
রবিবার (২৪ নভেম্বর) দিবাগত রাতে পালং থানাধীন তুলাসার ইউনিয়নের দক্ষিণ গোয়ালদী গ্রামে নির্মাণাধীন “দক্ষিণ গোয়ালদী নদীর পাড় (ফকির বাড়ি) জামে মসজিদ” এর মাঠে রাখা রড চুরির প্রস্তুতিকালে ধাওয়া করে দুই চোরকে ধরে ফেলে এলাকাবাসী।
মসজিদের পাশের দোকানদার নুরুল ইসলাম ফকির জানান, ‘রাত দুইটার দিকে তার ঘুম ভাঙ্গে। আর ঘুম আসছিল না। তিনটার দিকে তিনি মসজিদের মাঠে মানুষের চলাচলসহ ফিসফাস আওয়াজ এবং ভ্যানে রড তোলার শব্দ শুনতে পান। দরজা খুলে বাইরে বেড়িয়ে এসে দেখেন মসজিদের মাঠে রাখা রডের পাশে দুটি ভ্যান দাঁড় করানো।’ ভ্যানের পাশে কোন মানুষ দেখতে না পেয়ে সে বুঝতে পারে তার শব্দ পেয়ে চোরেরা পালিয়েছে। তাই সে দোকানে ঢুকে অপেক্ষা করতে থাকে- কেউ আসে কিনা ভ্যান নিতে তা দেখার জন্য। প্রায় এক ঘন্টা পর দোকানদার নূর ইসলাম ফকির দেখেন চোরেরা ভ্যান নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। তাই সে দোকান থেকে বেড়িয়ে “কা-রা” বলে চিৎকার করতেই চোরেরা ভ্যান রেখে দৌড়ে পালাতে থাকে। কির্তীনাশা নদীর ব্রিজ পেরিয়ে লতাবাগ গ্রামে ঢুকতেই গ্রামের লোকজন ধাওয়া করলে কীর্তিনাশা নদীতে চোরেরা ঝাঁপিয়ে পড়ে। একজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও দু’জনকে ধরে ফেলে জনতা। চোরেরা হলো: মো: হাবিব মাদবর(৩৫) পিতা- ফজল মাদবর, গ্রাম- ভাসানচর, থানা- পালং, জেলা-শরীয়তপুর ও আরমান শেখ(২৯), পিতা- মো: আনোয়ার শেখ, গ্রাম- চান্দিবাসী, থানা- ভাঙা, জেলা- ফরিদপুর। এলাকাবাসী পরবর্তীতে চোর দু’জনকে তুলাসার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: জাহিদুল ইসলাম ফকিরের জিম্মায় তুলে দেন। চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম ফকির জানান- ‘ভোরে আমি লতাবাগ এলাকায় জনতার হাতে দুইজন চোর ধরা পড়া এবং তাদের মারপিটের খবর পাই। কিছুদিন আগে দেশে পদ্মা ব্রিজে মানুষের মাথা লাগবে এমন গুজবে অনেক নিরপরাধ মানুষ মারা যাওয়ায় আমি স্থানীয় চৌকিদারকে চোর ও ভ্যান ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আসতে বলি। এরপর তাদের ইউনিয়ন পরিষদের একটি রুমে আটকে রেখে পালং থানা পুলিশকে খবর দেই। দশটার দিকে পালং থানা থেকে পুলিশ এলে তাদের কাছে চোর ও ভ্যান সোপর্দ করি।’
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, মাঝরাতে মুন্সিরহাট এলাকার একটি রিকশার গ্যারেজের দরজা ভেঙে দুটি ভ্যান চুরি করে দক্ষিণ গোয়ালদী নদীর পাড় (ফকির বাড়ি) জামে মসজিদের পাশের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় মসজিদ মাঠে ‘রড’ পড়ে থাকতে দেখে তারা চুরির পরিকল্পনা করে।
দক্ষিণ গোয়ালদী নদীর পাড় (ফকির বাড়ি) জামে মসজিদ কমিটির সেক্রেটারি মোঃ ইয়াসিন জানান ‘চোররা বড় ধরনের চুরির পরিকল্পনা করলেও রড কিংবা আমাদের মসজিদের অন্য কোন মালামাল খোয়া যায়নি- চুরির আগেই ধরা পড়ে যায় চোর।’
পালং থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ভ্যানের মালিক খবর পেয়ে থানায় এসে ভ্যান নিয়ে যান এবং ভ্যান চুরির দায়ে চোরদের বিরুদ্ধে চুরি আইনে একটি মামলা করেন।