
শরীয়তপুর জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভার কার্যবিবরণী, অস্বচ্ছল ও সহায় সম্বলহীন বিচারপ্রার্থীর পক্ষে দাখিলকৃত আবেদনে প্যানেল আইনজীবী নিয়োগ অনুমোদনসহ বিবিধ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
১৫ মে বুধবার দুপুর ৩ টায় জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবনের ২০৩ নং কক্ষে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা, শরীয়তপুর জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান বিজ্ঞ সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ অনুপ কুমার এর সভাপতিত্বে এবং জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার (সিনিয়র সহকারী জজ) মো: খালেদ মিয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন,
বিজ্ঞ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট,অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোসাঃ তাসলিমা আকতার।
শরীয়তপুর জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার (সিনিয়র সহকারী জজ) মো: খালেদ মিয়া সকলের অবগতির জন্য বলেন, দরিদ্র অসহায় মানুষ যারা তাদের আইনগত সহায়তা পেতে তাদের পক্ষে আমরা আইনজীবী নিয়োগ করতাম। যাদের বার্ষিক আয় ১ লক্ষ টাকার বেশী ছিল না। কিন্তু কয়েক মাস আগে সেটা পরিবর্তন করে, সংশোধন করা হয়েছে। যেই পরিমাণ আয় করলে মানুষকে আয়কর দিতে হয়। সেই সীমা যদি অতিক্রম না করে, তাহলে সে আইনগত সহায়তা পাবে। ফলে দেখা যাচ্ছে, পুরুষদের ক্ষেত্রে বার্ষিক আয় ৩ লক্ষ ৫০ হাজার অতিক্রম না করলে তাহলে সে আইনগত সহায়তা পাবে। সরকার আরও একটি শ্রেণীকে উন্মুক্ত করে দিল। শিশু, প্রতিবন্ধী বা পারিবারিক সহিংসতার শিকার কোন নারী অথাবা কারাবন্দী যারা জামিন নিতে পারছে না, এরকম কিছু বিষয় যেগুলোতে তার আর্থিক সীমা দেখবেই না। তার আয় যদি ১০ লক্ষ টাকাও হয়। আমরা তাকে আইনগত সহায়তা দিতে পারবো। নতুন আইন সংশোধন হওয়ার ফলে, আমরা আরও বেশী মানুষকে আইনগত সহায়তা দিতে পারবো। এজন্য আমাদের জেলা লিগ্যাল এইড এর বরাদ্দ আরও বাড়বে। যাতে আমরা আইনজীবীদের ফি’বা সম্মানি দিতে পারি। এসময় তিনি জেলা লিগ্যাল এইড এর আপডেট বিলবোর্ড করে থানা, উপজেলা সহ বিভিন্ন স্থানে টানানোর কথা জানান। এবং সবার উদ্দেশ্যে বলেন,আগে যাদেরকে আপনারা দরিদ্র বিবেচনা করতেন না, আসা করি তাদেরকেও বিবেচনা করে আমাদের লিগ্যাল এইড আফিসে রেফার করবেন। এই বলে তিনি সবাই কে ধন্যবাদ জানিয়ে তার বক্তব্য শেষ করেন।
সমাপনী বক্তব্যে জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান বিজ্ঞ সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ অনুপ কুমার বলেন, আমরা জেলা লিগ্যাল এইড অফিসারের কাছ থেকে একটি নতুন তথ্য পেলাম। যে, লিগ্যাল এইড সেবা প্রদানের যে সীমা। অর্থাৎ যারা সেবা গ্রহিতা,তাদের আওতা অনেক বেড়ে গেছে। আগে যারা ১ লাখ টাকা আয় সীমার মধ্যে ছিলেন, তারা এই সেবাটা গ্রহণ করতে পারতেন। যদিও হয়তো ঐভাবে যাচাই করা সম্ভব হতো না। কিন্তু কর সীমার নিচে যারা পুরুষ এবং মহিলা তারাই শুধু এই সেবা নিতে পারবেন। পুরুষদের ক্ষত্রে একটু কম, মেয়েদের ক্ষেত্রে আরো বেশী। আমার মনে হয়, প্রায় দেশের ৯০ ভাগ মানুষেই এই সেবার আওতায় চলে আসছে এখন। তো-সেই হিসাবে আর হয়তো ওই ভাবে বিবেচনা করা যাবে না, কাকে দেয়া যাবে, কাকে সেবা দেয়া যাবে না। এখন আমরা সবাই এই সেবাটা গ্রহণ করতে পারবো,বা এই বিষয়ে আমরা প্রচারও চালাতে পারবো। যদি এ রকমি হয়,এরকম সেবা গ্রহিতার সংখ্যা আমরা বাড়াতে পারি। তাতে হয়তো, স্থানীয় ভাবে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসের উপরে কিছুটা চাপ পরবে প্রাথমিক পর্যায়ে। কিন্তু এটার পরিধি বাড়লে যেটা হবে,অফিসটা আরও প্রসারিত হবে। এই অফিসের কার্যক্রম বাড়ানোর জন্য আরো নতুন-নতুন ডেস্ক স্থাপন হবে। অফিসার নিয়োগ হবে। তার মানে এখানে একটি বড় কর্মযজ্ঞ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। সরকার হয়তো সেই পদক্ষেপ নিবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আদিবুল ইসলাম, এছাড়াও জেলা তথ্য অফিসার, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার গ্রাম আদালত সহ বিভিন্ন সরকারি ও এনজিও প্রতিনিধিগণ এবং স্থানীয় দৈনিক রুদ্রবার্তা সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।
উক্ত সভায় বিগত মাসিক সভার কার্যবিবরণী, অস্বচ্ছল ও সহায় সম্বলহীন বিচারপ্রার্থীর পক্ষে দাখিলকৃত আবেদনে প্যানেল আইনজীবী নিয়োগ অনুমোদনসহ বিবিধ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।