইবির কৃষি প্রকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. মোয়াজ্জেম হুসেন ভূঞার সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর, আইইবি প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. নূরুল হুদা, ভাইস প্রেসিডেন্ট (এইচআরডি) ইঞ্জিনিয়ার মো. নুরুজ্জামান।
এতে বক্তব্য রাখেন বিএডিসির সাবেক প্রধান প্রকৌশলী ও আইডব্লিউএমের সেচ বিশেষজ্ঞ বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মো. আবুল কাশেম মিয়া, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (প্রাণিজসম্পদ বিভাগ) পরিচালক-সদস্য ড. ইঞ্জিনিয়ার নাজমুল নাহার করিম, সিজিআইএসের পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মোতালেব হোসেন সরকার, আইইবি সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. শাহাদাৎ হোসেন (শীবলু), আইইবির কৃষি প্রকৌশল বিভাগের ভাইস-চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. শফিকুল ইসলাম শেখ।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আইইবির কৃষি প্রকৌশল বিভাগের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. মিছবাহুজ্জামান চন্দন।