
সরকার ঘোষিত নিয়ম উপেক্ষা করে সুলতান মাহমুদ স্বপন নামে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক প্রধান শিক্ষক তার নিয়ন্ত্রনাধিন একটি বিদ্যালয়ে উচ্চ বিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু করেছেন। কোভিড কালীন সময়ে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও প্রধান শিক্ষক স্বপনের বিদ্যালয়ে পাঠদান ও প্রাইভেট বাণিজ্য বন্ধ হয়নি। বর্তমানে তিনি এসাইনমেন্ট ও পরীক্ষার কথা বলে প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ রয়েছে। তিনি নিজ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকসহ স্থানীয় শিক্ষিত ছেলে মেয়েদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ করে চালিয়ে যাচ্ছেন তার এই অবৈধ কার্যক্রম। ইতোমধ্যে তাকে একাধিকবার কৈফিয়ত তলবসহ বিভাগীয় মামলাও হয়েছে প্রধান শিক্ষক স্বপনের বিরুদ্ধে। কিছুতেই সিদ্ধান্ত থেকে পিছপা হচ্ছেন না সেই শিক্ষক।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় বাড়ৈপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষামূলক ভাবে নিম্ন মাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। সেই থেকে উপজেলার ১৪ নং নশাসন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুলতান মাহমুদ স্বপনও অবৈধভাবে তার বিদ্যালয়ে নিম্ন মাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হলে তাকে প্রাথমিক ভাবে কৈফিয়ত তলব করা হয়। কৈফিয়ত তলব করে কোন সুফল না পেয়ে তার বিরুদ্ধে বিভগীয় মামলাও করা হয়। তার পরেও তিনি পিছপা হচ্ছে না। কোভিডকালীন সময়েও তিনি তার বিদ্যালয় খোলা রেখে নিয়মিত পাঠদান ও প্রাইভেট বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে প্রধান শিক্ষক স্বপন।
প্রধান শিক্ষক সুলতান মাহমুদ স্বপন বলেন, আমি জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছি। এই বিদ্যালয়ে নিম্ন মাধ্যমিক (অষ্টম শ্রেণি) পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। ষষ্ঠ শ্রেণিতে ৩৬ জন, সপ্তম শ্রেণিতে ৩৮ জন ও অষ্টম শ্রেণিতে ২৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এই বিদ্যালয়ের ৬ জন শিক্ষক ও বাহির থেকে আরও ৬ জন শিক্ষক নিয়োগ করে পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। এসএমসি কমিটি বিদ্যালয়ের সকল খরচ বহন করে। এই বিদ্যালয়ের কারনে এলাকার ছেলে মেয়েরা শিক্ষিত হচ্ছে। যারা এই বিদ্যালয়ের বিরোধিতা করে তারা সমাজ বিরোধী।
কোভিড-১৯ মহামারীতে সরকারের ঘোষণায় দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ আপনি কিভাবে এই বিদ্যালয় চালান? তাছাড়া শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেন কেন? এর জবাবে প্রধান শিক্ষক বলেন, পাঠদান সরকার বিরোধী হলে তা বন্ধ করে দিব। আমি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোন টাকা আদায় করি না। অন্যান্য শিক্ষকদের পাওনা টাকা আদায়ের জন্য শিক্ষার্থীদের আমি বলেছি।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানায়, ষষ্ঠ-সপ্তম শ্রেণির জন্য ১ হাজার ও অষ্টম শ্রেণির ১ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে। দুইজন শিক্ষার্থী জানায়, টাকা কোন ব্যবস্থা করতে পরি নাই। পরে প্রধান শিক্ষকের কাছে যাই। সেও বলে টাকা দিতে। স্থানীয় একজন গণ্যমান্য ব্যক্তির সুপারিশে এসাইনমেন্ট পেয়েছি।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, সম্পূর্ণ বে-আইনী ভাবে সেখানে নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কার্যক্রম চালাচ্ছে। গত বছর লিখিত আদেশের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। করোনার মধ্যে কোন বিদ্যালয় খোলার নিয়ম নাই। সে যদি অনিয়ম করে বিদ্যালয় খোলে এবং অবৈধ কার্যক্রম চালায় তাহলে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ছাড়াও ওই বিদ্যালয়ে আরও ৬ জন সহকারী শিক্ষক রয়েছে।