সোমবার, ২৫শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ইং, ১০ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১০ই রবিউল-আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরী
সোমবার, ২৫শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ইং

জাজিরায় গণধর্ষণ মামলা তুলে না নেয়ায় ধর্ষিতার পিতার উপর হামলা

জাজিরায় গণধর্ষণ মামলা তুলে না নেয়ায় ধর্ষিতার পিতার উপর হামলা

শরীয়তপুরের জাজিরায় ধর্ষণের মামলা তুলে না নেয়ায় বুধবার রাতে ধর্ষিতার পিতাকে বোমা নিক্ষেপ করেছে আসামীপক্ষের লোকজন। গুরুতর আহত অবস্থায় রাত ১০টায় তাকে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
জানা গেছে, জাজিরা উপজেলার সুধন্য মন্ডলেরকান্দি গ্রামে ৭ম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলা তুলে নিতে অথবা আপস-মীমাংশা করতে গত কয়েকদিন যাবত বাদীকে ভয়ভীতি প্রদর্শণ ও হুমকি দিয়ে আসছে আসামীপক্ষের লোকজন। তাদের হুমকির মুখে ভয়ে হাট-বাজারে যাওয়া প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে ভিকটিমের পিতা। নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছে ভিকটিমের পুরো পরিবার। সন্ত্রাসীদের হুমকির মুখে ৭ম শ্রেণিতে পড়–য়া ধর্ষণের শিকার ওই কন্যা এ বছর বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা দিতে পারেনি। বন্ধ হয়ে গেছে তার পড়ালেখা। এদিকে ২৩ দিনেও ধর্ষক সাগর গ্রেপ্তার না হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জাজিরা থানা ও ভিকটিমের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ১৩ নভেম্বর বিকেলে জাজিরা উপজেলার সুধন্য মন্ডলেরকান্দি গ্রামের মেয়ে। জাজিরা উপজেলার বড়কান্দি ইউনিয়নের মির্জা হজরত আলী হাই স্কুলের ৭ম শ্রেণি পড়–য়া ছাত্রীকে প্রতিবেশী জলিল বেপারীর ছেলে শওকত বেপারী কৌশলে তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে একটি ঘরে বন্দী করে। ওই ঘরে পূর্ব থেকেই শওকতের বন্ধু সাগর বেপারী লুকিয়ে ছিল। পরে সাগর শিকদার ওই ছাত্রীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এ বিষয়ে ওই দিনই ভিকটিমের মা বাদী হয়ে জাজিরা থানায় মামলা করে।
বোমা হামলায় আহত হাসপাতালে ভর্তি ধর্ষিতার বাবা বলেন, আমার ৭ম শ্রেণির মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলা করার পর থেকেই আসামী পক্ষের লোকজন আমাকে মামলা তুলে নিতে চাপ প্রয়োগ করে আসছে। ধর্ষক সাগরের পিতা অনেক ক্ষমতাধর ব্যক্তি। তিনি নিজে জুয়া খেলার আসর নিয়ন্ত্রণ করে। জুয়ারীদের সুদে টাকা ধার দেয়। এ ছাড়াও তিনি সমাজে অনেক বেআইনী কাজ কর্ম করে থাকে। আসামীদের হুমকির মুখে আমি দীর্ঘদিন বাড়ি থেকে অন্যত্র পালিয়ে বেড়াচ্ছিলাম। ধর্ষক সাগরের পিতা দুলাল শিকদার ও স্থানীয় মেম্বার আতাহার আমাকে ২ লাখ টাকা নিয়ে মামলা আপস-মীমাংশা করার জন্য গত কয়েকদিন যাবত চাপ দিয়ে আসছিল। আমি তাতে রাজি হইনি। বুধবার সন্ধ্যায় স্ত্রী ও সন্তানদের খোঁজখবর নিতে বাড়ি আসি। স্থানীয় নয়াবাজার থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে ধর্ষক সাগরের পিতা দুলাল শিকদার ও স্থানীয় মেম্বার আতাহারসহ অন্য ২/৩ জন আমাকে রাস্তায় ঘেরাও করে। এ সময় আমি দৌড় দিলে পিছন দিক থেকে আমাকে লক্ষ্য করে বোমা নিক্ষেপ করে। আমার পা থেকে শরীরের উপরি ভাগে বোমার আঘাত লাগলে আমি পড়ে অজ্ঞান হয়ে যাই। স্থাণীয় লোকজন আমাকে উদ্ধার করে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
এ বিষয়ে ধর্ষক সাগর শিকদারের পিতা দুলাল শিকদার বলেন, কে বা কারা বোমা নিক্ষেপ করছে আমি তা জানিনা।

জাজিরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজহারুল ইসলাম সরকার বলেন, মামলার এজাহারভুক্ত একজন আসামীকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকি আসামীকে গ্রেপ্তারের জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। বোমা হামলার বিষয়টি তদন্ত করা হয়েছে। ভিকটিমের পক্ষ থেকে মামলার জন্য আবেদন করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


error: Content is protected !!