সোমবার, ২রা অক্টোবর, ২০২৩ ইং, ১৭ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৬ই রবিউল-আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরী
সোমবার, ২রা অক্টোবর, ২০২৩ ইং

জাজিরায় ধর্ষণের বিচার জুতার বারি, বিচার মানে না ভুক্তভোগী

জাজিরায় ধর্ষণের বিচার জুতার বারি, বিচার মানে না ভুক্তভোগী

শরীয়তপুর জাজিরা উপজেলার মূলনা ইউনিয়নের চরলাউখোলা বালিয়াকান্দি গ্রামে ৪ সন্তানের জননিকে ধর্ষণের ঘটনায় বাদীর অনুপস্থিতে সালিশ। বিচার হিসেবে ২০টি জুতার বারি দেয়া হয়। এমন বিচার মানে না ভুক্তভোগী ও তার পরিবার।

অভিযোগ উঠেছে চরলাউখোলা বালিয়াকান্দি গ্রামের দুদুমিয়া (৪৫) একই এলাকার দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীর স্ত্রী, দুই সন্তানের জননী ৩১ বছর বয়সী এক নারীকে ধর্ষণ করেছে।

ঘটনা ধামাচাপা দিতে এলাকার মোকশেদ মাদবরের বাসায় বাদীপক্ষের অনুপস্থিতিতে স্থানীয় সালিশ বিচারের মাধ্যমে ধর্ষককে ৫০ টি জুতার বারির রায় ঘোষণা করা হলে, ২০টি জুতার বারি কার্যকর করা হয়। তবে এ ঘটনায় থানায় এখনও কোনো মামলা করা হয়নি।

ধর্ষিতা নারী ও তার পরিবারের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ৫ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার রাত দশটায় স্বামীর অনুপস্থিতিতে ৪ সন্তানের জনক এলাকার দুদুমিয়া ঘরে ঢুকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ধর্ষিতা নারীর স্বামী প্রতিবন্ধী হওয়ায় থানায় গিয়ে কোথায় মামলা করতে হয়, বুঝতে না পারায় মামলা করতে পারেনি।

ধর্ষিতার স্বামী জানান, আমি লাউখোলা বাজারে ডিম বিক্রি করি। বাসায় এসে দেখি, বাড়ির সামনে অনেক মানুষে জড়ো হয়ে আছে। পরে স্ত্রীর কাছ থেকে জানতে পারি এলাকার দুদু মিয়া আমার স্ত্রীকে ধর্ষণ করেছে। ধর্ষণের ভিডিও করে এলাকায় কিছু লোক ছড়িয়ে দিয়েছে, বিচার না পেয়ে এবং লজ্জায় আমার স্ত্রী তিনবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। আমি এর বিচার চাই।

ধর্ষিতা নারী জানান, আনুমানিক রাত দশটার সময় এলাকার দুদুমিয়া আমাকে জোর পূর্বক ঘরে ঢুকে ধর্ষণ করে। মোবাইল ফোনেও অনেকবার কু-প্রস্তাব দিয়েছে। মাঝেমধ্যে দেখা হলে কু-প্রস্তাব দিত। আমি রাজি হইনি, তাই জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। যাতে আর কোনো নারী ধর্ষিতা না হয়।

এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে সালিশ বিচারকারী কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে ফরহাদ নামের এক যুবক জানান, আমিসহ নয়ন মোড়ল, রায়হান সিকদার, আবুল মোড়ল ধর্ষণের ঘটনার ভিডিও করেছি। গতকাল সালিশ বিচারের সময় বিচারকরা সে ভিডিও আমাদের মোবাইল থেকে ডিলিট করে দিয়েছে।

অভিযুক্ত দুদুমিয়া মোবাইল ফোনে জানান, এলাকার সালিশ বিচার ব্যবস্থায়, জুরি বোর্ডের মাধ্যমে ৫০টি জুতার বারির রায় ঘোষণা করা হয়। ২০টি জুতার বাড়ি দেয়া হয়েছে। ৩০ টি মাপ করেছে।

মূলনা ইউনিয় পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন হাওলাদার বলেন, আমি ঘটনা জানতে পেরে তাৎক্ষণিক জাজিরা থানার অফিসার ইনচার্জকে অবগত করেছি। এ ধরনের ঘটনার বিচার হওয়া উচিত।

১০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় এবিষয়ে জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও আশরাফুজ্জামান ভূইয়া বলেন, ঘটনাটি ফৌজদারি অপরাধ ভ্রাম্যমাণ আদালতে শাস্তি কম। বিষয়টি আমি জাজিরা থানার ওসিকে জানিয়েছি এই ঘটনায় পুলিশ একজনকে আটক করেছে বলে জানান।

মোবাইল ফোনে জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজহারুল ইসলাম দৈনিক রুদ্রবার্তাকে বলেন, এই ঘটনায় স্থানীয় সালিশদের জিঙ্গাসাবাদের জন্য থানায় এনেছি। আমি একটা মিটিং এ আছি। কথা বলা যাচ্ছে না।


error: Content is protected !!