
শরীয়তপুর পাসপোর্ট করতে এসে রোহিঙ্গা সন্দেহে এক নারীকে পুলিশে সোপর্দ করেছে শরীয়তপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস। আছিয়া বিবি(২৭) নামে ওই নারী ভাঙা ভাঙা বাংলা বলতে পারলেও তার ভাষা অস্পষ্ট।
সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর তিনটার দিকে শরীয়তপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক নাজমুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পাসপোর্ট করতে এসে রোহিঙ্গা সন্দেহে আটক হওয়া আছিয়া বিবি(২৭) কক্সবাজারের টেকনাফ থানার আলি যোহার ও আম্বিয়া খাতুন দম্পত্তির মেয়ে বলে জানিয়েছে পুলিশকে।
পাসপোর্ট অফিস ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গতকাল রবিবার বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে শরীয়তপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে প্রবেশ করতে গেলে গেইটে দায়িত্বরত আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্য মো. সেলিম শেখ তার পরিচয় জিজ্ঞেস করলে অস্পষ্ট বাংলা ভাষায় কথা বললে আনসার সদস্য সেলিম শেখের সন্দেহ হয়। বিষয়টি তাৎক্ষণিক বায়োরুমে দায়িত্বরত কর্মকর্তা আতিকুর রহমানকে অবগত করলে আতিকুর রহমান তার সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি ভাঙা ভাঙা বাংলা শব্দে উত্তর দেন। এসময় আতিকুর রহমানেরও সন্দেহ হলে আছিয়া বিবিকে নিয়ে সহকারী পরিচালক নাজমুল ইসলামের কক্ষে যান৷ নাজমুল ইসলামও তার ভাষা বুঝতে পারেননি। তার পাসপোর্টের আবেদনে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ঠিকানা থাকলেও আবেদনে ব্যবহৃত জন্মসনদ মৌলভীবাজার জেলা থেকে নিবন্ধিত। ভাষা না বুঝা, জন্মসনদ মৌলভীবাজার জেলা থেকে নিবন্ধিত হওয়াসহ জাতীয় পরিচয় পত্র না থাকায় নাজমুল ইসলামের সন্দেহ হয় আছিয়া বিবি বাঙালি নন। পরবর্তীতে তিনি পালং মডেল থানা পুলিশকে বিষয়টি অবগত করলে পুলিশ এসে তাকে থানা হেফাজতে নিয়ে যায়।
পুলিশ আছিয়া বিবি নামে ওই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে ভাঙা বাংলায় অস্পষ্ট শব্দে উত্তর দেয় বলে তাকে লিখে দিতে বলেন। এসময় সে আরবি ও উর্দু বর্ণমালায় তার কথা লিখে দেয়। আরবি উর্দু বর্ণমালায় ওই লেখা অনুবাদের চেষ্টা করছে পুলিশ।
পাসপোর্ট অফিসের বায়োরুম কর্মকর্তা আতিকুর রহমান বলেন, গেইটে দায়িত্বরত আনসার সদস্য আমাকে বিষয়টি অবগত করলে আমি তার সাথে কথা বলে সন্দেহ পোষণ করি। এরপর আমার উর্ধ্বতন কর্মকর্তার নিকট তাকে নিয়ে যাই।
শরীয়তপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক নাজমুল ইসলাম বলেন, ভাঙা বাংলায় কথা বলায় আছিয়া বিবি নামে ওই নারীকে অবাঙালি সন্দেহে পুলিশে দিয়েছি। পুলিশ তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
পালং মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন আহাম্মেদ বলেন, শরীয়তপুর পাসপোর্ট অফিস থেকে আছিয়া বিবি নামে এক নারীকে হেফাজতে নিয়েছে পালং মডেল থানা পুলিশ। তার ভাষা অস্পষ্ট। সে আরবি ও উর্দু বর্ণমালায় কিছু একটা লিখে দিয়েছে আমাদের। ওই লেখা বাংলায় অনুবাদ করার চেষ্টা করছে পুলিশ। তদন্ত করে যদি প্রমাণিত হয় সে অবৈধ ভাবে পাসপোর্ট করার চেষ্টা করেছে, তবে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে।