Tuesday 1st July 2025
Tuesday 1st July 2025

শরীয়তপুরের জাজিরায় জরাজীর্ণ সেতু, জনমনে আতঙ্ক

শরীয়তপুরের জাজিরায় জরাজীর্ণ সেতু, জনমনে আতঙ্ক
শরীয়তপুরের জাজিরায় পালেরচর ইউনিয়নের জোড়া সেতু এলাকায় খালের ওপর জরাজীর্ণ সেতু

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পালেরচর ইউনিয়নের জোড়া সেতু এলাকায় খালের ওপর সেতুটির অবস্থা জরাজীর্ণ। এর মাঝখানে ভেঙে বড় গতের্র সৃষ্টি হয়েছে। বেশ কয়েক জায়গায় রেলিংও ভাঙা। ঝুঁকি নিয়ে সেতুটি পারাপার হচ্ছেন এলাকাবাসী।

স্থানীয়রা জানান, সেতুটি বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। একটি ভ্যান বা রিকশা যাওয়ার মতোও জায়গা নেই। প্রতিদিন সড়কটি দিয়ে চলাচলকারী কয়েক হাজার মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। উপজেলার পালেরচর, বড় কান্দী, পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নবাসীসহ জাজিরা হয়ে শরীয়তপুর ও ঢাকাগামী যাত্রীরা দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন।

পালের চর ও বড় কান্দী ইউনিয়নের মানুষের মাঝে যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম সেতুটি। জাজিরা, শরীয়তপুর ও কাজীরহাট বাজারে আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক ব্যবসায়ী, কৃষক ও সাধারণ মানুষ ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি ব্যবহার করে থাকেন। বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এই সেতু। এ ছাড়া কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণ, অর্ধশতাধিক পোলট্রি ও গরুর খামারের খাবার সরবরাহকারীরাও নিয়মিত চলাচল করেন।

স্থানীয়দের দাবি, নড়েবড়ে সেতুটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকলেও সংশ্লিষ্ট দপ্তর সংস্কারের উদ্যোগ নেয়নি। এমনকি জনগণকে সতর্ক করে এখানে সাইনবোর্ডও টানানো হয়নি।

গতকাল বৃহস্পতিবার পালেরচর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পুরোনো সেতুটি কোনো রকমে টিকে আছে। জরাজীর্ণ এই সেতু দিয়ে মানুষ ও যান চলাচল করছে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। সেতুটির বেশ কিছু স্থানে দেখা দিয়েছে ভাঙন। মাঝখানে বড় গর্ত, রেলিং ভাঙা।

স্থানীয় বাসিন্দা নয়ন তারা বেগম বলেন, এই সেতুর ওপর কয়েক দিন পরপরই দুর্ঘটনা ঘটে। কিছুদিন আগেও সিমেন্টবাহী গাড়ি উল্টে পানিতে পড়ে গেছে। মানুষ বাজার থেকে পণ্য কিনে গাড়িতে করে যাওয়ার সময় মাঝেমধ্যেই গাড়ি কাত হয়ে পণ্য পানিতে পড়ে যায়।

গাড়িচালক হামিদুর রহমান দড়ি বলেন, এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৫০ হাজার মানুষ যাতায়াত করে থাকেন। এখান দিয়ে হাটবাজার, স্কুল-কলেজ, পদ্মা ক্লাবে যাতায়াত করেন তারা। কয়েক দিন পরপরই এখানে বিভিন্ন যানবাহন দুর্ঘটনায় পড়ে।

কৃষক মাইদুল ইসলাম বলেন, জমির ফসল তাদের মাথায় করে বাড়ি নিয়ে যেতে হচ্ছে। ভাঙা সেতু দিয়ে একটি ভ্যান পার হওয়াও কষ্টকর। যারা ঝুঁকি নিয়ে যায়, তাদের কেউ কেউ উল্টে নিচে পড়ে যায়। সেতুটি মেরামত করা হলে এত কষ্ট করতে হতো না তাদের।

জাজিরা উপজেলা এলজিডির প্রকৌশলী ইমন মোল্লা বলেন, তারা সেতুটি সরেজমিন পরিদর্শন করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে মেরামতের জন্য প্রস্তাব পাঠিয়েছেন। সেখান থেকে অনুমোদন হয়ে এসেছে। এখন টেন্ডারের জন্য প্রক্রিয়াধীন। শিগগির মেরামতের কাজ শুরু হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

সংবাদের উপসংহারে বলা যায়, শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পালেরচর ইউনিয়নের জোড়া সেতুটি জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সেতুটি ভেঙে পড়লে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই দ্রুত সেতুটি মেরামত করা জরুরি।