
শরীয়তপুরে ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদ উল আযহা ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যে দিয়ে উদযাপিত হয়েছে। সোমবার (১২ আগষ্ট) সারাদেশের ন্যায় শরীয়তপুরেও ঈদের নামাজ ও পশু কোরবানীর মধ্য দিয়ে ঈদ উল আযহা উদযাপন করা হয়।
শরীয়তপুর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে সকাল সাড়ে ৭টায় অনুষ্ঠিত হয় ঈদের প্রথম জামায়াত। দ্বিতীয় জামায়াত অনুষ্ঠিত হয় সকাল সাড়ে ৮টায়। এছাড়া বিভিন্ন উপজেলা ঈদগাহ ময়দান ও জেলার বিভিন্ন ছোট-বড় অসংখ্য মসজিদে ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শরীয়তপুর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে সকাল সাড়ে ৭টায় অনুষ্ঠিত জামায়াতে ঈদের নামাজ আদায় করেন শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ইকবাল হোসেন অপু এমপি, জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের ও পৌর মেয়র রফিকুল ইসলাম কোতোয়াল। সকাল ৮টায় ভেদরগঞ্জ উপজেলার চরভাগা পাইকবাড়ি জামে মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম এমপি। সকাল ৮টায় শরীয়তপুর পুলিশ লাইন্স জামে মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করেন পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কামরুল হাসান। ডামুড্যা উপজেলার প্রধান ঈদগাহ ময়দান ডামুড্যা হামিদীয়া কামিল মাদ্রাসা মাঠে ঈদের দুটি জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সকাল সাড়ে ৮টায় প্রথম জামায়াতে পৌরমেয়র হুমায়ুন কবির বাচ্চু সহ উপজেলা প্রশাসনের কার্মকর্তা ও বিভিন্ন শ্রেনীপেশার মুসল্লি অংশ গ্রহন করেন। সকাল ৯টায় সেখানে দ্বিতীয় জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়। গোসাইরহাট উপজেলার প্রধান ঈদের জামায়াত সকাল সাড়ে ৮টায় শামসুর রহমান কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান ঢালী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন, গোসাইরহাট সার্কেল এসপি মোহাইমিনুল ইসলাম সহ প্রায় ১২ হাজার মুসল্লি ঈদের জামাতে অংশগ্রহণ করেন। ভেদরগঞ্জ উপজেলার প্রধান ঈদের জামায়াত সকাল সাড়ে ৭টায় অনুষ্ঠিত হয় উপজেলার গৈড্যা ফাজিল মাদ্রাসা মাঠে। সেখানে ঈদের নামাজে ভেদরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র হাজী আব্দুল মান্নান হাওলাদার সহ উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন। উপজেলার চরকুমারিয়া ইউনিয়ন জামে মসজিদ মাঠে সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত ঈদের নামাজে অংশগ্রহণ করেন ভেদরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির মোল্যা। সকাল ৮টায় নড়িয়া উপজেলার দক্ষিণ লোনসিং জামে মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করেন নড়িয়া পৌরসভার মেয়র শহীদুল ইসলাম বাবু রাড়ী। নড়িয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান একেএম ইসমাইল হক তার নিজ গ্রামের জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদের নামাজ আদায় করেন। জাজিরা উপজেলার প্রধান ঈদের জামায়াত পৌর ঈদগাহ মাঠে (সামসুল আলম ফাজিল মাদ্রাসা মাঠ) সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে পৌরসভার মেয়র ইউনুস বেপারী, উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তা সহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ঈদের নামাজে অংশগ্রহণ করেন। প্রতিটি ঈদের জামায়াতের পূর্বে দেওয়া বয়ানে কোরবানীর অন্তর্নিহিত তাৎপর্য তুলে ধরেন ইমাম সাহেবরা।
কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাতারবন্দী হয়ে সকল মুসল্লিরা একত্রে ৬ তাকবিরে ঈদ উল আযহার নামাজ আদায় করেন।
খুতবা শেষে দেশ ও দেশের মানুষের বিশেষ করে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত এবং মৃত্যুবরণকারীদের শান্তি কামনা করে মোনাজাতে অংশ নেন ধর্মপ্রাণ মানুষ। মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনাকালে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন অনেকে। ঈদ উল আযহার মোনাজাত শেষে একে অন্যের সাথে কোলাকুলি করে সবাই ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন মুসল্লিরা। নামায আদায় করতে শিশুরাও এসেছিল বড়দের হাত ধরে। ঈদের নামাযে অংশ নেয়ায় তাদেরও ছিল বাঁধভাঙা আনন্দ। নামাজ শেষে পশু কোরবানী ও কোরবানীর গোশত গরীবের মাঝে বিতরণ করেন ধর্ণাঢ্য মুসল্লিরা। ঈদ উল আযহা ত্যাগের, তাই ত্যাগের এই মহিমায় উদ্ভাসিত হয়ে দেশে যেন সব সময় শান্তি বজায় থাকে সে প্রত্যাশা সকলের।