
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম মালতকে (৪৩) কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার রাত ১০টার দিকে খোশাল শিকদার কান্দি এলাকায় এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে।
সাইফুল মালত জাজিরা ইউনিয়নের ০১নং ওয়ার্ডের খোশাল শিকদার কান্দি গ্রামের হাজী কিনাই মালতের ছেলে। সাইফুল মালত স্থানীয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এছাড়া তিনি সেনেরচর বি এম মোহাম্মেল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি জাজিরা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও শরীয়তপুর জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। স্থানীয় রাজনীতিতে বিরোধের জের ধরেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে জানিয়েছে নিহত সাইফুল মালতের বড় ভাই শামছুল হক মালত।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে সাইফুল জাজিরা উপজেলা সদর থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। রাত পৌনে ১০টার দিকে বাড়ির কাছাকাছি পৌঁছালে একদল দুর্বৃত্ত তাঁর ওপর হামলা চালায়। এ সময় তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে রাস্তায় ফেলে রেখে যায়। পরে খবর পেয়ে স্বজনেরা তাঁকে উদ্ধার করে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে অবস্থার অবনতি হলে রাতেই তাঁকে ঢাকায় পাঠানো হয়। রাত একটার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। নিহত প্রধান শিক্ষক সাইফুল মালতের বড় ভাই শামছুল হক মালত বলেন, ‘আমার ভাই মারা যাওয়ার পূর্বে তার উপর যারা আক্রমণ করেছে তাদের মধ্যে থাকা কয়েকজনের নাম বলে গিয়েছে।
আমি খুনিদের ফাঁসি চাই। সাইফুল মালতের পথসঙ্গী হিরো শেখ বলেন, ‘আমরা জাজিরা বাজার থেকে সাইফুল মালতের বাড়ির দিকে যাচ্ছিলাম। পথিমধ্যে হামলাকারীরা আমাদেরকে আক্রমণ করলে আমি পালিয়ে চলে যাই কিন্তু সাইফুল মালতকে তারা কুপিয়ে জখম করে।’ নিহত সাইফুল মালতের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তার স্ত্রী মিতু আক্তার (৩৫) সহ স্বজনরা আহাজারী করছে। মিতু আক্তার বলেন, ‘আমার দুই সন্তানকে যারা এতিম করেছে আমি তাদের ফাঁসি চাই।’
নিহত সাইফুল মালতের একাদশ শ্রেণীতে পড়ুয়া সুমাইয়া (১৭) ও দশম শ্রেণীতে পড়ুয়া লাবিবা (১৫) নামে দুইটি মেয়ে রয়েছে। জাজিরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আ. রহমান হাওলাদার বলেন, এই ঘটনা যারা ঘটিয়েছে আমি তাদের ফাঁসি দাবি করছি। যাতে ভবিষ্যতে এ ধরণের ঘটনা আর না ঘটে। অপরদিকে আক্রমণকারীরা সাইফুল মালতকে আহত করার পরে সাইফুল মালতের বাড়িসহ বেশ কয়েকটি বাড়িতে আক্রমণ করে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ চালায়। এতে মালেক মোল্লা নামে একজনের বাড়ির কয়েকটি ঘর পুড়ে যায়। মালেক মোল্লা জানান, ‘রাতে হামলাকারীরা আমার পাসের কয়েকটি বাড়িতে ভাংচুর করে এসে আমার বাড়িতেও ভাংচুর করে অগ্নিসংযোগ চালায়। এতে করে আমার দুইটি ঘর পূড়ে ছাই হয়ে যায়। আমি বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের দারস্থ হয়ে বিচার দাবি করবো।’
এ ঘটনায় খোশাল শিকদার কান্দি এলাকার আলেম ফকিরের ছেলে সুজন ফকির (২৫) নামে একজনকে আটক করেছে জাজিরা থানা পুলিশ। রাতে খোশাল শিকদার কান্দি এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয় । এছাড়া এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কয়েকটি মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,‘আমরা একজনকে আটক করেছি এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছি। মামলার প্রস্তুতি চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ৪ | |||
৫ | ৬ | ৭ | ৮ | ৯ | ১০ | ১১ |
১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮ |
১৯ | ২০ | ২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ | ২৫ |
২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ | ৩০ | ৩১ |