সোমবার, ২রা অক্টোবর, ২০২৩ ইং, ১৭ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৬ই রবিউল-আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরী
সোমবার, ২রা অক্টোবর, ২০২৩ ইং

শরীয়তপুরে অবৈধ অনুমোদনে মাদরাসা করার অভিযোগ

শরীয়তপুরে অবৈধ অনুমোদনে মাদরাসা করার অভিযোগ

শরীয়তপুর সদর উপজেলার রুদ্রকর ইউনিয়নের মধ্যচরসুন্দি গ্রামে মোহামাদিয়া হাফেজিয়া ও ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসা নাম পরিবর্তন করে সতন্ত্র এবতেদায়ি মাদ্রাসা করার অভিযোগ উঠেছে চররোসুন্দি গ্রামের মওলানা ইউছুফ আলী হাওলাদারের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ রয়েছে, জাল স্বাক্ষর নিয়ে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে মওলানা ইউছুফ আলী হাওলাদার মাদরাসাটি অনুমোদন করেন এবং বিভিন্ন সময় সরকারী অনুদান এনে আত্মসাৎ করেন।
এ ব্যাপারে স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসার অনুমোদন না দেয়ার প্রসঙ্গে এলাকাবাসীর পক্ষে নজরুল তালুকদার নামের এক যুবক থানা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা শিক্ষা অফিসার এর কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
নজরুল তালুকদার বলেন, মওলানা ইউছুফ আলী হাওলাদার জাল স্বাক্ষর দিয়ে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে মাদরাসার অনুমোদন নেয়। তিনি বিভিন্ন সরকারি অনুদান আত্মসাৎ করেন। আমি তার প্রতিবাদ করায় আমার নামে মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলা দিয়ে হয়রানি করেন। এ নিয়ে দীর্ঘদিন এলাকায় দুই দলের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। আজ তদন্ত কর্মকর্তাদের সামনে সত্যটা বের হয়েছে। মওলানা ইউছুফ হাওলাদার শিক্ষা বার্তা নামের একটি অনলাইন পোর্টালে আমার সম্পর্কে মিথ্যা বানোয়াট তথ্য দিয়ে লিখেছে। সেখানে ডাক্তার হাবিবুর রহমান যে বক্তব্য দিয়েছে এটা সম্পূর্ন মিথ্যা তা আজ প্রমানিত হলো। আমি তার বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাহবুর রহমান শেখ চরসুন্দী স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা এর বর্তমান প্রেক্ষাপট সম্পর্কে তদন্তের নির্দেশে দেন।
বুধবার (২১ আগস্ট) উপজেলা শিক্ষা অফিসার শহীদ হোসেন ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে সরেজমিনে তদন্তে আসেন। তার সাথে ছিলেন, শরীয়তপুর সদর উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মো. মোহন মিয়া ও পালং মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ এর পক্ষে এএসআই শেখ নাছিম সহ আইন শৃঙ্খলা বিঘিœত হওয়ার আশংঙ্কায় সঙ্গীয় ৪ জন ফোর্স উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো: শহীদ হোসেন বলেন,স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসাটি ২৫ অক্টোবর ১৯৮৪ সালে অনুমোদন করান। মাদরাসার নামে দশমিক ৮১ শতাংশ জমি দেখানো হয়। ৪ জন শিক্ষক ছিলো। এই নামে সরকারী অনুমোদন পায়। ৯০ সাল পর্যন্ত এর কার্যক্রম ছিলো। সরকার সতন্ত্র মাদরাসার নামে নতুন করে আবেদন চাইলে ৮৪ সালে এটা অনুমোদন করান। জেলায় মাত্র ২ টি মাদরাসার এমপিও’র তালিকায় রয়েছে। এর মধ্যে চরসুন্দি একটি। তিনি উপস্থিত গণ্যমান্য ব্যক্তি ও এলাকাবাসীর কাছে জানতে চেয়ে হাত তুলতে বলেন। তখন উপস্থিত ৯ জন ব্যতিত বাকী সবাই স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসার বিপক্ষে হাত তুলেন। তিনি সবার সাথে কথা বলে বিষয়গুলো লিপিবদ্ধ করেন। সেই সাথে সাবাইকে বলেন, আমি ইউএনও মহাদয়ের নিকট প্রতিবেদন জমা দিবো। তিনি এর রায় দিবেন।
এলাকাবাসীর দাবী, কাগজপত্রে আছে চরসুন্দি স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসা। এখানে এই মাদরাসার নামে জায়গা নেই। কাগজে মধ্য চরসুন্দি উল্লেখ নেই। এই মাদরাসার নামে যেখানে জমি রয়েছে। সেই খানে থাক। আমরা এই মাদরাসা হোক এটা চাই। কিন্তু মোহামাদিয়া হাফেজিয়া ও ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসা নাম পরিবর্তন করে না।
রুদ্রকর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান ঢালী বলেন, মওলানা ইউছুফ হাওলাদার ইচ্ছা মতে কাগজপত্র তৈরি করে স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসা অনুমোদন করেন। তিনি সবার সম্মতিতে এটা করেন নাই। করলে এমনটা হতোনা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, মসজিদ ও দাখিল মাদ্রাসার সভাপতি ও জমিদাতা আব্দুস সালাম মাদবর (৬০), জমিদাতা শাজাহান তালুকদার (৫৫), মাদ্রাসার সাধারন সম্পাদক ডাঃ হাবিবুর রহমান সরদার (৬৫), হাফেজ মজিবর হাওলাদর (৫৫), গনি মাদবর (৫০), মো. ফজলে মাদবর (৭৫) সহ অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ।


error: Content is protected !!