সোমবার, ২রা অক্টোবর, ২০২৩ ইং, ১৭ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৬ই রবিউল-আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরী
সোমবার, ২রা অক্টোবর, ২০২৩ ইং

শরীয়তপুরে মাদ্রাসা শিক্ষিকা ফাতিমার খুনিদের বিচার দাবি

শরীয়তপুরে মাদ্রাসা শিক্ষিকা ফাতিমার খুনিদের বিচার দাবি

শরীয়তপুরে মাদ্রাসা শিক্ষিকা ফাতিমা বেগম (মালা) (৪৫) নৃশংস হত্যাকান্ডে জড়িত প্রতিবেশী যুবক হান্নান মাদবরকে (৩০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। হান্নান ফাতিমা হত্যাকা-ের সাথে জড়িত বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে। বুধবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন।

এদিকে মাদ্রসা শিক্ষিকা ফাতিমা বেগম নৃশংস হত্যাকা-ে জড়িত ঘাতদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

বুধবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ১১টায় শরীয়তপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্ত্বরে বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদাররেছীন শরীয়তপুর জেলা শাখা, সদর উপজেলা শাখা ও বিনোদপুর ইউনিয়নবাসীর ব্যানারে মানববন্ধ কর্মসুচি পালন করা হয়। মানববন্ধনে বিভিন্ন মাদ্রাসার শিক্ষক শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ অংশ গ্রহণ করেন।

মানববন্ধনে শরীয়তপুর ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মিজানুর রহমান ও আংগারিয়া উসমানিয়া কওয়ামিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা আবু বকর ছিদ্দিক তাদের বক্তব্যে ঘাতকদের অভিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

চোরের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত শিক্ষিকা ফাতিমা বেগম সোমবার (১৪ অক্টোবর) বেলা ১০টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

আর আগে গত শনিবার (১২ অক্টোবর) দিনগত রাত আনুমানিক ১টার দিকে ঘরের জানালা ভেঙ্গে মুখোশ পড়া কয়েকজন চোর ঘরে ঢুকে আলমাড়ি ভাঙ্গার চেষ্টা করে। এ সময় ফাতিমা বেগম ও তার ছেলে জুবায়ের টের পেয়ে চোরদের ধরার চেষ্টা করে। এ সময় চোরেরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি মা-ছেলেকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যায়। পরে ডাকচিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাদেরকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে সেখানে চকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার (১৪ অক্টোবর) ফাতিমা বেগম মারা যান।

ফাতেমা বেগম শরীয়তপুর সদর উপজেলার বিনোদপুর খালাসীকান্দি গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী নাসির মাদবরের স্ত্রী এবং স্থানীয় বগাদী দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষিকা ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন জানান, কিছুদিন পূর্বে স্বামী নাসির মাদবর বিদেশ টাকা পাঠায়। সেই টাকা ব্যাংক থেকে তুলে ঘরে রাখে ফাতিমা বেগম। প্রতিবেশী ভাসুর আবুল মাদবরের ছেলে হান্নান মাদবর সহ এলাকার ৪ থেকে ৫ জন মিলে ওই টাকা চুরি করার জন্য রাতের বেলা ফাতিমা বেগমের ঘরে ঢুকে। এ সময় ফাতিমা বেগম টের পেয়ে চোরদের ধরতে গেলে তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে উপর্যপুরি কুপিয়ে ফাতিমা বেগম ও তার ছেলে জুবায়েরকে গুরুতর জখম করে। পরে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অস্থায় ফাতেমা বেগম মারা যায়। এ ঘটনায় অজ্ঞাতদের আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই মামলায় প্রতিবেশী ভাসুর আবুল মাদবরের ছেলে হান্নান মাদবরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে এই হত্যাকা-ের সাথে জড়িত বলে স্বীকার করেছে। হত্যাকা-ে জড়িত বাকি আসামীদেরকেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।


error: Content is protected !!