বুধবার, ৪ঠা অক্টোবর, ২০২৩ ইং, ১৯শে আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৮ই রবিউল-আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরী
বুধবার, ৪ঠা অক্টোবর, ২০২৩ ইং

শরীয়তপুরে বেদেপল্লীর আনসার সদস্য আবু বকর পাবেন নতুন ঘর

শরীয়তপুরে বেদেপল্লীর আনসার সদস্য আবু বকর পাবেন নতুন ঘর

শরীয়তপুরে বেদে পল্লী থেকে উঠে আশা আবু বকর। নিজের আত্মবিশ্বাস ধরে রেখে অঙ্গীভূত সদস্য হিসেবে চাকরি করছেন বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীতে। তবে সামান্য বেতনের চাকরিতে আট সদস্যের পরিবারের খরচ বহন করতে হিমশিম খেতে হচ্ছিলো তাকে। এমনকি পরিবারের সদস্যদের থাকার জন্য ঘরে ছিলো না পর্যাপ্ত জায়গা। আবু বকরকে নিয়ে গত সোমবার (২৮ আগষ্ট)একটি প্রকাশিত সংবাদটি নজরে আসে শরীয়তপুরের আনসার ভিডিপির জেলা কমান্ড্যান্ট মো. মইনুল ইসলামের। পরে তিনি বুধবার (৩০ আগষ্ট) আবু বকরের বাড়ি ও বেদে পল্লি পরিদর্শন করে বাহিনী থেকে নতুন একটি ঘর নির্মাণ করে দেয়ার আশ্বাস দেন। এছাড়াও তিনি বেদে পল্লির শিশুদের খেলাধুলা করার জন্য ফুটবল উপহার দেন। পাশাপাশি সেখানকার মানুষের বিভিন্ন সমস্যাগুলো খুঁজে বের করেন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে সমাধানে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানাবেন বলেও নিশ্চিত করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২৭ বছর বয়সী আবু বকর একজন বেদে সম্প্রদায়ের ছেলে। বাড়ি শরীয়তপুর সদর উপজেলার ডোমসার ইউনিয়নের মুন্সীর হাট নদীর পাড়ে বেদে পল্লী। ওই পল্লীর আব্দুল সাত্তার আকন ও জোসনা বেগম দম্পত্তির ছোট ছেলে তিনি। এছাড়াও তার পরিবারে রয়েছে স্ত্রী তামান্না বেগম, মেয়ে ফাতেমা, ভাই আরিফ সরদার, দুই বোন রেশমা ও রোকসানা। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রামের কদম রসুল এলাকায় সানমুন টেক্সটাইল নামের একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন।

এ সময় আবু বকর বলেন, বেদে সম্প্রদায়ের মানুষ বলে সব জায়গায় তুচ্ছ তাচ্ছিল্যের শিকার হয়েছি। তবুও দমে যাই নি, পড়াশোনা শেষ করে আনসার বাহিনীতে চাকুরী করছি। তবে যা বেতন পাই এতে সংসার চালানো খুব কষ্ট হয়ে যায়। আমাকে নিয়ে সাংবাদিক ভাইয়েরা নিউজ করার পরে শরীয়তপুরের জেলা কমান্ড্যান্ট মোঃ মইনুল ইসলাম স্যার আমার বাড়িতে এসেছে আমি কখনো ভাবতেও পারিনি স্যার আসবে আমার বাড়িঘর পরিদর্শন শেষে আনসার বাহিনী থেকে একটি নতুন ঘর করে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন আমার পরিবারকে। আমি আজ ভীষণ খুশি।

আনসার সদস্য আবু বকরের বাবা সাত্তার সরদার বলেন, আমার ছেলের অল্প টাকার বেতনে আমাদের পুরো সংসার চলে। এমনকি সকলের মাথা গোজার পর্যাপ্ত জায়গাটুকু নেই। খুব কষ্ট করে একটি ঘরে সবাই থাকতাম। আজকে আনসার বাহিনীর শরীয়তপুর জেলা থেকে স্যারেরা এসে নতুন ঘর করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা ভীষণ খুশি হয়েছি।

এ বিষয়ে শরীয়তপুরের আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর জেলা কমান্ড্যান্ট মোঃ মইনুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল একে এম আমিনুল হক স্যারের দিক নির্দেশনায় আমরা আনসার বাহিনীর সদস্যদের খোঁজখবর নেই। যেমন আবু বকর আমাদের আনসার বাহিনীর একজন সদস্য। তার জীবনের গল্প সত্যিই অবাক করার মতো। তার জীবন সংক্রান্ত এবং আর্থিক সমস্যার একটি নিউজ আমার সামনে আসলে আমি আজ তার বাড়িটি পরিদর্শন করি। পরিদর্শন শেষে আমার মনে হয়েছে তার পরিবারের জন্য একটি নতুন ঘর প্রয়োজন। তাহলে সে তার পরিবার নিয়ে আরেকটু ভালোভাবে জীবনযাপন করতে পারবে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমাদের আনসার বাহিনীর পক্ষ থেকে তার জন্য একটি নতুন ঘরের ব্যবস্থা করা হবে।

 


error: Content is protected !!