Sunday 19th May 2024
Sunday 19th May 2024

Notice: Undefined index: top-menu-onoff-sm in /home/hongkarc/rudrabarta.net/wp-content/themes/newsuncode/lib/part/top-part.php on line 67

শরীয়তপুর তিন দিন ব্যাপি কৃষি প্রযুক্তি মেলার উদ্বোধন

শরীয়তপুর তিন দিন ব্যাপি কৃষি প্রযুক্তি মেলার উদ্বোধন

কৃষিই সমৃদ্ধি এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে, বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা,ঝালকাঠি, বরগুনা, মাদারীপুর ও শরীয়তপুর কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় শরীয়তপুর  কৃষি প্রযুক্তি মেলা-২০২৪ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। তিন দিন ব্যাপি সদর উপজেলা প্রাঙ্গনে  চলবে এই মেলা।

সোমবার ৬ই মে শরীয়তপুর সদর উপজেলা  প্রাঙ্গনে মেলার আয়োজন উদ্বোধন করেন সদর উপজেলা কৃষি অফিস।

শুরুতেই ব্যান্ড পার্টি বাঁজিয়ে সাদা ক্যাপ মাথায় দিয়ে প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ নিজাম উদ্দিনকে নিয়ে কৃষি প্রযুক্তি মেলার গেইটের ফিতা কেঁটে   কৃষি প্রযুক্তি মেলা-২০২৪ উদ্বোধন করেন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা কৃষি অফিসার রুহুল আমিন। তিনি এসময় বলেন, আসলে এটি একটি বিশেষ প্রকল্প আমাদের কৃষি বান্ধব সরকার জননেত্রী শেখ হাসিনা মানুষের কৃষি ও কৃষকের উন্নতিতে নিরলস ভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তারই ধারাবাহিকতায় আমাদের কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হয়। এটি একটি জিওবি প্রকল্প। এই প্রকল্পটির শেষ বছর অর্থাৎ ৫ম বছর এটা। প্রকল্পটি ৮টি জেলায় ৫০ হাজার কৃষককে ট্রেনিং দিয়েছে বিশেষ প্রযুক্তির উপরে। বিশেষ করে আমাদের শরীয়তপুর, মাদারিপুর ও গোপালগঞ্জে জেলা গুলোতে অনেক নিচু এলাকা আছে। এই নিচু এলাকা গুলোর কৃষির প্যটান্টটা ভিন্ন। এখানে জলাবদ্ধতা থাকে ৫ থেকে ৬ মাস।  এই জলাবদ্ধ অঞ্চলগুলোকে কিভাবে আমারা চাষের আবাদের আওতায় নিয়ে আসা যায়,তার জন্য যে বিশেষ প্রযুক্তি এই প্রযুক্তি গুলো নিয়েই সাধারণত তারা কাজ করে। যার আওতায় লো-লিভ পাম্প এর মাধ্যমে সেচ, ভাসমান পদ্ধতিতে সবুজ চাষ, তারপর সর্জন পদ্ধতিতে ফাল ও সবজি চাষবাদ, মিশ্র ফল বাগান, বস্তা ও ঢিবি পদ্ধতিতে সবজি চাষ, এবং এই জাতীয় বিশেষ কিছু পদ্ধতি নিয়ে এই প্রকল্পটি কাজ করে। এটি এখন শেষ বছরে উপনিত হয়েছে। যদি এই প্রকল্প গুলো সঠিক মতো কাজ করতে পারে তাহলে সামনে আরেকটি প্রকল্প আসতেছে।  যেটা গোপালগঞ্জ ও পার্শ্ববর্তী বিল মোহনা প্রকল্প। যদি আসে, তাহলে আমাদের দুই হাজার হেক্টর জমি যে জলাবদ্ধতা, তা চাষের আওতায় আসবে।

সমাপনী বক্তব্যে প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ নিজাম উদ্দীন আহাম্মেদ বলেন, এই মেলাটি ক্ষুদ্র পরিসরে হলেও আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমার খারাপ লাগছে আপনারা রোদে বসে আছেন,আর আমি ছাঁয়াতে বসে আছি। এজন্য আমি খুব বেশী সময় নেব না। কৃষির গুরুত্ব এখানে ব্যাখ্যা করার দরকার নেই, আপনারা তা সকলেই জানেন। শরীয়তপুরে আমারা যারা চাকুরী করি বা এখানে বসবাস করি তারা জানেন, বর্ষা কালে এখানের বড় একটি অংশ তলিয়ে যায়।  তিনি কৃষকদের উদ্যেশে বলেন, আমাদের একটাই উদেশ্য। আমাদের জমি গুলো থেকে ম্যক্সিমাম ফসল আমরা আহরণ করবো।  আমাদের জমি গুলোকে যদি তিন ফসিল জমির আওতায় আনতে পারি। এই মুহুর্তে আমাদের লক্ষ হওয়া উচিৎ। সামনে বৃষ্টি শুরু হবে, বর্ষার পানি চলে আসবে। তখন আমারা এই জমিটাকে তো ফেলে রাখতে পারি না। ইতিমধ্যে গোপালগঞ্জের কৃষকরা ব্যাপক সাফল্য লাভ করেছে। তারা কিন্তু জলবদ্ধ জমিতে চাষ করতেছে। এটাকে আমরা বলতেছি প্রযুক্তি। এখন আমাদের এই প্রযুক্তিটাকে জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে। আমার জমিতে পানি আসলো আর আমরা বাসায় বসে থাকলাম। ঐদিন এখন আর নাই।

এসময় তিনি আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কিন্তু বার-বার বলছেন, আমাদের এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি রাখবো না। তাই আপনাদের বলবো,এক ইঞ্চি জায়গাও আমরা অনাবাদি রাখবো না। যেখানে উৎপাদন করা সম্ভব প্রত্যেকটা জমিতে আমাদের উৎপাদনের আওতায় আনতে হবে। আসন্ন বর্ষা মৌসুমে সবাইকে এবং বিশেষ করে আমি কৃষি আফিসারকে বলবো প্লিজ আপনি নিজ উদ্যোগে সবাইকে এই কথা বলবেন,যে আপনার জমিতে পানি এসেছে টিক আছে। কিন্তু জমিটা চাষাবাদ বা ফসল উৎপাদন করা সম্ভব। তিনি আরও বলেন, চাহিদা যোগানের ভরসম্য রক্ষা করতে গেলে আমাদের উৎপাদন বাড়াতে হবে। সেই কারণে আমাদের বর্ষা মৌসুম শীত মৌসুম এখন এগুলো দেখার আর সময় নেই। কৃষি অফিসারকে বলেন কৃষকদের এগুলোকে অভস্ত্য করতে হবে। প্রত্যেকটা জমি থেকে তিনটা ফসল আমাদের আহরণ করতে হবে।  কি প্রক্রিয়ায় জলাবদ্ধতা জমিতে চাষাবাদ করা যায়। তার জন্য মাঠ পর্যায়ের যেসকল কৃষি অফিসার রয়েছেন তারা আপনাদের এই বিষয়টা অবহিত করবেন। উপস্থিত সবাই উপস্থিত হয়ে আমাকে সম্মানিত করেছেন বলে সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে ও সরকারের দেয়া সর্বজনীন পেনসন স্কিম রয়েছে তা দয়া করে সকলকে যুক্ত হতে বলে বক্তব্য শেষ করেন। বক্তব্য শেষে তিনি কৃষকদের হাতে ফলজ গাছ তুলে দেন।

সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মাইনউদ্দিন  সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মো: আবু বকর সিদ্দিক, সিনিয়র উপজেলা মৎস অফিসার পলাশ হালদার, পালং মডেল থানা অফিসার-ইন-চার্জ মেজবাহ উদ্দীন আহমেদ,

সদর উপজেলা কৃষি অফিসের আয়োজনে অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন, সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসাণ অফিসার তাহমিনা আক্তার।

মেলায় অংশ গ্রহণ করেছেন কৃষি উন্নয়নে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা। এছাড়াও মানসম্পন্ন বীজ,চারা সহ জৈব বালাইনাশক সরবারাহ করে নিরাপদ ফসল উৎপাদন করছেন এই ধরনের প্রতিষ্ঠান গুলো এই তিন দিনের মেলায় অংশ গ্রহণ করেছেন। মেলাতে কৃষিতে বিভিন্ন পদ্ধতির ডেমো তৈরি করা হয়েছে। তা কৃষকদের দেখার আহবান জানান।