
শরীয়তপুরের জাজিরায় আপন চাচা তার সহযোগীদের নিয়ে ভাতিজাকে অপহরণ করে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করেছে। জাজিরা থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৩ জন অপহরণকারী গ্রেফতার সহ অপহৃত শিশুকে উদ্ধার করেছে।
উদ্ধারকৃত শিশু মাহিম হাসান (৮) শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলার সেনের চর দক্ষিণ কান্দি গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী রিপন মৃধার ছেলে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন (ভিকটিমের চাচা) শিপন মৃধা (২৫), একই উপজেলার কুড়িটাকার চর গ্রামের রাজ্জাক মোল্যার ছেলে রুবেল মোল্যা (৩০) ও ভেদরগঞ্জ উপজেলার নর সিংহপুর গ্রামের আ. খালেক হাউদের ছেলে সোলায়মান ওরফে আল আমিন হাউদ (৩০)। এ বিষয়ে জাজিরা থানায় একটি মামলা হয়েছে।
উদ্ধারকৃত শিশু মাহিম ও তার পরিবার জানায়, মাহিম ২৪ নং পশ্চিন সেনের চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ে। ৯ নভেম্বর মাহিম বিদ্যালয়ে যায়। টিফিনের সময় মাহিমের চাচা শিপন মৃধা বিদ্যালয়ে গিয়ে মাহিমকে বলে, ‘তোর মামা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তোমার মা তাকে নিয়ে ঢাকায় চলে গেছে। এখন তোকে আমার সাথে ঢাকায় যেতে বলেছে’।
মাহিম বিদ্যালয়ের শিক্ষকের কাছে বলে তার চাচা শিপনের সাথে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। স্থানীয় বঙ্গবাজারে গিয়ে শিপন মাহিমকে রুবেল ও আল আমিনের সাথে অটোবাইকে তুলে দেয়। রুবেল ও আল আমিন মাহিমকে কাঠালবাড়ি ফেরী ঘাট দিয়ে পাড় করে ঢাকার কামরাঙ্গীরচর বিদ্যুৎ অফিস গলির কাঠপট্টির নয়ন তারার বাড়ির ভাড়া বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে মাহিমকে আটকে রেখে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মাহিমের পরিবারের কাছে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবী করে অপহরণকারীরা।
জাজিরা থানা পুলিশের এসআই আবু শাহাদাত মো. শাহিন ও মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন বলেন, শিশু মাহিম অপহরণের সংবাদ পেয়ে প্রথমে মাহিমের চাচা শিপনকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করি। পরবর্তীতে আটককৃত শিপনকে সাথে নিয়ে তার কথিত মতে ঢাকার কামরাঙ্গীর চর এলাকার কাঠপট্টি বিদ্যুৎ অফিসের গলির রুবেল মোল্যার ভাড়া বাসা থেকে ১১ নভেম্বর বেলা ১১ টার দিকে মাহিমকে উদ্ধার করি এবং রুবেলকে গ্রেফতার করি। পরবর্তীতে রুবেলের কথামত কামরাঙ্গীরচর পূর্ব রসুলপুর ৯ নং গলির স¤্রাট মিয়ার বাসা থেকে আল আমিনকে গ্রেফতার করি। পরে উদ্ধারকৃত ভিকটিম ও গ্রেফতারকৃত আসামীদের নিয়ে জাজিরা থানায় আসি।
সদর উপজেলার শৌলপাড়া ইউপি মেম্বার লিয়াকত হোসেন ও জাজিরা উপজেলার সেনেরচর ইউপি মেম্বার জাহাঙ্গীর সিকদার জানায়, পুলিশের সাথে সাথে থেকে তারা পুলিশের বিচক্ষণতা উপলব্ধি করেন। পুলিশ অত্যাধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করে দ্রুত সময়ের মধ্যে অপহৃত শিশুকে উদ্ধার করেছে এবং একই সাথে অপহারণকারীদেরও গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। উদ্ধার কাজে বিলম্ব হলে হয়তো শিশুটিকে অপহরণকারীরা মেরে ফেলত।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কামরুল হাসান বলেন, তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র মাহিমকে তারই চাচা শিপন মৃধা, রুবেল ও আল আমিনকে নিয়ে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবীতে অপহরণ করে। সংবাদ পেয়ে পুলিশী অভিযান পরিচালনা করি। প্রথমে মাহিমের চাচা শিপনকে গ্রেফতার করি। তারই কথিত মতে ঢাকার কামরাঙ্গীরচর এলাকা থেকে মাহিমকে উদ্ধার করি এবং আসামীদের গ্রেফতার করি। এ বিষয়ে মামলা হয়েছে।