Tuesday 1st July 2025
Tuesday 1st July 2025

ভেদরগঞ্জের সখিপুরে নবনির্মিত সেতু ঝুঁকিতে ফেলে পিলার ঘেষে অবৈধ ড্রেজিং

ভেদরগঞ্জের সখিপুরে নবনির্মিত সেতু ঝুঁকিতে ফেলে পিলার ঘেষে অবৈধ ড্রেজিং

শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুরে নবনির্মিত সেতুর পিলার ঘেষে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে অপরিকল্পিত ভাবে মাটি কেটে সেতুটি ঝুঁকিতে ফেলছেন বলে ঠিকাদারসহ একটি প্রভাবশালী মহলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। মহলটি সরকারি অনুমোদন নিয়ে সেতুর নিচ থেকে বালু তুলছেন বলে এলাকাবাসীকে ভুল বোঝাতে চেষ্টা করছে। একই সাথে সেতুর নিচ থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন করে মালিকানা জমি ভড়াট করা সহ বিভিন্ন পন্থায় বিক্রি করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে মহলটির বিরদ্ধে। গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতি টের পেয়ে তরিঘরি করে অসংখ্য শ্রমিক নিয়ে ড্রেজারটি সরিয়ে নিতে চেষ্টা করে ড্রেজার মালিক।
অথচ চলতি বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর পানিসম্পদ উপ-মন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম এমপি নিজ ইউনিয়নে নির্মিত ৯৯ মিটার আরসিসি গার্ডার সেতুর রক্ষার জন্য নদীর তীর রক্ষা কাজের উদ্বোধন করেছেন। যে সেতুটি রক্ষা হলে কাঁচিকাটা, চরভাগা, উত্তর তারাবুনিয়া, সখিপুর ইউনিয়ন সহ পার্শ্ববর্তী অনেক ইউনিয়নের জনসাধারণ ও ব্যবসায়ীদের নড়িয়া উপজেলা ও জেলা শহরের সাথে সেতু বন্ধন হবে। কমে যাবে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরত্ব।
স্থাণীয়রা প্রভাবশালী মহলটির বিরুদ্ধে মুখ খুলতে ভয় পায় এমন অনেকে নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করে জানায়, এই সেতুটি সখিপুর থানার চরভাগা নতুন বাজার এলাকায় নির্মিত হওয়ায় এলাকাবাসীর জন্য আশির্বাদ মনে করেছিলাম। এখন দেখি অভিশাপে পরিণত হতে যাচ্ছে। সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন থেকেই একের পর এক বিরম্বনা দেখা দেয়। অবশেষে সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে। দুই পাশের সংযোগ সড়কের কাজ চলছে। সংযোগ সড়কের জন্য প্রায় ৭ লাখ ঘনফুট বালু সেতুর নিচ থেকে উঠানো হয়েছে। এখন আবার মালিকানা জমি ভড়াট করার জন্য চুক্তি নিয়েছে মহলটি। এখন দুলাল মোল্যার ড্রেজার দিয়ে আক্তার সিকদার সেতুর নিচ থেকে মাটি কাটাচ্ছে। সেতুর দুই পাশের সংযোগ সড়কের নাম করে বালু তুলে পার্শবর্তী মনাফ মৃধার নিচু জমি ভড়াট করছে।
স্থানীয়রা আরও জানায়, আমরা চোখের সামনে দেখছি প্রায় ৫ বছর ধরে নড়িয়া উপজেলার সাথে জাজিরা উপজেলার সংযোগ সড়ক বন্ধ। সেতুর নিচ থেকে বালু তোলার পর থেকে সেতুর দুই পাশের সংযোগ সড়ক ধ্বসে পড়েছে। সদর উপজেলার রাজগঞ্জ-আড়িগাঁও বাজারের সংযোগ সেতুর পাশ থেকে বালু তোলায় সেতুর সংযোগ সড়ক ভেঙ্গে যায়। আমাদের চরভাগা নতুন বাজারের নিকট নির্মিত সেতুটিও ঝুঁকির মুখে রয়েছে। বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষ যেন তদারকি করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করেন।
কথা হয় ড্রেজার মালিক দুলাল মোল্যার সথে। দুলাল জানায়, উপজেলা প্রকৌশলী ও ইউএনও সেতুর নিচ থেকে মাটি কাটার অনুমোদন দিয়েছে এই কথা আমাকে ঠিকাদার বাসেদ মিয়া, চেয়ারম্যানের ছেলে স্বপন সিকদার ও আক্তার সিকদার বলেছে। তাদের কথা মত সেতুর নিচে ড্রেজার বসিয়ে বালু তুলি। এই পর্যন্ত আমি ১ লাখ ৫৫ হাজার ঘনফুট বালু তুলেছি। আমার কাছে অনুমোদনের কোন কাগজপত্র নাই। ঠিকাদার বাসেদ মিয়া, স্থানীয় প্রভাবশালী আক্তার সিকদার ও স্বপন সিকদারকে কথা বলার জন্য খুঁজে পাওয়া যায় নাই। তাই তাদের বক্তব্য প্রদান করা গেল না।
এ বিষয়ে এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, সেতু ঝুঁকিতে ফেলে সেতুর নিচ থেকে বা পাশ থেকে বালু তোলার কোন সুযোগ নাই। বিষয়টি সরেজমিন তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।