
শরীয়তপুর ফোরকানিয়া মোহম্মদীয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসা’র নাম মুছে দিয়ে স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসা বানানোর অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক, শিক্ষা অফিসার ও শিক্ষা অধিদপ্তরে মধ্য চরোসুন্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমান বেপারী একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এছাড়াও মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থান ও এলাকাবাসীর পক্ষে মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শরীয়তপুর সদর উপজেলার রুদ্রকর ইউনিয়নে মধ্য চরোসুন্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে ফোরকানিয়া মোহম্মদীয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসা, লিল্লাহ বোডিং, মসজিদ ও কবরস্থান। প্রতিষ্ঠানে ফোরকানিয়া মোহম্মদীয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসা, লিল্লাহ বোডিং। সতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসার নামে কোন প্রতিষ্ঠান নেই।
স্থানীয়রা জানান, এই গ্রামের ইউসুফ হাওলাদার ঝামেলা পাকাচ্ছে। দীর্ঘ ৪০ বছর যাবৎ সুনামের সহিত এই মাদ্রাসা পরিচালিত হয়ে আসছে।
অত্র গ্রামের মুরুব্বি হাজী আনোয়ার হোসেন তালুকদার উক্ত প্রতিষ্ঠানের জমি দাতা তিনি বলেন, এখানে হাফেজিয়া মাদ্রাসা খুলছি অনেক দিন আগে। এখন সতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসা খুলতে দেয়া যাবে না। সতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসার নামে কোন জমি নেই।
একই গ্রামের ডাঃ হাবিবুর রহমান (অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক) ও মসজিদ কমিটির সাধারন সম্পাদক তিনি বলেন। এখানে আগে এবতেদায়ী মাদ্রাসা ছিলো। এখানে আগে সতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসা করা হয়েছিল ১৯৮৪ সালে। তারা চালাতে পারে নাই। তখন আমরা হাফেজি মাদ্রাসা ও মক্তব চালিয়েছি। তরপর ২০১৪ সালে ফোরকানিয়া মোহম্মদীয়া মাদ্রাসা করেছি। এখন আরেকটি গ্রুপ ইউছুফ হাওলাদার আবার সতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা খুলতে চায়। এখানে এবতেদায়ী মাদ্রাসার কিছুই নেই। ইউসুফ হাওলাদার বরিশাল পিরোজপুর থাকে। গত বছর বিভিন্ন জায়গা থেকে শিক্ষার্থী দেখিয়ে পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছিল। এ নিয়ে ইউএনও অফিসে আলোচনায় বসেছিল। তার আপন ভাই, খালাতো, চাচাতো ও ভাগনীকে শিক্ষক বানিয়ে নিয়োগ দেখিয়েছে।
নুরে আলম বলেন, ইউছুফ হাওলাদার নিজের স্বার্থের জন্য নিজের ইচ্ছে মত এই কাজ করছে। সে এলাকার কাউকে জানায় নাই। এলাকার কাউকে শিক্ষক ও নেয় নাই। তাছাড়াও এই খানে ক্লাস করার মত মাদ্রাসার কোন জায়গা নাই, কোন ঘর নাই।
রুদ্রকর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান ঢালী বলেন, সতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২ নাম্বারি কাম কাজ করে। ইউসুফ হাওলাদার আমাকে বলে, আমি সভাপতি কোন কাগজ দেখায় না পত্র দেখায় না। পুরোটাই ২ নাম্বারি। ঐখানে একটা সরকারী প্রাইমারি স্কুল রয়েছে। এই স্কুলটাকে নষ্ট করার জন্য এই কাজ করছে। বিকেলে কয়টা পোলাপান ধরে এনে টুপিটাপি মাথায় দিয়ে বসিয়ে রাখে। ইউসুফ হওলাদার সে এই ঝামেলা করছে। কাগজপত্র নাই, কমিটি নাই আমাকে সভাপতি করে।
ইউছুফ হাওলাদের একটি কল রেকর্ড থেকে জানা যায়, সবার স্বাক্ষর নকল করে মাদ্রাসা কমিটি করেছে। প্রয়োজনে এমপি সাহেবের স্বাক্ষর নকল করবে বলে জানান।
এ বিষয়ে ইউসুফ হাওলাদার জমিসহ মাদ্রাসার কোন কাগজপত্র রেজিস্ট্রিকৃত জমির দলিলের সত্যায়িত কপি কিছুই দেখাতে পারে নাই।
এদিকে অপর পক্ষ ফোরকানিয়া মাদ্রাসার নামে রেকর্ড হয়েছে ১০৪ নং চরোসুন্দি মৌজার বিআরএস ৫ নং খতিয়ানের ৮৬৬, ৮৬৫, ৮৬৪ নং দাগে ১.০২ একর জমি বিআরএস জরীপে রয়েছে।
একই জায়গায় অবস্থিত ৯১ নং মধ্য চরোসুন্দি সরকারী প্রাথমিক বিদালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বলেন, এই সরকারী স্কুলটা নষ্ট করার জন্য সে এসব করছেন।
ইউসুফ হাওলাদার সতন্ত্র মাদ্রাসার নাম করে তার ভাই ইদ্রিস হাওলাদার ইলিয়াস হাওলাদার ও তার ভাগ্নে জাকিয়া ও তার খালাতো বোন লাইজু আক্তার এবং তার চাচাতো ভাই হাসেম হাওলাদারকে শিক্ষক সাজিয়ে উক্ত সতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসার অনুমোদন পাওয়ার জন্য বিভিন্ন দপ্তরে কাগজপত্র জমা দিয়েছে।
প্রকৃতপক্ষে উক্ত স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসার নামে কোন জমি নেই। তথাপিও ইউসুফ হাওলাদার চরোসুন্দি হাফেজিয়া মাদ্রাসার জমি দাগ খতিয়ান উল্লেখ করে উক্ত মাদ্রাসার জমি দখল ও মাদ্রাসার ক্ষতি সাধন করার চেষ্টা করছে।
এ বিষয়ে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এমারত জানান, আমরা সরেজমিনে গিয়ে দেখবো। কোন রকম অনিয়ম হলে ছাড় দেয়া হবে না। সব কিছু নিয়ম বিধিবিধান মেনেই হবে। আমাদের জেলা প্রশাসক মহোদয় সৎ ও ভালো লোক। তিনি কাউকে ছাড় দেন না। সরাসরি একশ্যানে যান। আমরা তার বাহিরে না। সব কিছু সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ ভাবে হবে।