
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শরীয়তপুর সদর উপজেলার চিতলিয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষে কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছে। সোমবার (১৪ অক্টোবর) সকাল ৭টার দিকে সমিতির হাট ব্রীজ সংলগ্ন স্থানে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আাহতদের শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল ও মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহতদের মধ্যে জামাল খান (৪০), নেছার বেপারী (৩৫), মফেজ সরদার (৪৫), মজিবর সরদার (৫৫), ইমান ফরাজি (৩৫), জুলহাস খান (৫৫), খবির বাঘা (৫০), রেহানা বেগম (৩৫), স্বর্ণা (১৪), দবির খান (৪০) ও ওমর খানকে (৭০) শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অপর পক্ষের শফিক বেপারী (৩০), মান্নান বেপারী (৫০), এসকান খান (৪০), হবি হাওলাদার (৩৮), মজিবর হাওলাদার (৭০) দৌলত খান (৬৫), সুজন হাওলাদার (২৫) সুমন হাওলাদার (৩০) হাবিব হাওলাদার (৩৫), বাদশা সরদার (৪০), জিয়া হাওলাদারকে (৩৮) মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও চিতলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম হাওলাদার ও চিতলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মাস্টার হারুন হাওলাদারের পক্ষের লোকজনের মধ্যে গত সংসদ নির্বাচনের পর থেকে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এই বিরোধের জের ধরে দু’পক্ষের মধ্যে একাধিকবার হামলা-মামলার ঘটনা ঘটেছে। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার (১৪ অক্টোবর) সকালে স্থানীয় সমিতির হাটে মাছ কেনাকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের লোকজন কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে এক পক্ষ আরেক পক্ষের ওপর হামলা চালায় এবং ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয়েছে। আব্দুস সালাম হাওলাদার পক্ষের আহতদের উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতাল ও মাষ্টার হারুন হাওলাদারের পক্ষের আহতদের উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে পালং মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষ মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
মাস্টার হারুন হাওলাদর বলেন, গতকাল একটি মামলায় সালাম হাওলাদারের লোকজন জামিনে বেড়িয়ে এসে রাতের বেলা সবাই এক জায়গায় জড়ো হয়ে খিচুড়ি খেয়ে আনন্দ ফূর্তি করে এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী আজকে সকালে তারা আমাদের পক্ষের লোকজন যারাই সমিতির হাটে গিয়েছে তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। এতে আমাদের পক্ষের প্রায় ১৫ জন আহত হয়েছে। আমরা এ হামলার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই এবং দোষিদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানাই।
আব্দুস সালাম হাওলাদার বলেন, আজকে সকাল বেলা আমার সমর্থকরা মাছ কেনার জন্য সমিতির হাটে গেলে হারুন হাওলাদারের লোকজন পরিকল্পিত ভাবে আমাদের লোকদের ওপর হামলা করে। এতে আমাদের প্রায় ১৩ জনকে উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় আমরা মামলা দায়ের করবো। হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম উদ্দিন বলেন, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে চিতলিয়া ইউনিয়নে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ঘের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের বেশকিছু লোক আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এ ঘটনা তদন্ত চলছে। অভিযোগের ভিত্তিতে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।