
ঈদ-উল-আজহার ঈদে শশুর বাড়ি বেড়াতে এসে মারা যাওয়া হাইম্যাক্স ইউনানী ফার্মাসিটিক্যাল্স কোম্পানির মালিক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এনামুল হক সবুজের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। দাফনের একমাস ৪ দিন পর আদালতের নির্দেশে শনিবার (০৫ সেপ্টম্বর) বেলা ১১ টার দিকে শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার কনেশ্বর ইউনিয়নের পশ্চিম ছাতিয়ানি এলাকার হাজী শরীয়তুল্লাহ কারিমীয়া মাদরাসা ও এতিমখানা কবরস্থান থেকে লাশ তোলা হয়। এ সময় সেখানে ডামুড্যা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মর্তুজা আল মুঈদ, ডামুড্যা থানার ওসি (তদন্ত) এমারত হোসেনসহ পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ইউএনও মর্তুজা আল মুঈদ মুঠোফোনে বলেন, গত বুধবার আদালত থেকে একটি নির্দেশ এসেছে। তাতে বলা হয়, একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে সবুজের লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে পাঠাতে হবে। সে মোতাবেক হাজী শরীয়তুল্লাহ কারিমীয়া মাদরাসা ও এতিমখানা কবরস্থানে দাফন করা সবুজের লাশ উত্তোলন করে মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ডামুড্যা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মেহেদী হাসান বলেন, এনামুল হক সবুজ ঈদে শশুর বাড়ি বেড়াতে এসে মারা যায়। এ ঘটনায় গত ১২ আগস্ট তার বোন তাসলিমা বেগম বাদী হয়ে শরীয়তপুর আদালতে একটি হত্যা মামলা করেন। তাই আদালতের নির্দেশে কবর থেকে লাশ তোলা হয়।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. মুনীর আহমেদ খান বলেন, সবুজের লাশ হাসপাতলের মর্গে আনা হয়েছে। লাশের ময়নাতদন্ত করা হবে।
মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঈদ-উল-আজহার ঈদে কুরবানি দিতে গত ৩০ জুলাই ডামুড্যা উপজেলার কনেশ্বর ইউনিয়নের পশ্চিম ছাতিয়ানি গ্রামে শশুর বাড়িতে আসেন এনামুল হক সবুজ। তার নিজ বাড়িও ওই গ্রামে। তিনি দুটি বিয়ে করেছেন। তার প্রথম স্ত্রীর ঘরে দুই মেয়ে এক ছেলে। গত ২ আগস্ট ভোর রাতে সবুজের রহস্যজনক মৃত্যু হয়। কিন্তু ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফন করা হয়। তাই তার বোন তাসলিমা বেগম বাদী হয়ে শরীয়তপুর আদালতে সবুজের প্রথম স্ত্রী শামীমা বেগম, শশুর জুলহাস সরদার, শাশুড়ি কোহিনুর বেগম, শ্যালক সাইফুল ইসলাম অপু, শরিফুল ইসলাম, চাচা শশুর দেলোয়ার সরদার, ফুফা শশুর আল মাদানীর বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
সবুজের বোন মামলার বাদী তাসলিমা বেগম বলেন, আমার ভাই পরিশ্রম করে একটি কোম্পানীর মালিক হয়েছে। সে কোটি কোটি টাকা ও অঢেল সম্পত্তির মালিক ছিলেন। তার প্রথম স্ত্রী শামীমা বেগম সেই সম্পত্তি লিখে নেয়ার জন্য ভাইর সঙ্গে প্রতিনিয়ত ঝগড়া করতেন। তাই শামীমা, জুলহাস, কোহিনুর, সাইফুল, শরিফুল, দেলোয়ার, আল মাদানীরা মিলে আমার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। ভাইকে হত্যার পর পরই শামীমা তার ভাইদের কোম্পানীর পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছে। তিনি বলেন, প্রশাসন, আদালত ও যারা ময়নাতদন্ত করবে তাদের কাছে আমার দাবী তারা যেন সুষ্ঠু তদন্ত করেন। তদন্ত পূর্বক আমার ভাইর হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।