
শরীয়তপুর আদালত প্রাঙ্গণে বিচারপ্রার্থীদের ক্লান্তি দূর করার জন্য বিশ্রামাগার ‘ন্যায়কুঞ্জ’ এর ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন করলেন বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগের বিচারপতি মো: আশফাকুল ইসলাম।
শনিবার ৩ জুন জেলা ও দায়রা জজ আদালত চত্বরে এই বিশ্রামাগারের ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন করেন তিনি। উদ্বোধন কালে জজ কোর্ট জামে মসজিদের পেশ ইমাম আনিসুর রহমান দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন শরীয়তপুরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান। উক্ত উদ্বোধন অনুষ্ঠানে শেখ মফিজুর রহমানের নেতৃত্বে উপস্থিত ছিলেন শরীয়তপুর জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক স্বপন কুমার সরকার, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ সালেহুজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ শেখ তারিক এজাজ সহ শরীয়তপুর বিচার বিভাগে কর্মরত বিভিন্ন স্তরের বিচারকবৃন্দ। উক্ত অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের প্রতিনিধিবৃন্দ, জেলা আইনজীবী সমিতির প্রতিনিধিবৃন্দ, জেলা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সহ শরীয়তপুর জেলায় বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পর্যায়ে কর্মরত কর্মকর্তাবৃন্দ।
ন্যায়কুঞ্জের ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন শেষে বিচারপতি উপস্থিত সুধীজনের উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। বক্তব্যে বিচারপতি বিচারপ্রার্থী মানুষের আশু কল্যাণ ও বিচার প্রক্রিয়ায় স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের লক্ষ্যে ন্যায়কুঞ্জ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা ব্যক্ত করে বিচার প্রার্থীদের আদালতের প্রাণ মর্মে অভিহিত করেন।
শরীয়তপুর জেলার ন্যায় সারা বাংলাদেশের সকল জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে মাননীয় প্রধান বিচারপতি জনাব হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী মহোদয়ের উদ্যোগে এই ন্যায়কুঞ্জ স্থাপন করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। আদালতে বিচারপ্রার্থীরা এলে তাদের বসার কিংবা ওয়াশরুম ব্যবহারের সুযোগ সেভাবে থাকে না। আইনজীবী সমিতির ওয়াশরুম ব্যবহারের সুযোগও কম। প্রধান বিচারপতি বিষয়গুলো অনুভব করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রতিটি আদালত চত্বরে ন্যায়কুঞ্জ নির্মাণের প্রস্তাব তুলে ধরলে প্রধানমন্ত্রী সেই প্রস্তাবটি সাদরে গ্রহণ করে ন্যায়কুঞ্জ নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছেন। এই বিশ্রামাগারে বিচারপ্রার্থীদের জন্য অর্ধশতাধিক আসন থাকবে। বিশুদ্ধ খাবার পানি এবং শৌচাগারের ব্যবস্থাও থাকবে।
এছাড়া বক্তব্যে বিচারপতি মহোদয় তার প্রয়াত পিতা প্রাক্তন বিচারপতি একেএম নুরুল ইসলামের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। উল্লেখ্য যে, তিনি ১৬ই জুন ১৯৮৯ সালে তৎকালীন উপরাষ্ট্রপতি থাকাকালীন শরীয়তপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের মূল ভবনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। বক্তব্য প্রদান শেষে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান মহোদয়ের সঞ্চালনায় বিচারপতি শরীয়তপুর জেলায় কর্মরত বিচারকবৃন্দের সাথে মতবিনিময় করেন। মতবিনিময় কালে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান শরীয়তপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন মামলা এবং মোকাদ্দমা নিষ্পত্তির হার তুলে ধরেন। বিচারপতি শরীয়তপুর বিচার বিভাগের বিচারিক কার্যক্রম সহ সার্বিক মোকাদ্দমা নিষ্পত্তির হার নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। অনুষ্ঠান সমাপ্তি কালে বিচারপতি মহোদয় বিচারকবৃন্দের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদান করেন। উল্লেখ্য যে, বিচারপতি মহোদয়ের সফর সঙ্গী হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের রিসার্চ এন্ড রেফারেন্স অফিসার মোহাম্মদ নাঈম ফিরোজ ।