Tuesday 1st July 2025
Tuesday 1st July 2025

ঘাতক ক্যান্সার সেই শিশু জিহাদুলের জীবন কেড়ে নিল

ঘাতক ক্যান্সার সেই শিশু জিহাদুলের জীবন কেড়ে নিল

মরণব্যাধি ক্যান্সারের কাছে হেরে গেল তিন বছর বয়সী শিশু জিহাদুল ইসলামের জীবন। ৪ জুলাই বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টা ৪ মিনিটে শরীয়তপুর পৌরসভার স্বর্ণঘোষ গ্রামের পিত্রালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জিহাদুল শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করে। গত ডিসেম্বর থেকে শিশু জিহাদুলের এই মরণ ব্যাধি ধরা পড়ে। সেই থেকে সাংবাদিক পিতা ইয়াকুব বেপারী দেশ-বিদেশে ছেলের চিকিৎসা করায়। এক পর্যায়ে ছেলের চিকিৎসার জন্য সমাজের বিত্তবানদের প্রতি আর্থিক সহায়তার হাতও বাড়ায় জিহাদুলের পিতা। অনেকে শিশু জিহাদুলের চিকিৎসার জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। তবুও শেষ রক্ষা হয়নি জিহাদুলের।
জিহাদুল ইসলাম শরীয়তপুর পৌরসভার স্বর্ণঘোষ গ্রামের ইয়াকুব বেপারি ও জান্নাতুন আক্তার দম্পতির একমাত্র সন্তান ছিল। ইয়াকুব বেপারী স্থানীয় দৈনিক রুদ্রবার্তা পত্রিকার সাবেক ফটো সাংবাদিক।
ইয়াকুব বেপারি জানান, ২০১৬ সালের ২০ ডিসেম্বর হাম এর প্রতিষেধক টিকা দেয়ার পর জিহাদুলের ডান পায়ের রান ফুলে যন্ত্রণা হতে থাকে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে নেয়া হলে তারা জিহাদুলকে ঢাকা শিশু হাসপাতালে দেখানোর পরামর্শ দেন। পরে জিহাদুকে ঢাকা শিশু হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ এবং পঙ্গু হাসপাতালের চিকিৎসকদের দেখান। চিকিৎসকদের পরীক্ষায় জিহাদুলের রানে ক্যান্সার ধরা পড়ে। ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালে জিহাদুলের বায়োপসি করানোর পর চিকিৎসকরা জানান রানে অপারেশন করলে ক্যান্সার পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পরে দেশীয় চিকিৎসকের পরামর্শে গত ১৩ জানুয়ারি জিহাদুলকে ভারতের ভেলর সিএমসি হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডাক্তার লেনি গ্রেস ম্যাথিয়ু জিহাদুলের চিকিৎসা করেন। চিকিৎসাকালীন সময়ে চিকিৎসক জানান, জিহাদুলকে ১৫ মাস মেয়াদী চিকিৎসা করালে ৬০ শতাংশ ভালো হওয়ার সম্ভাবনা আছে। ভারতে ১৫ মাস থাকা খাওয়া ও চিকিৎসা খরচ হবে প্রায় ১০ লাখ রূপি তার পরেও রোগ নিরাময়ের কোন নিশ্বায়তা না পেয়ে ছেলেকে নিয়ে ইয়াকুব বেপারী শরীয়তপুরে ফিরে আসে।
প্রায় ৪ মাস বাড়িতে রেখে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা চলে জিহাদুলের। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) বেলা ১১ টায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করে জিহাদুল। বাদ যোহর বড়াইল নূরানী মাদরাসা মাঠে জানাজা শেষে বড়াইল গণকবরস্থানে জিহাদুলের দাফন করা হয়েছে।