
মাদরাসা শিক্ষক ও প্রবাসীর স্ত্রী ফাতেমা বেগম মালা হত্যার সাথে জড়িত সন্দেহে তারই ভাসুরপুত্র হান্নান মাদবরকে গ্রেফতার করেছে পালং মডেল থানা পুলিশ। এ বিষয়ে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং এর মাধ্যম্যে হত্যাকারী গ্রেফতারের বিষয় পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের অবহিত করেন। এ সময় পুলিশ সুপার জানান, এই হত্যা কান্ডের কোন ক্লু আমাদের কাছে ছিল না। সূত্রমতে জানতে পারি নিহতের স্বামী নাসির মাদবর মালয়েশিয়া থেকে কিছুদিন পূর্বে কিছু টাকা পাঠায়। সেই টাকার বিষয়টি নিকটবর্তী লোকেরা জানতে পারে। টাকা চুরি করার জন্যই ঘটনার রাতে দুইজন মালা বেগমের ঘরে প্রবেশ করে। এ সময় বাহিরেও আরো লোকজন দাড়িয়ে ছিল বলে জানা যায়। তারা টাকা নেয়ার জন্য আলমারী খুলতে গেলে মালা বেগম তাদের ধরে ফেলে। তখন চোরেরা বাচার জন্য মালা বেগম ও তার দুই ছেলেকে উপর্যপরি আঘাত করে। এই সূত্র ধরে সন্দেহ ভাজন নিহতের ভাসুরের ছেলে হান্নানকে পুলিশ আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি অপরাধের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তার দেয়া তথ্য মতে জড়িত অন্যান্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। বুধবার দুপুর ২টায় জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন এই কথা বলেন।
এ সময় তিনি আরও বলেন, শরীয়তপুরে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের সামনে বখাটের সংখ্যা দিনদিন বেড়েই চলছে। বখাটেদের উৎপাত রোধে ডিবি পুলিশকে বিশেষ ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। আজ ডিবি পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের সামনে থেকে বেশ কয়েক জন বখাটেকে আটক করেছে। যাচাই বাছাই করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।
উল্লেখ্য, শরীয়তপুর সদর উপজেলার বিনোদপুর খালাসী কান্দি গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী নাসির মাদবরের বাড়িতে গত ১২ অক্টোবর রাত ১টার দিকে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ডাকাতির সময় ডাকাতরা নাসির মাদবরের স্ত্রী ও বগাদী বালিকা দাখিল মাদরাসর সহকারী শিক্ষিকা ফাতেমা বেগম মালাকে কুপিয়ে জখম করে। এ সময় ডাকাতরা মালা বেগমের ছেলে শরীয়তপুর ভোকেশনাল স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্র জুবায়ের আহমেদ ও বিনোদপুর শরীয়তিয়া দাখিল মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র আবিদকেও কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। গুরুতর আহত মালা বেগম ও তার সন্তানদের প্রথমে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে মামলা বেগমকে ফরিদপুর ও ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৪ অক্টোবর বেলা ১১টায় মালা বেগমের মৃত্যু হয়। এ বিষয়ে মালা বেগমের বড় ছেলে জেড.এইচ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তরিকুল ইসলাম বাদী হয়ে আজ্ঞাতনামা আসামীর নামে পালং মডেল থানায় মামলা দায়ের করে। পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে হান্নান মাদবর নামে একজনকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার সাথে জড়িতর কথা স্বীকার করে সে।