Tuesday 1st July 2025
Tuesday 1st July 2025

শরীয়তপুর ২৮ যাত্রী আহত, অটোরিক্সা নিয়ে পালালো চালক ও হেলপার

শরীয়তপুর ২৮ যাত্রী আহত, অটোরিক্সা নিয়ে পালালো চালক ও হেলপার
শরীয়তপুর ২৮ যাত্রী আহত, অটোরিক্সা নিয়ে পালালো চালক ও হেলপার

সকালে হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পান শরীয়তপুর ভেদরগঞ্জ উপজেলার ছয়গাঁও ইউনিয়নের পাপরাইল এলাকার বাসিন্দারা। শব্দ শুনে কয়েকজন এলাকার লোক দৌড়িয়ে এসে দেখেন সড়কের পাশে খাদে একটি বাস দুমড়ে-মুচড়ে পড়ে আছে। ভেতর থেকে ভেসে আসছে যাত্রীদের ডাক-চিৎকার ও আর্তনাদ।

ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত সময় পালিয়ে যায় চালক ও হেলপার। স্থানীয়ারা কেউ এসে বাসের চালক ও হেলপারকে দেখতে পায়নি। তবে ঘটনাস্থল দু’ জনকে অটোরিক্সা দিয়ে চলে যেতে দেখেছেন। পরে জানা যায়, বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে খাদে পড়ে যায়। স্থানীয়রা ধারণা করছে অটোরিক্সা দিয়ে চলে যাওয়া ওই দুজ’ন ব্যক্তি বাসটির চালক ও হেলপার হতে পারে। স্থানীয়রা এসে বাসের যাত্রীদের উদ্ধার করেন এবং পরে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশকে খবর দেয়।

মঙ্গলবার (৩১ মে) সকাল সাড়ে ১০টায় ছয়গাঁও ইউনিয়নের শরীয়তপুর-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পাপরাইল এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে নারী ও শিশুসহ ২৮ যাত্রী আহত হয়েছেন। চালক, সুপারভাইজার ও হেলপার পালিয়ে গেছেন। বাসের বিভিন্ন অংশ কেটে হতাহতদের উদ্ধার করেছেন স্থানীয়া ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। এরপর শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল ও ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে আহতদের পাঠানো হয়েছে। আহতরা অনেকেই প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে যান এবং কয়েকজনকে ভর্তি করা হলে তারাও পরে চলে যান।

ছয়গাঁও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান লিটন মোল্লা বলেন, ঘটনার দুই মিনিট পরে আমি ঘটনাস্থলে এসেছি। বাসটিতে অন্তত ৪৫ জন যাত্রী ছিল। এর মধ্যে ২৮ জন যাত্রী আহত হন। স্থানীয়দের নিয়ে আমরা কিছু যাত্রীদের উদ্ধার করি। পরে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা যাত্রীদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। আমরা এসে চালক ও হেলপারকে দেখতে পাইনি।

স্থানীয় বাসিন্দা সুমন বলেন, সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে হঠাৎ বিকট একটি শব্দ শুনতে পাই, পরে দৌড়ে এসে দেখি একটি বাস খাদে পড়ে আছে। ধূলোবালি মাখা দু’জন ব্যক্তিকে দেখছি ভেদরগঞ্জের দিকে অটোরিক্সা করে চলে যেতে।

শরীয়তপুর সরকারি কারিগরি কলেজের শিক্ষার্থী আহত জিসান জানায়, শরীয়তপুর থেকে নোয়াখালী যাওয়ার উদ্দ্যেশে উঠেছিলাম। কিছুদূর যাওয়ার পর বাসটি অভারর্টাকিং করার সময় এটি খাদে পড়ে যায়।

বাগেরহাট জেলার মূলগঞ্জ উপজেলার আহত আব্দুর রহিম জানান, আমার মেয়ে কিছু দিন আগে চট্টগ্রামে গার্মেন্টস এ কাজ করার সময় স্ট্রোক করে মারা যায়। সেখানে তাকে টাকা দিবে এ কারনে যেতে ছিলাম, সেখানে আজ আমাদের যাওয়া হলো না বাসের ড্রাইভারের কারনে। বাসের ড্রাইভারের গাড়ি চালানো খুব খারাপ। সে দ্রুত যাওয়ার জন্য আরেকটা গাড়ি কে সাইড না দিয়ে জোড়ে টান দেয়, পরে গাড়ির চাকা সাইডে বালুর সাথে পরে যায়। যদি গাড়িটি সেখানে রাখতো তাহলে গাড়িটি পরে না।সে না রেখেই জোড়ে গাড়ি টান দেয়। তাৎক্ষণিক গাড়িটি পড়ে যায়। ড্রাইভারটি খুব খারাপ। এই দূর্ঘটনার জন্য সম্পূর্ণ দায়ী এই গাড়ির ড্রাইভার।

শরীয়তপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক মো. সেলিম মিয়া বলেন, দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছি। তবে আমরা আসার আগে স্থানীয়রা আহত কিছু যাত্রীকে উদ্ধার করে। আমরা আহত ১২ ব্যক্তিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠাই। রাস্তায় যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক আছে।বাসটির একাংশ কেটে হতাহতদের উদ্ধার করা হয়।’

ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পারি চট্টগ্রামগামী আসিফ পরিবহন নামে একটি বাস আজ সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে খাদে পড়ে যায়। এখানে ২৮ জন যাত্রী আহত হয়, তাদের আমরা চিকিৎসার জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল ও ভেদরগঞ্জ উপজেলা কমপ্লেক্স পাঠাই। এখানে বড় ধরনের কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে আমরা এসে কোন চালক ও হেলপারকে দেখতে পায়নি।