মঙ্গলবার, ৩রা অক্টোবর, ২০২৩ ইং, ১৮ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৮ই রবিউল-আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরী
মঙ্গলবার, ৩রা অক্টোবর, ২০২৩ ইং

শরীয়তপুরে শারদীয় দূর্গোৎসবকে সামনে রেখে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎ শিল্পীরা

শরীয়তপুরে শারদীয় দূর্গোৎসবকে সামনে রেখে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎ শিল্পীরা

বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দূর্গাপুজা। আগামী ৩ অক্টোবর থেকে ৫ দিনব্যাপী সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজা শুরু হবে। আসন্ন শারদীয় দূর্গোৎসবকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছে শরীয়তপুরের মৃৎ শিল্পীরা। এ উৎসব উপলক্ষে শরীয়তপুর জেলায় এ বছর ৯২ টি মন্ডপে অনুষ্ঠিত হবে দূর্গা পূজা। তাই দূর্গা প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন শরীয়তপুর জেলার মৃৎ শিল্পীরা।
কাশফোটা শরতের শারদীয় দূর্গোৎসবকে পরিপূর্ন রূপ দিতেই মন্দির গুলোতে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। প্রতিমা শিল্পীর কল্পনায় দেবী দূর্গার অনিন্দ্যসুন্দর রূপ দিতে দিন রাত ভর চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। ইতিমধ্যে প্রতিমার কাঠামোর মাটির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এরপর শুরু হবে রং ও সাজসজ্জার কাজ। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসবকে ঘিরে হিন্দুপাড়া গুলোতে আগাম শারদীয় উৎসবের আমেজ বইছে। উচু-নিচুর বিভেদ ভুলে সমাজের সকল স্তরের মানুষকে একত্র করে মহা-সম্মেলন হয় বলে এ পূজাকে বলা হয় সার্বজনীন পূজা। আর শরৎকালে হয় বলে বলা হয় শারদীয় উৎসব।
দূর্গাপূজাকে সামনে রেখে শরীয়তপুর জেলার ৬ টি উপজেলার ৯২টি মন্ডপের পূজা উদযাপন কমিটি ব্যস্ত সময় পার করছে। কোন কোন মন্ডপে প্রতিমা তৈরির পাশাপাশি সাজসজ্জার প্রস্তুতিও চলছে। স্থানীয় কারিগর ছাড়াও বিভিন্ন স্থান থেকে কারিগররা এখানে এসে তৈরি করছে মাটির প্রতিমা। প্রতিটি পূজামন্ডপের জন্য তৈরি করা হচ্ছে দূর্গা, লক্ষী, সরস্বতী, কার্তিক, গনেশ, অসুর, সিংহ, মহিষ, পেচা, হাঁস, সর্পসহ প্রায় ১২ টি প্রতিমা।
হিন্দু সম্প্রদায়ের দূর্গতিনাশীনী দুর্গাদেবীকে বরণ করে নিতে মন্ডপে প্রতিমা তৈরির কাজ, সাজসজ্জার কাজ চলছে। ঢাক, ঢোল বাদ্যকাররা বাদ্যযন্ত্র ঠিকঠাক করে নিচ্ছে। মূর্তি গড়া শেষে রংতুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলা হবে প্রতিমা। দেবীকে স্বাগত জানাতে সর্বত্র আনন্দঘন পরিবেশ বিরাজ করছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের আবালবৃদ্ধ বনিতা নারী-পুরুষসহ সব বয়সী মানুষ এ সর্ব বৃহৎ শারদীয় উৎসবকে স্বার্থক করতে প্রহর গুনছেন। সব মিলিয়ে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে প্রতিটি পূজা মন্ডপে।
শরীয়তপুর জেলায় বিশেষ করে সদর উপজেলার কোটাপাড়া পাল বাড়ি এবং ভেদেরগঞ্জ উপজেলার কার্তিকপুর বেশ কয়েকটি পাল বাড়িতে প্রতিমা তৈরির কাজ করা হয়। তাছাড়া এই জেলার মৃৎ শিল্পীরা বাংলাদেশর বিভিন্ন জেলায় গিয়ে প্রতিমা তৈরি করে থাকেন।
মৃৎ শিল্পী রামকৃষ্ণ পাল বলেন, আর কয়েকদিন বাদেই শারদীয় দূর্গা পূজা। দূর্গাপূজাকে সামনে রেখে আমরা প্রতিমা তৈরীর কাজে খুব ব্যস্ত সময় পার করছি। আমাদের প্রতিমা তৈরীর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখন রং ও সাজসজ্জার কাজ চলছে।
শরীয়তপুরের জেলা পুলিশ সুপার আব্দল মোমেন বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্পৃতির দেশ। এখানে সকল ধর্মের মানুষ নির্বিঘেœ তাদের নিজ নিজ ধর্ম পালন করে থাকেন। সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব হচ্ছে শারদীয় দূর্গাপূজা। আর কিছুদিন বাদেই দূর্গাপূজা শুরু হবে। দূর্গাপূজা নির্বিঘœ ও শান্তিপূর্ণ করতে জেলা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পূজামন্ডপের নিরাপত্তায় পুলিশ, আনসার ও স্বেচ্ছাসেবী মোতায়েন থাকবে। দূর্গাপূজাকে ঘিরে কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পায়তারা করলে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না।


error: Content is protected !!